Inqilab Logo

শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ০৭ বৈশাখ ১৪৩১, ১০ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

ছাত্রলীগ নেতার থাপ্পরে কানের পর্দা ফাটল পুলিশ সদস্যর

প্রকাশের সময় : ২ নভেম্বর, ২০১৬, ১২:০০ এএম

শরীয়তপুর জেলা সংবাদদাতা : শরীয়তপুরে ছাত্রলীগের এক নেতার থাপ্পরে সেলিম মাতুব্বর নামে এক পুলিশ সদস্যর কানের পর্দা ফেটে গেছে। উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে ঢাকায় পাঠানো হয়েছে। মঙ্গলবার বেলা ১২টার দিকে শরীয়তপুর সদর হাসপাতালে এ ঘটনা ঘটেছে। ওই ছাত্রলীগ নেতার নাম আক্তার হোসেন। সে শরীয়তপুর সদর উপজেলা ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি।
শরীয়তপুর সদর থানা সূত্র জানায়, শরীয়তপুর সদর উপজেলা ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি আক্তার হোসেন মঙ্গলবার শরীয়তপুর সদর হাসপাতালের চিকিৎসা কর্মকর্তা দেবাশীষ সাহার কক্ষে যান। এ সময় তার সাথে শরীয়তপুর সদর উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান আলমগীর হোসেন উপস্থিত ছিলেন। তারা চিকিৎসা কর্মকর্তার কাছে হোসেন খন্দকার নামে এক রোগীর আঘাতের চিকিৎসা জনিত সনদপত্র দাবি করেন। রোগী ছাড়া সনদপত্র দিতে অপরগতা প্রকাশ করেন চিকিৎসা কর্মকর্তা। তখন আক্তার ওই চিকিৎসা কর্মকর্তাকে গালাগাল দিয়ে অপদস্ত করতে থাকেন। সেখানে তখন চিকিৎসা নিতে উপস্থিত ছিলেন পুলিশের নায়েক সেলিম মাতুব্বর। চিকিৎককে কেন এভাবে অপদস্ত করা হচ্ছে তা জানতে চান। তখন আক্তার উত্তেজিত হয়ে ওই পুলিশ সদস্যকে মারধর করতে থাকে। তার থাপ্পরে পুলিশ সদস্যর ডান কানের পর্দা ফেটে যায়। স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালের জরুরী বিভাগে নিয়ে যায়।
পুলিশ সদস্য সেলিম মাতুব্বরকে চিকিৎসা দেন নাক কান গলা বিশেষজ্ঞ ইমরান খান। তিনি বলেন, আঘাতের কারণে ওই ব্যক্তির কানের পর্দা ফেটে গেছে। তার কান দিয়ে রক্তক্ষরণ হচ্ছে। তার আঘাতটি গুরুত্বর হওয়ায় উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় পাঠানো হয়েছে।
খবর পেয়ে ওই পুলিশ সদস্যকে দেখতে হাসপাতালে আসেন জেলা প্রশাসক মাহমুদুল হোসাইন খান, পুলিশ সুপার সাইফুল্লাহ আল মামুন, সহকারি পুলিশ সুপার তানভির হাসান। তারা হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক মশিউর রহমান ও কর্মরত চিকিৎসকদের সাথে সভা করেন।
ছাত্রলীগ নেতা আক্তার হোসেনকে আটক করার জন্য পুলিশ তার মামা উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যন আলমগীর হোসেন হাওলাদারের বাস ভবন ও ক্লিনিকে অভিযান চালায়। এ সময় আক্তারের কক্ষ থেকে একটি চাপাতি উদ্ধার করেছে পুলিশ। দুপুরে উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান আলমগীর হোসেন হাওলাদারের মালিকানাধীন হাওলাদার ক্লিনিকে অভিযান চালান জেলা প্রশাসনের ভ্রাম্যমাণ আদালত। নীতিমালা ও আইন লঙ্ঘন করে ক্লিনিক চালানোর অভিযোগে ভ্রম্যমাণ আদালত মালামাল বাজেয়াপ্ত করে ক্লিনিকটি সিলগালা করে দেন। এ সময় ক্লিনিকে ভর্তি থাকা রোগীদের সদর হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়।
শরীয়তপুরের সিভিল সার্জন মশিউর রহমান বলেন, আক্তার হোসেন প্রায়ই হাসপাতালে চিকিৎসকদের কাছ থেকে অন্যায় ভাবে চিকিৎসা সনদ নিতে চায়। কেউ দিতে অস্বীকৃতি জানালে তাদের উপর চড়াও হয়। এ কারণে সে মঙ্গলবার চিকিৎসক দেবাশিষ সাহাকে অপদস্ত করে। এর প্রতিবাদ করলে একজন পুলিশ সদস্যকে থাপ্পর দিয়ে কানের পর্দা ফাটিয়ে দেয়। এ ঘটনায় আইনগত পদক্ষেপ নেয়া হবে।
শরীয়তপুর সদর উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান আলমগীর হোসেন হাওলাদার বলেন, ঘটনার সময় আমি ডাক্তারের কক্ষে অবস্থান করছিলাম। হৈ চৈ শুনে বাহিরে এসে দেখি আক্তার আর এক ব্যক্তি হাতাহাতি করছে। আমি তাদের নিবৃত করি। ওই ব্যক্তি নিজেকে পুলিশ পরিচয় দেয়ার পর আমি আক্তারকে মারধর করে তাড়িয়ে দেই এবং পুলিশ সদস্যর কাছে ক্ষমা চাই। এর পরও পুলিশ আমার বাড়ি তল্লাশি করেছে। ক্লিনিক বন্ধ করে দিয়েছে।
ঘটনার পর থেকে আক্তার পলাতক রয়েছে। তার মুঠোফোন বন্ধ থাকা যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।
শরীয়তপুর সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) খলিলুর রহমান বলেন, চিকিৎসককে অপদস্ত ও পুলিশ সদস্যকে মারধরের ঘটনায় মামলার প্রস্তুতি চলছে। অভিযুক্তদের গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: ছাত্রলীগ নেতার থাপ্পরে কানের পর্দা ফাটল পুলিশ সদস্যর
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ