Inqilab Logo

শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৬ বৈশাখ ১৪৩১, ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

জেল থেকে উচ্চ মাধ্যমিকে প্রথম স্থান অর্জন খুনের আসামীর!

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ২৬ জানুয়ারি, ২০২২, ৫:০৩ পিএম

খুনের দায় যাবজ্জীবন জেল খাটছে সৈয়দ নাসিম শাহ। পাকিস্তানের করাচিতে সেন্ট্রাল জেলের আসামী তিনি। তবু তার অদম্য ইচ্ছের কাছে হার মেনেছে জেলের প্রতিকূল পরিবেশ। সেই জেলে বসেই প্রাইভটে উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষায় সেরার শিরোপা ছিনিয়ে নেয় বছর পঁয়ত্রিশের ওই ব্যক্তি।

তার এই অবিশ্বাস্য সাফল্যের জন্য পুরস্কারও দিয়েছে জেল কর্তৃপক্ষ। দীর্ঘ পাঁচ বছর পর মায়ের সঙ্গে দেখা করার অনুমতি পেল নাসিম। গত সোমবার নাসিমের সঙ্গে দেখা করেন তার মা এবং নাসিমের স্ত্রী। ছেলে খুনের দায়ে অভিযুক্ত। এই কারণে দীর্ঘ পাঁচ বছর নাসিমের সঙ্গে দেখা করতে রাজি হয়নি তার মা।

অবশেষে ছেলের পরীক্ষায় প্রথম হওয়ার খবর শুনে সিদ্ধান্ত বদল করেন তিনি। পুত্রবধূকে সঙ্গে নিয়ে পা রাখেন করাচির সেন্ট্রাল জেলে। পুলিশের বিশেষ অনুমতিতে কথা হয় মা-ছেলের। দীর্ঘদিন পর কারাগারে মাকে দেখতে পেয়ে আবেগে ফেটে পড়ে নাসিম। মাকে জড়িয়ে ধরেন তিনি। দু’জনের চোখই ভিজে যায় কান্নায়। তারপর তার অপরাধের জন্য মায়ের পা ধরে ক্ষমাও চান নাসিম। এমনটাই জানিয়েছেন ডেপুটি সুপারিনটেনডেন্ট সৈয়দ সুমরো।

২০২১ সালে প্রাইভেটে ইন্টারমিডিয়েট পরীক্ষা দেন। আর সেই পরীক্ষায় সর্বোচ্চ নম্বর পেয়ে প্রথম স্থান অর্জন করেন তিনি। তার এই সাফল্যে হতবাক জেল কর্তৃপক্ষও। নাসিমের সাফল্যেতাকে আর্থিক সহায়তা করতে এগিয়ে আসে পাকিস্তান ইনস্টিটিউট অব চার্টার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্টস। ভবিষ্যতে আরও শিক্ষালাভের জন্য তাকে এক লক্ষ টাকার স্কলারশিপ দেয় প্রতিষ্ঠানটি।

নাসিমের এই কৃতিত্বে খুশি জেল কর্তৃপক্ষ। জেলের ডেপুটি সুপারিনটেনডেন্ট সৈয়দ সুমরো বলেন, "তার একাডেমিক কৃতিত্বের জন্য তার মায়ের সঙ্গে দেখা করার অনুমতি দেওয়া হয়েছে।" দীর্ঘদিন ধরেই তিনি তাঁর মা ও পরিবারের সঙ্গে দেখা করতে চেয়েছিলেন। এবার সেই সুযোগই করে দেওয়া হল জেলের তরফ পক্ষ থেকে।

সেন্ট্রাল জেল সূত্রে খবর, নাসিমকে পড়াশোনা উৎসাহিত করেছিলেন তার সঙ্গে থাকা প্রবীণ কয়েদিরা। জানা গিয়েছে, ২০১০ সালে মতবিরোধের জেরে একজনকে গুলি করে হত্যা করে নাসিম। তারপর ২০১১ সালে শুরু হয় বিচার প্রক্রিয়া। দীর্ঘ ৭ বছর পর ২০১৮ সালে ২৫ বছরের জন্য যাবজ্জীবন কারাদণ্ডে দণ্ডিত হয় সৈয়দ নাসিম শাহ।

ডেপুটি সুপারিনটেনডেন্ট সৈয়দ সুমরোর কথায়, আগামী ছয় বছরের মধ্যেই মুক্তি পেতে পারেন নাসিম। কারণ তার শিক্ষাগত কৃতিত্ব, আচরণ, পারস্পরিক সহযোগিতা, রক্তদান এই সমস্ত কাজে সন্তুষ্ট জেল কর্তৃপক্ষ। প্রসঙ্গত, গতবছরের প্রকাশিত এক রিপোর্টে জানা গিয়েছে, পাকিস্তানের ১১৬ টি জেলে প্রায় ৮৭ হাজার আসামী রয়েছে। যাদের মধ্যে ১৪০০ জন নারী। এছাড়াও ১৪৩০ কিশোর রয়েছে পাকিস্তানের জেলে। সূত্র: আরব নিউজ।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: পাকিস্তান


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ