Inqilab Logo

শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ০৭ বৈশাখ ১৪৩১, ১০ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

সিলেট বিএনপির কাউন্সিল থেকে প্রার্থীতা প্রত্যাহার করলেন মেয়র আরিফ!

সিলেট ব্যুরো | প্রকাশের সময় : ২২ মার্চ, ২০২২, ২:৫৬ পিএম

সিলেট জেলা বিএনপির কাউন্সিলে সভাপতি পদে মনোনয়নপত্র দাখিল করেছিলেন দলের কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য ও সিটি করপোরেশনের মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী। তবে আজ মঙ্গলবার (২২ মার্চ) দুপুরে এক সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে সেই প্রার্থিতা প্রত্যাহার করেছেন মেয়র আরিফ। নগরীর একটি কমিউনিটি সেন্টারে অনুষ্ঠিত এ সংবাদ সম্মেলনে আরিফের বক্তব্য প্রদানকালে বিএনপির হাইকমান্ডের নির্দেশনায় প্রার্থিতা প্রত্যাহার করছেন তিনি – এমটিই সুস্পষ্ট হয়ে ওঠে। লিখিত বক্তব্য প্রদানকালে আরিফুল হক চৌধুরী বলেন, ‘আমার অতীত ভালোমন্দ আপনাদের ও প্রিয় বিএনপি নেতাকর্মী সাথে নিয়েই। সর্বোপরি সিলেটের সকল পর্যায়ের জনতাকে সাথী করেই অতিক্রম করেছি সকল ক্রান্তিলগ্ন। তাই আজ এবং ভবিষ্যতেও হবে না এর ব্যতিক্রম।’ তিনি বলেন, ‘আমি শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান সাহেবের সময় হতে ছাত্র দল থেকে শুরু করে আজ তিলে তিলে চড়াই-উতরাই পার করে এক বিএনপি কর্মী। আমার চলার সাথী সিলেটের তৃণমূল বিএনপি নেতাকর্মী। দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার শিক্ষা, দলীয় শৃঙ্খলা ও আপোষহীনভাবে কমান্ড মেনে চলার দৃড়তা আমার পাথেয়। সারাদেশে যখন বিএনপি গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় দল গঠনে দিনরাত অতিবাহিত করছে, তখন গণতন্ত্র ও বাকস্বাধীনতা হরণকারী ফ্যাসিস্ট বাকশালি সরকারের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ লড়াইয়ে শামিল থাকা এক খাটি বিএনপি কর্মী হিসেবে আমি সভাপতি পদে নির্বাচন করতে সিদ্ধান্ত নেই। অকস্মাৎ - মাত্র এক সপ্তাহের পদচারণায় সিলেট জেলার আঠারােটি সাংগঠনিক অঞ্চলে প্রাণচাঞ্চল্যে তৈরী করতে সক্ষম হই। এমতাবস্থায় তৃণমূল বিএনপি নেতাকর্মী যেভাবে আমার প্রতি সাড়া দিয়েছেন, তা এককথায় বর্ণনা দিলে শুধু বলতে হয় - অপূর্ব, যেন অগ্রহায়ণে নবাহ্ন উৎসব। আমি কৃতজ্ঞতা জানিয়ে বলছি- এর ঋণ শোধ করা অসম্ভব। আমি বিনীত চিত্তে ঋণী হয়ে রইলাম তাঁদের কাছে। দলের একনিষ্ঠ কর্মী হিসেবে আমার কাছে নীতিনির্ধারণী বহুজাতীয় স্বার্থ সংশ্লিষ্ট বিষয় একজন ব্যক্তির চেয়ে অবশ্যম্ভাবীভাবে অতীব গুরুত্বপূর্ণ। আমাদের আদর্শিক চেতনার নেতা প্রেসিডেন্ট জিয়া বলে গেছেন- ব্যাক্তির চেয়ে দল বড়, দলের চেয়ে দেশ। তাই সেই মতের সিপাহী হয়ে এর বাইরে আমার এক কদমও নেই এবং চলতে পারে না। এমতাবস্থায় দলের হাইকমান্ড মনে করেছেন একজন মেয়র হয়ে সিলেটের যে প্রভুত উন্নয়ন প্রকল্প নিয়ে আপনাদের সহযোগিতায় নগরবাসীর আশা-আকাংকা অনুযায়ী পরিশ্রম করার চেষ্টা করছি -সেই লক্ষ্যে আরও মনোনিবেশ করে আগামীতে দলের স্বার্থে বড় কোনো কাজের জন্য প্রস্তুত থাকা বেশি গুরুত্বপূর্ণ। এমন আলােকে আমি মনে করি- বিএনপি আমাকে অনেক দিয়েছে, একজন ছাত্রদল কর্মী করে আজকের মেয়র আরিফ। আমি কখনো ভুলে যাই না দু-দুবার মেয়র হতে ভোটে লড়াইয়ে আমার প্রিয় নেতাকর্মী এই ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে কী মরণপণ লড়াই করেছেন এবং সেটি কেবল বিএনপির আরিফুল হক চৌধুরীর জন্যে করেছেন, শুধু আরিফের জন্যে নয়। গােটা দেশের মানুষ যখন বলে সিলেটের মেয়র বিএনপির আরিফুল, তখন বাগানে ফুটে বিএনপি নামক ফুল! আমি সেই বাগানের মালি হয়ে আমার সারাজীবনের রাজনৈতিক জীবন চালিয়ে যেতে দৃড়সংকল্পে বলীয়ান। আমার শক্তি ও সাহসের বাতিঘর দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া এবং দেশনায়ক তারেক রহমান। এমতাবস্থায় বিএনপি হাইকমান্ডের নির্দেশনার আলোকে আসন্ন সিলেট জেলা বিএনপির কাউন্সিলে সভাপতির পদ হতে আমার প্রার্থীতা প্রত্যাহার করে নিতে আমি অকুণ্ঠভাবে ঘোষনা করছি। এবং এই ঘোষণার সাথে সাথে আমার সঙ্গে পথচলা সকল নেতাকর্মী তথা বিএনপির প্রাণ-সিলেট জেলার প্রত্যেক তৃণমূল নেতাকর্মীদের বুকে ঠাই পাওয়া আরিফ নিঃসঙ্কোচে স্বীকার করছি, জানান দিচ্ছি - আমি আপনাদের ভালােবাসায় সিক্ত, আপ্লুত। মাত্র এক সপ্তাহে পথে পথে, রাত গভীরে, উপজেলার বিভিন্ন হাটবাজারে যে অভূতপূর্ব মমতার নিদর্শন আপনারা দেখিয়েছেন-তাতে আমি বিমুগ্ধ এবং আমার পরিবার আজীবন কৃতজ্ঞতার বন্ধনে আবদ্ধ। এই ভালােবাসার প্রতিদান নেই, হতে পারে না। তথাপি এর উত্তরে আমার বার্তা হলো বিএনপি ছাড়া আমার কোনো রাজনৈতিক দল নেই, বিএনপি কর্মী হয়ে আপনাদের মনিকোঠায় সারাজীবন বেঁচে থাকতে চাই। এই আমার ব্রত, এই আমার তপস্যা।। আসন্ন সিলেট জেলা বিএনপির সম্মেলন গনতান্ত্রিক, সার্থক ও সফল করতে আমি সংশ্লিষ্ট সকলকে উদাত্ত আহ্বান জানাই।’ আরিফ আরও বলেন- ‘শহিদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের হাতে গড়া এ জমিনকে সবুজ করতে এখনো অক্লান্ত লড়াই করে যাচ্ছেন চলমান আন্দোলনের সর্বাধিনায়ক দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া। গণতান্ত্রিক এই আন্দোলনের ফসল তুলে সাদামাটা মানুষের হরণ করা ভোটের অধিকার ফিরিয়ে দিতে লড়াই চালিয়ে যাচ্ছেন আগামী দিনের রাষ্ট্রনায়ক দেশনায়ক তারেক রহমান। দেশে গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনতে সচেষ্ট থেকে আন্দোলন আরও শাণিত করতে হবে নব্বইয়ের মতো, তবেই ফিরে আসবেন দেশনায়ক তারেক রহমান এবং সেদিনের অর্পিত যে কোনো দায়িত্ব মাথায় তুলে জীবন উৎসর্গ করতে কুণ্ঠিত নই আমি।’



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: মেয়র আরিফ


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ