Inqilab Logo

বৃহস্পতিবার, ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ০৫ বৈশাখ ১৪৩১, ০৮ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

ভুট্টা ক্ষেতে দামুড়হুদার চাষিদের কাটছে ব্যস্ত সময়

প্রকাশের সময় : ৮ নভেম্বর, ২০১৬, ১২:০০ এএম

নুরুল আলম বাকু, দামুড়হুদা (চুয়াডাঙ্গা) থেকে

চুয়াডাঙ্গার দামুড়হুদা উপজেলায় চলতি মৌসুমে ব্যাপকহারে ভুট্টার আবাদ শুরু হয়েছে। স্বল্প খরচে অধিক লাভের আশায় বিগত বছরগুলোর মত এবারও ব্যাপকভাবে ভুট্টা চাষের দিকে ঝুঁকে পড়েছেন এলাকার চাষিরা। চলতি মৌসুমে লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে বেশি জমিতে ভুট্টার আবাদ হবে এবং বাজার দর ভাল পেলে এবারও ভুট্টাচাষিদের মুখে হাসির ঝিলিক ফুটবে এমনটাই অভিমত অভিজ্ঞ চাষিদের। বিগত বছরগুলোতে ভুট্টাচাষে কৃষকরা লাভবান হওয়ায় এ আবাদ উত্তরোত্তর বৃদ্ধি পাচ্ছে। উপজেলার বিভিন্ন মাঠে মাঠে ভুট্টা রোপণে ব্যস্ত সময় পার করছেন ভুট্টাচাষিরা। জানা যায়, চুয়াডাঙ্গার দামুড়হুদায় বিগত বছরগুলোতে ভুট্টার ফলন ও দাম ভাল পেয়ে লাববান হওয়ায় এবারও চাষিরা ব্যাপকভাবে ভুট্টা চাষের দিকে ঝুঁকে পড়েছে। ভুট্টার আবাদ কৃষকরা লাভবান হওয়ায় এলাকায় উত্তরোত্তর ভুট্টার আবাদ বেড়েই চলেছে। বর্তমানে এর বীজ শতভাগ আমদানি নির্ভর। সম্প্রতি দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে ব্যাপকহারে ভুট্টার আবাদ হলেও এর বীজ উৎপাদনে ব্যাপারে সরকারি বা বেসরকারি কোন উদ্যোগ নেই। আর বিদেশ থেকে আমদানিকৃত বীজের দামও দেশে উৎপাদিত ভুট্টার প্রায় ২৫-৩০ গুণ বেশি। আবার বিভিন্ন সময়ে বেশি দামে এসব বীজ কিনে চাষিরা প্রতারিত হন। তাই সরকারি বা বেসরকারিভাবে উদ্যোগে দেশে ভাল বীজ উৎপাদন হলে চাষিরা উপকৃত হবে। দেশে ব্যাপকহারে পোল্ট্রি ব্যবসা শুরু হলে প্রথম দিকে বিপুল পরিমাণ বৈদেশিক মুদ্রা খরচ করে বিভিন্ন দেশ থেকে বিপুল পরিমাণ ভুট্টা আমদানি করতে হতো। ৫/৬ বছর যাবৎ দেশের উৎপাদিত ভুট্টা দিয়ে সে চাহিদা পূরণ হওয়ায় বিদেশ থেকে আমদানি প্রায় বন্ধ হয়ে গেছে। বর্তমানে আমাদের দেশের উৎপাদিত ভুট্টাই রপ্তানি হচ্ছে পৃথিবীর বিভিন দেশে। বর্তমানে দেশে ভুট্টার বহুমুখী ব্যবহার শুরু হওয়ায় এর চাহিদাও দিন দিন বাড়েছে। দেশে বর্তমানে ব্যাপকহারে ভুট্টার আবাদ হলেও এর বীজ উৎপাদনে ব্যাপারে সরকারি বা বেসরকারি কোন উদ্যোগ নেই। ইতোমধ্যে প্রমাণিত হয়েছে বাংলাদেশের মাটি ভুট্টাচাষের জন্য অত্যন্ত উপযোগী। তাই সরকার এ চাষের প্রতি একটু বেশি নজর দিলে এ ভুট্টা চাষই পাল্টে দিতে পারে দেশের অর্থনৈতিক চালচিত্র এমন মন্তব্য অনেকের। দামুড়হুদা উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, চলতি বছর উপজেলায় ভুট্টা আবাদের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ১৪হাজার ১শ’ ৮০হেক্টর জমি। গত বছর এ লক্ষ্যমাত্রা ছিল ১২হাজার ৫শ’ হেক্টর জমি। সেক্ষেত্রে অর্জিত হয়েছিল ১৪হাজার ১৮০ হেক্টর জমি। অর্থাৎ লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ১হাজার ৬৮০ হেক্টর বেশি জমিতে ভূট্টার আবাদ হয়েছিল। উপজেলার পরানপুর গ্রামের কিতাব আলি, আপেল, বিল্লাল, আসাদসহ বেশ কয়েকজন ভুট্টাচাষী বলেন, আমরা প্রতি বছর ভুট্টার চাষ করে থাকি। গত বছর ভুট্টা উঠার সাথে সাথে ড্যাপ (আধা শুকনা) ভুট্টা ভাল দামে বিক্রি করেছিলাম। তাতে অন্যান্য ফসলের তুলনায় বেশ লাভ হয়েছিল। তবে অনেক সময় স্থানীয় ব্যাবসায়ীরা সিন্ডিকেট করে বাজারদর কমিয়ে থাকে। তাতে মধ্যস্বত্বভোগীরা লাভবান হলেও লোকসানের বোঝা চেপে যায় ভুট্টাচাষিদের ঘাড়ে। বর্তমানে এলাকায় ভুট্টার আবাদ বেশি তাই সরকারিভাবে ভুট্টার বাজারদর বেঁধে দিলে চাষিরা উপকৃত হবে। বিগত বছরগুলোয় অন্যান্য ফসলের আবাদে লোকসান হওয়ার কারণে এলাকার চাষিরা কয়েক বছর থেকে ব্যাপকহারে ভুট্টা আবাদে ঝুঁকে পড়েছে। ভুট্টা চাষে সময় এবং খরচ কম লাগে এবং অন্যান্য ফসলের তুলনায় ভুট্টায় ফলনও বেশি হয়। ফলন ও দাম ভালো পেলে গতবারের মতো এবারও চাষিদের মুখে হাসি ফুটবে এমটাই জানিয়েছেন ভুট্টাচাষিরা।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: ভুট্টা ক্ষেতে দামুড়হুদার চাষিদের কাটছে ব্যস্ত সময়
আরও পড়ুন
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ