Inqilab Logo

শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৬ বৈশাখ ১৪৩১, ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

নারায়ণগঞ্জ-কুমিল্লা সিটিতে বিধির অপেক্ষায় ইসি সম্ভাব্য প্রার্থীদের দৌড়ঝাঁপ শুরু

প্রকাশের সময় : ৬ নভেম্বর, ২০১৬, ১২:০০ এএম

স্টাফ রিপোর্টার : দলীয় ভিত্তিতে কুমিল্লা ও নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনে নির্বাচনের সকল প্রস্তুতি নিয়েছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। এটি মন্ত্রণালয়ের ভেটিংসহ বিধিমালার অপেক্ষায় রয়েছে। বিধিমালা আসলেই নভেম্বরের তৃতীয় সপ্তাহেই তফসিল ঘোষণা এবং আগামী ডিসেম্বরের তৃতীয় সপ্তাহে এই দুই সিটি করপোরেশনে ভোট করার পরিকল্পনা নিয়েছে কমিশন। এদিকে কুমিল্লা ও নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের নির্বাচন যতই ঘনিয়ে আসছে ততই সরব হয়ে উঠছে প্রার্থীরা। দলীয় মনোনয়ন পেতে ইতোমধ্যে দোড়ঝাঁপ শুরু করেছেন তারা।
গতকাল (শনিবার) নির্বাচন কমিশনের সচিব মোহাম্মদ আবদুল্লাহ ইনকিলাবকে বলেন, আমরা এখন নির্বাচন বিধি ও আচরণবিধি’র অপেক্ষায় রয়েছি। মন্ত্রণালয় থেকে অনুমোদন পেলে তা গেজেট আকারে প্রকাশ করা হবে। এরপরই ভোটের তারিখ নির্ধারণে কমিশন বৈঠক হবে।
সচিব বলেন, ২৮ ডিসেম্বরে জেলা পরিষদ ভোট হবে। নারায়ণগঞ্জে ২৬ ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচন করতে হবে। সেক্ষেত্রে কমিশনের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ভোটের তফসিল দেওয়া হবে। আগামী বছর ৮ ফেব্রæয়ারি কুমিল্লা সিটি করপোরেশনের মেয়াদ শেষ হচ্ছে। আইন অনুযায়ী, এ বছরের ২৯ জুন থেকে ২৬ ডিসেম্বরের মধ্যে নারায়ণগঞ্জে এবং ১২ অগাস্ট থেকে ৮ ফেব্রæয়ারির মধ্যে কুমিল্লায় ভোট করতে হবে।
দুই সিটি কর্পোরেশনের সার্বিক তথ্য কমিশনের কাছে উপস্থাপন করতে পুরোদমে কাজ শেষ করেছেন ইসির সংশ্লিষ্টরা। প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী রকিবউদ্দীন আহমদ নেতৃত্বাধীন ৫ সদস্যের বর্তমান ইসির অধীনে এটাই হবে শেষ বড় নির্বাচন। আগামী ফেব্রæয়ারিতে মাসে বর্তমান কমিশনের মেয়াদ শেষ হচ্ছে। বিধান অনুযায়ী, কর্পোরেশনের মেয়াদ শেষ হওয়ার আগের ১৮০ দিনের মধ্যে ভোটগ্রহণ করতে হবে। তবে কবে নাগাদ ভোটগ্রহণ হবে তা কমিশন নির্ধারণ করবে। ২০১১ সালের ৩০ অক্টোবর নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনের ভোটগ্রহণ হয়েছিল। এ সিটি কর্পোরেশনের প্রথম সভা অনুষ্ঠিত হয় ওই বছরের ২৭ ডিসেম্বর। আর ২০১২ সালের ৫ জানুয়ারি কুমিল্লা সিটি কর্পোরেশনের ভোট হয়েছিল। ওই বছরের ৯ ফেব্রæয়ারি কুমিল্লা সিটি কর্পোরেশনের জনপ্রতিনিধিদের প্রথম সভা হয়। এ হিসাবে নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনের বর্তমান জনপ্রতিনিধিদের মেয়াদ আগামী ২৬ ডিসেম্বর ও কুমিল্লার আগামী বছর ৮ ফেব্রæয়ারি শেষ হচ্ছে। মেয়াদ শেষ হওয়ার ১৮০ দিন আগে নির্বাচনের বিধান রয়েছে। ফলে এ বছরের ২৬ ডিসেম্বরের মধ্যে নারায়ণগঞ্জে এবং ১২ আগস্ট থেকে ৮ ফেব্রæয়ারির মধ্যে কুমিল্লা সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনের ভোট শেষ করতে হবে ইসিকে। ডিসেম্বরের মধ্যে নারায়ণগঞ্জ ও কুমিল্লা সিটির নির্বাচন একইদিনে করতে চায় ইসি। সর্বশেষ ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ এবং চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের ভোট একদিনে নিয়েছিল ইসি। দুই সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনের সময়সূচি ঘোষণার ক্ষেত্রে বছর শেষে পঞ্চম শ্রেণীর সমাপনী ও অষ্টম শ্রেণীর জুনিয়র স্কুল সার্টিফিকেট পরীক্ষার বিষয়টি বিবেচনায় নিয়ে তারিখ চূড়ান্ত করা হবে।
জানা গেছে, সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনের আচরণ বিধিমালা ও পরিচালন বিধিমালার সংশোধনীর খসড়া চূড়ান্ত করেছে কমিশন সচিবালয়। পৌরসভা ও ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনের মতো একই ধরনের বিধান যুক্ত হচ্ছে সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনের বিধিমালায়। প্রথমবারের মতো সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে দলীয় পরিচয় ও প্রতীকে অনুষ্ঠেয় এ নির্বাচনে সরকারি সুবিধাভোগী মন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রী ও এমপিদের নির্বাচনী প্রচারণায় অংশ নেয়ার ওপর নিষেধাজ্ঞা থাকবে। তবে প্রার্থী হলে মেয়রদের প্রচারণার সুযোগ দেয়া হতে পারে। পৌর ও ইউপি নির্বাচনে মেয়ররা প্রচারণায় অংশ নিতে পারেন না।
ইসির তথ্য অনুযায়ী, নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনে সাধারণ ওয়ার্ড ২৭ ও সংরক্ষিত ওয়ার্ড ৯টি। মোট ভোটার রয়েছে ৪০ লাখ ৩ হাজার ৭০৬। এরমধ্যে পুরুষ ভোটার ২ লাখ ৩ হাজার ৯৬ জন ও নারী ২ লাখ ৬১০ জন। অপরদিকে কুমিল্লা সিটি কর্পোরেশনে সাধারণ ওয়ার্ড ২৭ ও সংরক্ষিত ওয়ার্ড ৯টি। ভোটার ১ লাখ ৬৯ হাজার ২৭৩ জন। এরমধ্যে পুরুষ ভোটার ৮৩ হাজার ১৯৯ জন ও নারী ৮৬ হাজার ৭৪ জন।
সিটি কর্পোরেশন নির্বাচন সামনে রেখে ইতিমধ্যে নারায়ণগঞ্জের সম্ভাব্য প্রার্থীদের মধ্যে দৌড়ঝাঁপ শুরু হয়েছে। সম্ভাব্য কাউন্সিলররা দলীয় সমর্থন পেতে সিনিয়র নেতাদের কাছে ধরনা দিচ্ছেন তারা। ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের অনেক নেতা বিভিন্ন দিবস উপলক্ষে পোস্টার ও ব্যানারে শুভেচ্ছা জানিয়ে তাদের প্রার্থিতার আগাম বার্তা দিচ্ছেন। মেয়র পদে প্রার্থী কারা হবেন- তা নিয়েও নগরীতে গুঞ্জন চলছে। মেয়র সেলিনা হায়াৎ আইভী আবারও নির্বাচনে প্রতিদ্ব›িদ্বতা করবেন বলে জানা গেছে।
কুমিল্লা সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে ভোটার ও সম্ভাব্য প্রার্থীদের মধ্যে তেমন কোনো আলোচনা নেই। তবে আওয়ামী লীগের দুই গ্রুপ ভেতরে ভেতরে প্রার্থী বাছাই করেছে। এর মধ্যে কুমিল্লা সদর আসনের সংসদ সদস্য আ ক ম বাহাউদ্দিন বাহারের অনুসারী যুবলীগ নেতা আরফানুল হক রিফাত এবং জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক যুগ্ম আহŸায়ক এডভোকেট আফজল খানের মেয়ে সিটি কর্পোরেশনের কাউন্সিলর আঞ্জুম সুলতানা সীমা দলীয় মনোনয়ন পাওয়ার চেষ্টা চালাচ্ছেন। সর্বশেষ কুমিল্লা সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে এডভোকেট আফজল খান প্রতিদ্ব›িদ্বতা করে হেরে যান। এছাড়া বর্তমান মেয়র বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য মনিরুল হক সাক্কু মেয়র পদে আবার লড়বেন বলে জানা গেছে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: নারায়ণগঞ্জ-কুমিল্লা সিটিতে বিধির অপেক্ষায় ইসি সম্ভাব্য প্রার্থীদের দৌড়ঝাঁপ শুরু
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ