ইনকিলাব ডেস্ক : ব্রিটিশ ঔপনিবেশিক শক্তির হাত থেকে স্বাধীনতা ছিনিয়ে আনার পর দেশটির প্রথম নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয় ১৭৮৯ সালের জানুয়ারি মাসের প্রথম বুধবার। ওই নির্বাচনে জয়ী হন যুক্তরাষ্ট্রের স্বাধীনতা সংগ্রামের নেতা জর্জ ওয়াশিংটন। সেই নির্বাচনে জর্জ ওয়াশিংটনের কোনো প্রতিদ্বন্দ্বী ছিলেন না বললেই চলে। এমন অপ্রতিদ্বন্দ্বিতা সত্ত্বেও জর্জ ওয়াশিংটন নির্বাচনে অংশ নেয়ার পক্ষপাতী ছিলেন না। তিনি মনে করতেন, ক্ষমতার জন্য নির্বাচনে দাঁড়ানোটা তার জন্য অসম্মানজনক বিষয়। তবে সমর্থক এবং কাছের লোকদের অব্যাহত চাপের মুখে শেষ পর্যন্ত তিনি নির্বাচনে দাঁড়ান এবং বিজয়ী হন। 

প্রথম নির্বাচনের সময় বিভিন্ন অঙ্গরাজ্যগুলোকে তাদের নিজস্ব পদ্ধতিতে তাদের প্রতিনিধি বেছে নিতে বলা হয়। ১৭৯২ সালের দ্বিতীয় নির্বাচনেও ওয়াশিংটন প্রেসিডেন্ট হিসেবে নির্বাচিত হন। বেশি বয়স, শারীরিক অসুস্থতার কারণ, আর প্রতিপক্ষের শত্রুভাবাপন্ন মানসিকতার কারণ দেখিয়ে এই নির্বাচনেও অংশ নিতে অনীহা প্রকাশ করেন তিনি। কিন্তু প্রথম নির্বাচনের মতো ঘটনা ঘটে দ্বিতীয় নির্বাচনেও। দ্বিতীয় বারের মতো তার শাসনকাল শেষ হলে কাছের মানুষরা তাকে আবার অনুরোধ করেন তৃতীয়বারের জন্য নির্বাচনে দাঁড়াতে। কিন্তু সেবার নিজ সিদ্ধান্ত থেকে ওয়াশিংটনকে টলানো যায়নি। যুক্তরাষ্ট্রের তৃতীয় প্রেসিডেন্ট হিসেবে নির্বাচিত হন জন অ্যাডামস। ফেডারেশনালিস্টদের বিরুদ্ধে রিপাবলিকানদের সেটাই প্রথম জয়।
এবারের নির্বাচনে যিনি জয়ী হবেন তিনিই হবেন যুক্তরাষ্ট্রের ৪৬তম প্রেসিডেন্ট। তবে এর আগে যে ৪৪ জন হোয়াইট হাউসের বাসিন্দা ছিলেন, তাদের সঙ্গে পরিচয় হব এখন। এদের অনেকেই তাদের দেশে তো বটেই, পৃথিবীর ইতিহাসের পাতায় নিজেদের মহিমায় উজ্জ্বল হয়ে রয়েছেন। তবে কুখ্যাত হয়ে আছেন এমন প্রেসিডেন্টের সংখ্যাও কম নয়।
জর্জ ওয়াশিংটন (১৭৮৯-১৭৯৭) : যুক্তরাষ্ট্রের স্বাধীনতা যুদ্ধের অগ্রনায়ক এবং দেশটির প্রথম প্রেসিডেন্ট। জন অ্যাডামস (১৭৯৭-১৮০১) : হোয়াইট হাউসে বসবাসকারী প্রথম প্রেসিডেন্ট। ৩. টমাস জেফারসন (১৮০১-১৮০৯)। জেমস মেডিসন (১৮০৯-১৮১৭)। জেমস মনরো (১৮১৭-১৮২৫)। জন কুইনসি অ্যাডামস (১৮২৫-১৮২৯)। অ্যান্ড্রু জ্যাকসন (১৮২৯-১৮৩৭)। মার্টিন ভ্যান বিউরেন (১৮৩৭-১৮৪১)। উইলিয়াম হেনরি হ্যারিসন (১৮৪১-১৮৪১)। জন টেইলর (১৮৪১-১৮৪৫)। জেমস নক্স পোক (১৮৪৫-১৮৪৯)। জ্যাকারি টেইলর (১৮৪৯-১৮৫০)। মিলার্ড ফিলমোর (১৮৫০-১৮৫৩)। ফ্রাঙ্কলিন পিয়ার্স (১৮৫৩-১৮৫৭)। জেমস বুকানান (১৮৫৭-১৮৬১)। আব্রাহাম লিংকন (১৮৬১-১৮৬৫); যিনি ক্রীতদাস প্রথা উচ্ছেদ করার কারণে জগদ্বিখ্যাত হয়ে আছেন। আততায়ীর গুলিতে তিনি নিহত হন। অ্যন্ড্রু জনসন (১৮৬৫-১৮৬৯)। ইউলিসেস সিম্পসন গ্রান্ট (১৮৬৯-১৮৭৭)। রাদারফোর্ড রিচার্ড হায়েস (১৮৭৭-১৮৮১)। জেমস আব্রাহাম গারফিল্ড (১৮৮১-১৮৮১)। চেস্টার অ্যালান আর্থার (১৮৮১-১৮৮৫)। গ্রোভার ক্লিভল্যান্ড (১৮৮৫-১৮৮৯)। বেঞ্জামিন হ্যারিসন (১৮৮৯-১৮৯৩)। গ্রোভার ক্লিভল্যান্ড ফের ১৮৯৩-১৮৯৭ পর্যন্ত আবার দায়িত্ব পালন করেন। উইলিয়াম ম্যাককিনলে (১৮৯৭-১৯০১)। ২৬. থিওডর রুজভেল্ট (১৯০১-১৯০৯); যুক্তরাষ্ট্রের কনিষ্ঠতম প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেন। উইলিয়াম হাওয়ার্ড টাফট (১৯০৯-১৯১৩)। উড্রো উইলসন (১৯১৩-১৯২১)। ওয়ারেন গ্যামালিয়েন হার্ডিং (১৯২১-১৯২৩)। কেলভিন কুলিজ (১৯২৩-১৯২৯)। হার্বার্ট ক্লার্ক হুভার (১৯২৯-১৯৩৩)। ফ্রাঙ্কলিন ডিলানো রুজভেল্ট (১৯৩৩-১৯৪৫)। হ্যারি এস ট্রুম্যান (১৯৪৫-১৯৫৩)। ডেভিড আইসেনহাওয়ার (১৯৫৩-১৯৬১)। জন এফ কেনেডি (১৯৬১-১৯৬৩); প্রথম রোমান ক্যাথলিক প্রেসিডেন্ট। যিনি আততায়ীর গুলিতে নিহত হন। লিন্ডন বেইনস জনসন (১৯৬৩-১৯৬৯)। রিচার্ড নিক্সন (১৯৬৯-১৯৭৪)। জিরাল্ড ফোর্ড জুনিয়র (১৯৭৪-১৯৭৭)। জিমি কার্টার (১৯৭৭-১৯৮১)। রোনাল্ড রিগ্যান (১৯৮১-১৯৮৯); যুক্তরাষ্ট্রের বয়স্ক প্রেসিডেন্ট, হলিউডের বহু ছবিতে অভিনয় করেছেন তিনি। জর্জ হারবার্ট ওয়াকার বুশ (সিনিয়র) (১৯৮৯-১৯৯৩)। বিল ক্লিনটন (১৯৯৩-২০০১)। জর্জ ডাব্লিউ বুশ (সিনিয়র বুশের ছেলে)। দুই বারে তার মেয়াদকাল ২০০১-২০০৯। বারাক হুসেন ওবামা (২০০৯-২০১৬)। ওয়েবসাইট।