Inqilab Logo

শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ০৭ বৈশাখ ১৪৩১, ১০ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

কুষ্টিয়ায় পেঁয়াজের বাম্পার ফলন

কুষ্টিয়া থেকে স্টাফ রির্পোটার, | প্রকাশের সময় : ২৩ মার্চ, ২০২২, ৬:০৬ পিএম

কুষ্টিয়া জেলায় পেঁয়াজ চাষে বাম্পার ফলনের আশা করছে কৃষি বিভাগ। আবহাওয়া অনুকুলে থাকায় ২০২১-২২ অর্থবছরে কৃষি বিভাগের লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত হয়েছে। চলতি মৌসুমে পেঁয়াজ রোপনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছিল ১২হাজার ৯১০ হেক্টর জমি। সেখানে আবাদ হয়েছে ১২ হাজার ৪১৯ হেক্টর । চাষীরা মাঠ থেকে পেঁয়াজ তুলা এবং পেঁয়াজ পরিস্কার করে ঘরে তোলার জন্য ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন জেলার চাষিরা। কাকডাকা ভোর থেকে উঠে দিনব্যাপী পেঁয়াজ ক্ষেত থেকে পেঁয়াজ তোলা, বাড়িতে নিয়ে এসে পরিস্কার কাজে ব্যস্ত সময় পার করছে কৃষকরা।

গত বছরের চেয়ে কম দামে পেঁয়াজের বীজ ক্রয়, চারার মূল্য কম, আবহাওয়া অনুকুলে থাকায় চাষীরা এবার ব্যাপকহারে পেঁয়াজ রোপন করছে বলে কৃষকেরা জানান। তবে চলতি মৌসুমে শ্রমিকদের মজুরী বৃদ্ধি, তেলের মূল্য বেশী হওয়ায় সেচের মূল্য বৃদ্ধি এবং পেঁয়াজের মাটি প্রস্তুতে খরচ বেশী হওয়ায় চাষীরা হতাশার মধ্যে আছে।

পেঁয়াজ চাষীরা জানান, যে পরিমান খরচ হচ্ছে তাতে করে পেঁয়াজের মূল্য বাজারে কম হাওয়ায় তারা লাভের চেয়ে ক্ষতির সম্মখীন হচ্ছে বেশী বলে ক্ষোভ প্রকাশ করছে চাষীরা। তাই তাদের দাবি ভারত থেকে পেঁয়াজ আমদানী বন্ধ করার। তা না হলে লোকসান আরও বেড়ে যাবে।

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর কুষ্টিয়া সূত্রে জানা গেছে, চলতি মৌসুমে কুষ্টিয়া জেলায় তাহেরপুরী, বারী পেঁয়াজ-১, কিংসুপার ও মেটাল এই চার জাতের পেঁয়াজ কৃষকেরা রোপন করছে। চলতি মৌসুমে পেঁয়াজ রোপনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছিল ১২ হাজার ৯১০ হেক্টর জমি, সেখানে অর্জিত হয়েছে ১২ হাজার ৪১৯ হেক্টর জমি। এর মধ্যে পেঁয়াজ মুলকাটা ৩ হাজার ২৯৯ হেক্টর ও চারা রোপন পেঁয়াজ ৯ হাজার১২০ হেক্টর। কুষ্টিয়া সদর উপজেলায় ১ হাজার ৫৪০ হেক্টর, খোকসা উপজেলায় ৩ হাজার ২৭৭ হেক্টর, কুমারখালী উপজেলায় ৪ হাজার ২৫৫ হেক্টর, মিরপুর উপজেলায় ৩৭০ হেক্টর, ভেড়ামারা উপজেলায় ২৩৫ হেক্টর ও দৌলতপুর উপজেলায় ২ হাজার ৭৪২ হেক্টর। তবে কৃষকরা জানায় কৃষি অফিসের দেয়া তথ্যের চেয়ে মাঠ পয্যায় কৃষকের পেঁয়াজ বেশী রোপন হয়েছে।

উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নের বিভিন্ন মাঠ ঘুরে দেখা গেছে, চাষিরা দলবদ্ধভাবে শ্রমিক নিয়ে পেঁয়াজ তোলা কাজ করছেন।

কৃষকদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, পেঁয়াজের বীজ গেল বছর খোলা ৬ থেকে ১০ হাজার টাকায় বিক্রি হলেও এ বছর তা কমে বিক্রি হয়েছে ৩ থেকে ৪ হাজার টাকায়।

পেঁয়াজের চারা গত বছর ১৫০ থেকে ১৮০ টাকায় কেজী বিক্রি হলেও এবার বিক্রি হচ্ছে ১৫ থেকে ২০ টাকা কেজী। বীজ, চারা, সার, পরিচর্যাসহ এবার বিঘাপ্রতি পেঁয়াজ উৎপাদনে চাষিদের খরচ হবে ২৮ থেকে ৩২ হাজার টাকা। এ বছর বিদেশি কিংসুপার জাতীয় চারা রোপণ করা হয়েছে। এতে বিঘায় ৪৫ থেকে ৬০ মণ পেঁয়াজ উৎপন্ন হবে। যার বাজার মূল্য হবে ৪০ থেকে প্রায় ৮০ হাজার টাকা।
এ বিষয়ে কুষ্টিয়া শহরতলী বাড়াদী গ্রামের চাষি নরেশর আলী বলেন, ৩ বিঘা জমিতে পেঁয়াজ রোপণ করেছি। ফলনও ভালো হয়েছে। তবে খরচের চেয়ে পেঁয়াজ বিক্রি করে তেমন লাভ হচ্ছে না।

চাপড়া ইউনিয়নের চাষি মিজানুর বলেন,পেঁয়াজ চাষে খরচ কমেছে। এবার বিঘাপ্রতি খরচ হচ্ছে ২৫ থেকে ৩০ হাজার টাকা। দেড় বিঘা জমিতে পেঁয়াজের চারা রোপণ করেছিলাম। নিয়মিত পরিচর্যা করেছি। আশা করছি ফলন ভালো হবে।

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর কুষ্টিয়া জানায়, পেঁয়াজ চাষিদের অর্থকারী ফসলের মধ্যে অন্যতম। এ অঞ্চলের মাটি পেঁয়াজ চাষে উপযোগী। উপজেলার কৃষি কর্মকর্তারা সব সময় কৃষকদের পেঁয়াজ চাষে পরামর্শ দিয়ে আসছে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: পেঁয়াজ

১৩ এপ্রিল, ২০২২

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ