Inqilab Logo

বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১, ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

কাশ্মীর সীমান্তে যুদ্ধের আলামত দেখতে পাচ্ছে ভারতীয় মিডিয়া

প্রকাশের সময় : ৭ নভেম্বর, ২০১৬, ১২:০০ এএম

ইনকিলাব ডেস্ক : কাশ্মীর সীমান্তে উত্তেজনার পারদ নামছেই না। যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘন করে বারবার গোলাগুলির ঘটনা ঘটছে নিয়মিতই। কিন্তু সেগুলো সীমাবদ্ধ ছিল পাকিস্তান ও ভারতের সীমান্তরক্ষী বাহিনীর মধ্যেই। কিন্তু এবার ভারতের মিডিয়ায় খবর প্রকাশিত হয়েছে, সীমান্তে যুদ্ধপ্রস্তুতি নিচ্ছে পাকিস্তান। আর তাই সীমান্তরক্ষী রেঞ্জার্স সদস্যদের সরিয়ে পুরোদস্তুর সেনাবাহিনীর সদস্য ও ভারী অস্ত্র মোতায়েন করছে পাকিস্তান। গত শনিবার ভারতীয় মিডিয়াগুলো দেশটির সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিএসএফের সূত্র উদ্ধৃত করে এ ধরনের খবর প্রচার করেছে। তবে এ বিষয়ে পাকিস্তান কোনো মন্তব্য করেনি। দিল্লির প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ও এখনো এ বিষয়ে আনুষ্ঠানিক মন্তব্য করেনি।
ভারতীয় মিডিয়ার খবরে বিএসএফ সূত্রে বলা হচ্ছে, কাশ্মীর সীমান্তের আন্তর্জাতিক সীমানা বরাবর ১৯০ কিলোমিটার এলাকা থেকে পাকিস্তানি রেঞ্জারদের সরিয়ে সেখানে সেনা মোতায়েন করছে পাকিস্তান। সাধারণত সীমান্ত এলাকায় রেঞ্জার মোতায়েন করে থাকে পাকিস্তান। তাদের সরিয়ে সেনাবাহিনীকে আনায় পাকিস্তানের নতুন কোনো অভিপ্রায় রয়েছে বলেও মনে করছেন ভারতের নিরাপত্তা বিশ্লেষকরা। ভারতের দাবিকৃত সার্জিক্যাল স্ট্রাইকের পর কাশ্মীরের কাঠুয়া, হীরানগর, সাম্বা সেক্টরে প্রবল গুলিবর্ষণ করেছে পাক রেঞ্জাররা। তাদের গুলিতে সীমান্তের ১৭২টি স্কুল বন্ধ করে দিতে হয়েছে। বেশ কয়েকজন বেসামরিক লোকও নিহত হয়েছে এসব হামলায়। বহু মানুষ ঘরছাড়া। গত কয়েকদিন হামলা বন্ধ থাকলেও তারা ঘরে ফিরতে ভয় পাচ্ছে। ভারতের দাবি, সার্জিক্যাল স্ট্রাইকের পর ৯৯ বার অস্ত্রবিরতি চুক্তি লঙ্ঘন করে গুলি চালিয়েছে পাকিস্তান। অবশ্য, পাকিস্তান উল্টো দাবি করে আসছে, বিএসএফই সীমান্তের এপার থেকে গুলি শুরু করে, আর তারা পাল্টা জবাব দিয়ে থাকে। সীমান্তের এসব গোলাগুলিতে পাকিস্তানেও বেশ কয়েকজন বেসামরিক লোক হতাহত হয়েছে।
বিএসএফের একটি সূত্রে টাইমস অব ইনডিয়ার দাবি, কাশ্মীর সীমান্তের পাকিস্তান রেঞ্জার আউট পোস্টগুলোতে মোতায়েন করা হচ্ছে সেনা। আনা হচ্ছে বিপুল অস্ত্র। গত ৮-৯ দিন ধরেই সীমান্তের রেঞ্জারদের পোস্টগুলোতে আনাগোনা করছে পাকিস্তান সেনাবাহিনীর গাড়ি। সেখান থেকে নামানো হচ্ছে সেনা ও অস্ত্রশস্ত্র। পাকিস্তানের এই নতুন কর্মকা- দেখে সীমান্তে আরো গোলাগুলি চালিয়ে পরিস্থিতি গরম করে রাখতে চায় পাকিস্তান এমন সন্দেহ ভারতের। শুধু বিএসএফ নয়, ভারতের কেন্দ্রীয় সরকারও সীমান্তে পাকিস্তানি সেনা মোতায়েনের এই খবরটি জানে বলে দাবি ভারতীয় মিডিয়ার। এসব খবরে বলা হয়েছে, ভারত সরকার মনে করছে, অন্ততপক্ষে চলতি মাসের শেষ পর্যন্ত সীমান্তের এই উত্তেজনা ও গোলাগুলি চলতেই থাকবে। কারণ, এই মাসের শেষেই অবসর নিচ্ছেন পাকিস্তানের সেনাপ্রধান রাহিল শরিফ। ভারতীয় নিরাপত্তা বিশ্লেষকরা মনে করে পাক সেনা মোতায়েন হওয়ার পর থেকেই ভারতীয় এলাকায় হামলা-পাল্টা হামলা বেড়েছে। এদিকে বিএসএফ সূত্রের খবর, পাকিস্তানের চেনাব রেঞ্জারদের সেক্টর কমান্ডার একজন সেনা অফিসার। সাম্প্রতিক হামলার পেছনে এই পাক সেনা কর্মকর্তার তৎপরতাই কাজ করছে বলে ধারণা ভারতের। টাইমস অব ইনডিয়া, কে-২৪ নিউজ, এবিপি নিউজ, ওয়েবসাইট।

আইরিশ জিহাদি নিহত
এদিকে, গত শুক্রবার ক্যাথলিক খ্রিস্টান থেকে ইসলাম গ্রহণ করা আয়ারল্যান্ডের এক নাগরিক মসুলে আত্মঘাতী হামলা চালিয়ে নিহত হয়েছে বলে জানা গেছে। আইরিশ কর্তৃপক্ষ বিষয়টি তদন্ত করে দেখছে। আইএসের নিজস্ব বার্তা সংস্থা জানায়, ৪৯ বছর বয়স্ক টেরেন্সি কেলি গত শুক্রবার মসুলের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলে শিয়া গেরিলাদের ওপর হামলা চালাতে গিয়ে নিহত হন। সউদি আরবে মাদক বিক্রির দায়ে জেল খাটার পর কেলি ১৬ বছর আগে ইসলাম ধর্মে দীক্ষিত হন। তারপর দেশে ফিরে তিনি আল-কায়েদা সমর্থিত ‘ইসলাম ফর আয়ারল্যান্ড’ নামে একটি সংগঠন তৈরি করেন। তার ডাক নাম তালিবান টেরি বা খালিদ কেলি। দ্য টেলিগ্রাফ, স্কাই নিউজ।
মসুলে ইরাকি বাহিনীর বিরুদ্ধে ব্যাপক আত্মঘাতী হামলা আইএসের
ইনকিলাব ডেস্ক : ইরাকের মসুল শহরের নিয়ন্ত্রণ ধরে রাখতে ইরাকি বাহিনীর অভিযানের মুখে আইএস ব্যাপক হারে আত্মঘাতী হামলা শুরু করেছে এবং এ কাজে তারা শিশুদের ব্যবহার করছে। ইরাকি বাহিনী গত ১৭ অক্টোবর হতে অভিযান শুরু করার পর থেকে এ পর্যন্ত শতাধিক আইএস জিহাদি মসুলের নিয়ন্ত্রণ রক্ষায় আত্মঘাতী হামলা চালাতে গিয়ে নিজেদের জীবন দিয়েছে। এদের মধ্যে খ্রিস্টান থেকে ইসলাম ধর্মে দীক্ষিত হওয়া এক আইরিশ নাগরিকও রয়েছে। এর আগে আইএস এতো ব্যাপক হারে আত্মঘাতী হামলা চালায়নি।
আত্মঘাতী বোমা হামলা বিষয়ক বিশ্লেষক আইসিএসআর-এর বিশেষজ্ঞ চার্লি উইন্টার বলেন, যে হারে তারা নিজেদের হত্যা করছে, তা পূর্বের যে কোন সময়ের চেয়ে সম্পূর্ণ ভিন্ন। মসুলে শিয়া গেরিলাদের কাছাকাছি জায়গায় এক আত্মঘাতী তার গাড়ি বোমার বিস্ফোরণ ঘটায়। মসুলের যুদ্ধক্ষেত্রে ২৪ ঘণ্টায় তারা পৃথক ১৮টি আত্মঘাতী হামলা চালিয়েছে। উইন্টার বলেন, এসব হামলা ছিলো আল-কায়েদা সংশ্লিষ্ট সিরিয়ায় আল-নুসরা ফ্রন্টের হামলার চেয়েও বহুগুণ ভয়াবহ। তারা একশো দিনে এ পরিমাণ হামলা চালিয়েছিলো। আইএস ১০২ টিরও বেশি হামলা চালিয়েছে সশস্ত্র ও বিস্ফোরক বোঝাই বাহনে করে শত্রুর দিকে দ্রুত বেগে ধাবমান অবস্থায়। আইএসের প্রকৌশলীরা আত্মঘাতী হামলা চালাবার জন্য এমন যান বানিয়েছে, যার পুরোটাই কঠিন আবরণ দিয়ে আবৃত এবং এতে ক্ষুদ্র একটি চতুষ্কোণ ছিদ্র রাখা হয়েছে, যা দিয়ে হামলাকারী শত্রুকে দেখতে পারে। ইরাকি বাহিনী কারেমলেস-এর খ্রিস্টান অধ্যুষিত একটি গ্রাম থেকে অব্যবহৃত অবস্থায় এ ধরনের একটি যান উদ্ধার করেছে। বিশেষ বাহিনীর কমান্ডার জেনারেল ফাদেল আল-বারাবি বলেছেন, জিহাদিরা এসব হামলায় এখন তাদের সেরা সদস্যদের ব্যবহার করছে। বিশেষ করে বিদেশী যোদ্ধা, যারা চেচনিয়া থেকে এসেছে, তাদেরই ব্যবহার করা হচ্ছে বেশি। চেচেনরা এ ধরনের হামলায় বেশি দক্ষ। মসুলে চলমান আত্মঘাতী হামলায় অন্তত দুটি শিশু নিহত হয়েছে। তবে, এ সংখ্যা আরও বেশি হতে পারে। ইরাকি বাহিনীর এক ভিডিওতে শনিবার দেখা গেছে, সৈন্যরা এক তরুণ জিহাদিকে আত্মহনন না করতে বিশেষ অনুরোধ জানাচ্ছে। এক সৈন্য বলছে, ভাই, তুমি খুব ছোট। যারা তোমাকে জীবন দিতে পাঠিয়েছে, সেসব নেতাদের মরতে দাও। তুমি এটা কোরো না, আমরা তোমাকে রক্ষা করতে এসেছি। তবে ভিডিওতে এটা বোঝা যায়নি যে, তারা শেষ পর্যন্ত শিশুটিকে বাঁচাতে পেরেছিল কি না।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: কাশ্মীর সীমান্তে যুদ্ধের আলামত দেখতে পাচ্ছে ভারতীয় মিডিয়া
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ