Inqilab Logo

শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

‘মহারাজা’-কে ফিরে পেল টাটা

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ২৭ জানুয়ারি, ২০২২, ৫:২৯ পিএম

দীর্ঘ প্রতীক্ষার পর মহারাজা-কে ফিরে পেল টাটা। আনুষ্ঠানিকভাবে টাটার হাতে এল এয়ার ইন্ডিয়া। বৃহস্পতিবার সকালেই প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে দেখা করেছিলেন টাটা সনসের চেয়ারম্যান এন চন্দ্রশেখরন। সেই সাক্ষাতের কয়েক ঘণ্টা পর আনুষ্ঠানিকভাবে টাটার হাতে তুলে দেয়া হল এয়ার ইন্ডিয়াকে।

আনুষ্ঠানিকভাবে হস্তান্তরের পর টাটা সনসের চেয়ারম্যান বলেছেন, 'আমরা অত্যন্ত খুশি যে পুরো প্রক্রিয়া সম্পূর্ণ হয়ে গিয়েছে। টাটা গ্রুপে ফিরে পেয়ে খুশি আমরা। বিশ্বমানের বিমান সংস্থায় পরিণত করার জন্য আমরা সকলের সঙ্গে কাজ করতে মুখিয়ে আছি।' তারইমধ্যে কেন্দ্রের বিলগ্নিকরণ দফতরের (দিপম) সচিব বলেন, 'আজ সাফল্যের সঙ্গে এয়ার ইন্ডিয়ার কৌশলগত বিলগ্নিকরণ সম্পূর্ণ হল। পরিচালন সংক্রান্ত নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা-সহ এয়ার ইন্ডিয়ার ১০০ শতাংশ শেয়ার তালাস প্রাইভেট লিমিটেডের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে।'

১৯৩২ সালে এয়ার ইন্ডিয়ার প্রতিষ্ঠা করেছিলেন জাহাঙ্গির রতনজি দাদাভাই টাটা। সেই সময় সংস্থার নাম ছিল টাটা এয়ারলাইন্স। ১৯৪৬ সালে সংস্থার নাম পালটে রাখেন এয়ার ইন্ডিয়া। তবে স্বাধীনতার পর সরকারের সঙ্গে টাটার সম্পর্কের সমীকরণ পালটে গিয়েছিল। ১৯৪৭ সালের অক্টোবর এয়ার ইন্ডিয়া ইন্টারন্যাশনাল চালুর পরামর্শ দিয়েছিল টাটা গ্রুপ। প্রস্তাব অনুযায়ী, সরকারের হাতে থাকত ৪৯ শতাংশ মালিকানা। অতিরিক্ত দু'শতাংশ শেয়ারও কেনার সুযোগ ছিল। টাটার দখলে থাকত ২৫ শতাংশ শেয়ার। বাকি শেয়ার থাকত অন্যান্য বেসরকারি সংস্থার হাতে। কয়েক সপ্তাহের মধ্যেই সেই প্রস্তাবে অনুমোদন দিয়েছিল সরকার।

পাঁচ বছর পর এয়ার ইন্ডিয়ার জাতীয়করণের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল। জাতীয়করণ সত্ত্বেও ২৫ বছর এয়ার ইন্ডিয়ার চেয়ারম্যান ছিলেন জাহাঙ্গির রতনজি দাদাভাই টাটা। ১৯৭৮ সালে তাকে এয়ার ইন্ডিয়া এবং ইন্ডিয়ান এয়ারলাইন্সের বোর্ড থেকে সরিয়ে দিয়েছিল মোরারজি দেশাইয়ের সরকার। ১৯৮০ সালের এপ্রিলেই অবশ্য ইন্দিরা গান্ধীর সরকার জাহাঙ্গির রতনজি দাদাভাই টাটাকে দুটি সংস্থার বোর্ডে ফিরিয়ে আনতে চেয়েছিল। কিন্তু ফিরে আসেননি তিনি।

তারপর থেকে বহু ঘটনার সাক্ষী থেকেছে এয়ার ইন্ডিয়া। কিন্তু ক্রমশ ঋণের ভারে ডুবে যেতে পারে উড়ান সংস্থা। ২০১৮ সালে এয়ার ইন্ডিয়ার শেয়ার বিক্রি লক্ষ্য নিয়েছিল ভারত। কিন্তু নির্ধারিত সময়ের মধ্যে কোনও সংস্থা আগ্রহপত্র জমা দেয়নি। তার জেরে পুরো প্রক্রিয়া স্থগিত রাখতে হয়েছিল। ২০১৯ সালে এয়ার ইন্ডিয়ার ১০০ শতাংশ শেয়ারই বিক্রি ঘোষণা করেছিল কেন্দ্র। একাধিকবার দরপত্র জমা দেয়ার সীমা বাড়ানোর পর দুটি সংস্থা আগ্রহ প্রকাশ করেছিল। ২০২১ সালের সেপ্টেম্বরে কেন্দ্রীয় অর্থ মন্ত্রণালয় জানিয়েছিল, ঋণে জর্জরিত উড়ান সংস্থা কিনতে আগ্রহ প্রকাশ করেছে টাটা গ্রুপ এবং অজয় সিং। যিনি স্পাইসজেটের প্রোমোটার।

২০২১ সালের অক্টোবরে কেন্দ্র ঘোষণা করে, টাটার কাছে ফিরছে এয়ার ইন্ডিয়া। যে গ্রুপ ২,৭০০ কোটি রুপি দিচ্ছে। সেইসঙ্গে এয়ার ইন্ডিয়ার ১৫,৩০০ কোটি রুপি ঋণের বোঝাও টাটার কাঁধে চাপবে। গত ৩১ অগস্ট পর্যন্ত জাতীয় বিমান সংস্থার ঋণের পরিমাণ ছিল ৬১,৫৬২ কোটি রুপি। টাটা গ্রুপের হাতে এয়ার ইন্ডিয়ার মালিকানা তুলে দেওয়ার আগে সেই ঋণের ৭৫ শতাংশ বা ৪৬,২৬২ কোটি রুপির এয়ার ইন্ডিয়া অ্যাসেটস হোল্ডিং লিমিটেড (এআইএএইচএল) কাছে যাবে। তবে বসন্ত বিহারে এয়ার ইন্ডিয়ার হাউজিং কলোনি, মুম্বাইয়ের নরিম্যান পয়েন্ট এবং নয়াদিল্লিতে এয়ার ইন্ডিয়ার বিল্ডিং পাবে না টাটা। সূত্র: হিন্দুস্থান টাইমস।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ