Inqilab Logo

মঙ্গলবার, ১৬ এপ্রিল ২০২৪, ০৩ বৈশাখ ১৪৩১, ০৬ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

৭ নভেম্বর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানেই সমাবেশ করবে বিএনপি রিজভী

প্রকাশের সময় : ২ নভেম্বর, ২০১৬, ১২:০০ এএম

স্টফ রিপোর্টার : আগামী ৭ নভেম্বর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানেই সমাবেশ করবে বলে জানিয়েছে বিএনপি। গতকাল মঙ্গলবার দুপুরে এক সংবাদ সম্মেলনে দলের সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী দলের এই সিদ্ধান্তের কথা জানান। আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব-উল-আলম হানিফের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, অন্যের সমালোচনা করার আগে নিজেদেরকে আয়নায় দেখুন।
নয়া পল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, ৭ নভেম্বর গণতন্ত্র ফিরে পাবার ও স্বাধীনতা সুরক্ষার একটি মহান দিন। এই দিবস পালিত হবে। বিএনপির তরফ থেকে বলছি, হানিফ সাহেবরা প্রতিহত করুন। আমরা জলপাইয়ের পাতা নিয়ে এগিয়ে যাব, দিবসটি পালন করবই।
রিজভী আহমেদ বলেন, আমরা বিশ্বাস করি, মাহবুব-উল আলম হানিফ সাহেব যে কথা বলেছেন, এটা তার ব্যক্তিগত বক্তব্য। এটি সরকারের বক্তব্য নয়। এই সমাবেশ সরকার করতে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী বিশেষ করে পুলিশও তা অনুমোদন দেবেন।
রিজভী বলেন, সমাবেশে খালেদা জিয়া উপস্থিত থাকবেন। সেজন্য এই সমাবেশে ব্যাপক মানুষের ঢল নামবে। ৭ নভেম্বরের যে সমাবেশ তা সুচারুভাবে, শান্তিপূর্ণভাবে অনুষ্ঠিত হবে। সেজন্য যে প্রস্তুতি নেয়া দরকার আমরা সেই প্রস্তুতি নিচ্ছি।
আগামী ৭ নভেম্বর বিএনপিকে কর্মসূচি করতে না দেয়ার হুমকি দিয়ে সোমবার এক আলোচনা সভায় দলটির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব-উল-আলম হানিফ বলেন, পঁচাত্তরের ৩ নভেম্বরের ঘটনা আড়াল করতে সিপাহী বিপ্লবের নামে পঁচাত্তরের ঘাতক গোষ্ঠী তথাকথিত বিপ্লব দিবস পালন করে। এই দিন তারা হাজারো সেনা সদস্যকে হত্যা করেছে। এই সেনা হত্যাকারীদের মাঠে নামার কোনো সুযোগ দেয়া হবে না। তাদেরকে কঠোরভাবে প্রতিহত করা হবে। বিপ্লবের নামে এই ঘাতকদের আশ্রয় প্রশ্রয় দেয়ার কোনো সুযোগ নেই।
বিএনপি ৭ নভেম্বর বিপ্লব ও সংহতি দিবস হিসেবে পালন করে থাকে। এবার দিনটিতে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে উদযাপনে সমাবেশের কর্মসূচি ঘোষণা করেছে গত ২০ অক্টোবর।
৭ নভেম্বরের পটভূমি তুলে ধরে রহুল কবির রিজভী বলেন, ৭ নভেম্বর হয়েছে গণতন্ত্র ফিরিয়ে দেয়ার জন্য। আওয়ামী লীগের পুনর্জন্ম হয়েছে এই দিনটির কারণেই। বাকশালের গুহার মধ্যে যে আওয়ামী লীগকে আটকিয়ে রাখা হয়েছিল, এই অন্ধকার গুহা থেকে আওয়ামী লীগের পুনর্জন্ম হয়ে নতুনভাবে আত্মপ্রকাশ ঘটেছে।
এখন আবারো নব বাকশাল সৃষ্টি হয়েছে, তারপরও আমরা-আপনারা যতটুকু কিঞ্চিত কথা বলতে পারছি, তার প্রেরণা হচ্ছে ৭ নভেম্বর। এই দিন থেকে অসংখ্য সংবাদপত্রের স্বাধীনতা নিশ্চিত হয়েছিল, একদলীয় শাসন থেকে বহুদলীয় গণতন্ত্রের প্রত্যাবর্তন আমরা করেছি এবং সেটি হচ্ছে গণতন্ত্রের পথচলা। এরকম দিনটি মানুষ উদযাপন করবে, এটাই স্বাভাবিক।
হানিফের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, আপনাদের অস্ত্র আছে, রাইফেল আছে, আপনাদের সাজানো আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী আছে, আপনারা অনেক কিছুই করতে পারেন। কিন্তু মানুষের হৃদয়ের ভেতরে যে দিবসটি পালিত হয়, সেই দিবসটি মুছবেন কি করে।
৭ নভেম্বর সম্পর্কে হানিফের বক্তব্যের সমালোচনা করে রিজভী বলেন, আপনার দল যাদেরকে পাশে রেখে, কাছে রেখেছেন, সরকারে অন্তর্ভুক্ত করেছেন, আপনারা এই দিনটিকে নিয়ে যেসব কথা বলেন, আগে নিজেদেরকে আয়নায় দেখুন। সেখান থেকে কি উত্তর আসে দেখুন।
৭৫-এর ১৫ আগস্টের বিয়োগান্তক ঘটনার পর হাসানুল হক ইনুরা দৌড়িয়ে রেডিও সেন্টারে গিয়ে ওই ঘটনার সাথে জড়িতদের ধন্যবাদ দিয়েছেন এবং এ কথাও বলেছেন, আওয়ামী লীগ ও বাকশাল বাদ দিয়ে আমরা জাতীয় সরকার করব। সেই লোক এখন আপনাদের পাশে। সেদিন রক্তের দাগ শুকাতে না শুকাতেই যে ব্যক্তি খোন্দকার মোশতাকের শপথ পাঠ করলেন সেই ব্যক্তি বর্তমান প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা। তারপরও কোন বিবেক নিয়ে ৭ নভেম্বর নিয়ে কথা বলেন।
সংবাদ সম্মেলনে দলের চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা আব্দুস সালাম, হাবিবুর রহমান হাবিব, শাহজাদা মিয়া, যুগ্ম মহাসচিব খায়রুল কবির খোকন, কেন্দ্রীয় নেতা এ বিএম মোশাররফ হোসেন, মুনির হোসেন প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

যে কোনো মূল্যে সমাবেশ- নোমান
এদিকে ৭ নভেম্বর বিএনপি যে কোনো মূল্যে সমাবেশ করবে বলে জানিয়েছেন দলটির ভাইস চেয়ারম্যান আব্দুল্লাহ আল নোমান। আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক মাহবুব-উল আলম হানিফের বক্তব্যকে চ্যালেঞ্জ করে এ কথা বলেছেন তিনি।
১০ টাকায় বিক্রি করা চাল নিয়ে আওয়ামী লীগ নতুন করে লুটপাট শুরু করেছে বলেও অভিযোগ করেছেন বিএনপির এই নেতা।
তিনি বলেন, ১০ টাকা কেজি চাল দেয়ার নাম করে আওয়ামী লীগের মন্ত্রী-এমপিরা এমনকি তাদের ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান-মেম্বাররা নতুন করে লুটপাট শুরু করেছে।
গতকাল দুপুরে জাতীয় প্রেসক্লাবে ভয়েস অব ডেমোক্রেসি (ভিওডি) আয়োজিত এক আলোচনা সভায় এসব কথা বলেন তিনি।
মাহবুব-উল আলম হানিফের বক্তব্যকে চ্যালেঞ্জ করে বিএনপির যুগ্ম-মহাসচিব সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল বলেন, ৭ নভেম্বর সমাবেশ যে কোনো মূল্যে করা হবে, হানিফের ক্ষমতা থাকলে সে যেন বাধা দেয়।
আয়োজক সংগঠনের সভাপতি জিল্লুর রহমান রিন্টুর সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় আরও বক্তব্য রাখেন- চিত্রনায়িকা শায়লা, বিএনপি নেতা কাজী মনিরুজ্জামান মনির, জাহাঙ্গীর হোসেন প্রমুখ।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: ৭ নভেম্বর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানেই সমাবেশ করবে বিএনপি রিজভী
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ