Inqilab Logo

বুধবার, ১৭ এপ্রিল ২০২৪, ০৪ বৈশাখ ১৪৩১, ০৭ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

নিরপেক্ষতার প্রস্তাব ইউক্রেনের হামলার তীব্রতা কমাবে রাশিয়া

তুরস্কে শান্তি আলোচনায় অগ্রগতি : পুতিন-জেলেনস্কি বৈঠকের সম্ভাবনা রাশিয়ার বিরুদ্ধে ‘সর্বাত্মক যুদ্ধ’ ঘোষণা করেছে যুক্তরাষ্ট্র : ল্যাভরভ মার্কিন-রাশিয়া সম্পর্কের ‘ফাটল’ কেন উদ্বেগজন

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ৩০ মার্চ, ২০২২, ১২:২৯ এএম

ইউক্রেন ও রাশিয়ার চলমান যুদ্ধ অবসানে তুরস্কে অনুষ্ঠিত শান্তি আলোচনায় অগ্রগতির ইঙ্গিত পাওয়া গেছে। গতকালের বৈঠকের আলোচনা বিষয়ে ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে, কিয়েভ ও চেরনিহিভে সামরিক অভিযান ব্যাপকভাবে কমানোর প্রতিশ্রুতি দিয়েছে রাশিয়া। আর হামলা থেকে সুরক্ষার আন্তর্জাতিক নিশ্চয়তা সাপেক্ষে নিরপেক্ষ অবস্থান নেওয়ার প্রস্তাব দিয়েছে ইউক্রেন। ইউক্রেনের প্রতিনিধি দলের সদস্যরা জানান, তারা নিরপেক্ষতার প্রস্তাব দিয়েছেন। এর আওতায় তারা কোনো জোট বা বিদেশি সেনাদের ঘাঁটি করতে দেবে না। কিন্তু ন্যাটোর ধারা-৪-এর মতো নিরাপত্তা নিশ্চয়তা চেয়েছে। ইউক্রেন জানিয়েছে, ইসরাইল এবং ন্যাটো সদস্য কানাডা, পোল্যান্ড ও তুরস্ক এমন নিশ্চয়তা প্রদানে সহযোগিতা করতে পারে। প্রস্তাবে রাশিয়ার বিচ্ছিন্ন করা ক্রিমিয়ার অবস্থা নিয়ে ১৫ বছর পরামর্শের সময় রাখা হবে। এটি পূর্ণাঙ্গ যুদ্ধবিরতি বাস্তবায়িত হলে কেবল কার্যকর হবে।
রাশিয়ার উপ-প্রতিরক্ষামন্ত্রী আলেক্সান্ডার ফোমিন জানান, সংলাপের শর্ত প্রস্তুত করতে ইউক্রেনের রাজধানী কিয়েভ ও চেরনিহিভে আক্রমণ কমিয়ে আনার সিদ্ধান্ত নিয়েছে রাশিয়া। শীর্ষ রুশ মধ্যস্থতাকারী ভøাদিমির মেডিনস্কি জানান, ইউক্রেনের প্রস্তাব তিনি পর্যালোচনা করবেন এবং রুশ প্রেসিডেন্ট ভøাদিমির পুতিনকে জানাবেন। ১০ মার্চের পর তুরস্কের ইস্তানবুলে গতকাল মঙ্গলবার ইউক্রেন ও রাশিয়ার প্রথম মুখোমুখি আলোচনা অনুষ্ঠিত হয়। ২৪ ফেব্রুয়ারি ইউক্রেনে আক্রমণ চালায় রাশিয়া।
ইউক্রেনের প্রস্তাবটির বিস্তারিত প্রকাশ করা হয়েছে। ইউক্রেনীয় মধ্যস্থতাকারী ওলেক্সান্ডার চালি বলেন, এগুলো আমাদের কাছে মৌলিক বিষয়। এগুলো মজবুত করা গেলে ইউক্রেন জোটনিরপেক্ষ ও পারমাণবিক শক্তিবিহীন রাষ্ট্র হিসেবে স্থায়ী নিরপেক্ষতা গ্রহণের অবস্থায় পৌঁছাবে। তিনি আরো বলেন, আমাদের ভূখণ্ডে বিদেশি সামরিক ঘাঁটি হবে না। একই সঙ্গে আমাদের মাটিতে বিদেশি সেনা মোতায়েন করা হবে না এবং আমরা কোনো সামরিক-রাজনৈতিক জোটের সদস্য হবো না। সামরিক মহড়া নিশ্চয়তাদানকারী রাষ্ট্রের অনুমতির ভিত্তিতে অনুষ্ঠিত হবে। ইউক্রেনীয় মধ্যস্থতাকারী জানান, তাদের প্রস্তাবে রুশ প্রেসিডেন্ট ভøাদিমির পুতিন ও ইউক্রেনীয় প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির মধ্যকার বৈঠক আয়োজনের মতো যথেষ্ট উপাদান রয়েছে।
ইস্তাম্বুলে শান্তি আলোচনার পর রাশিয়া ও ইউক্রেনের মধ্যে কিছু বিষয়ে ঐকমত্য হয়েছে বলে জানিয়েছেন তুরস্কের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মেভলুত কাভুসোগলু। প্রথম দিনের বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের সাথে কথা বলার সময় চাভুসোগলু রাশিয়া-ইউক্রেন শান্তি আলোচনাকে স্বাগত জানিয়ে বলেছেন, মঙ্গলবারের বৈঠকটি ‘আলোচনা শুরুর পর থেকে সবচেয়ে অর্থবহ অগ্রগতি’ হিসাবে চিহ্নিত হয়েছে। তিনি বলেন, ‘রাশিয়া-ইউক্রেন বৈঠক তুরস্কের প্রতি উভয় দেশের আস্থা প্রদর্শন করে’। তুর্কি পররাষ্ট্রমন্ত্রী উল্লেখ করেছেন যে, উভয় দেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের মধ্যে আরো উন্নত বিষয় নিয়ে আলোচনা হবে বলে আশা করা হচ্ছে এবং এর পরে দুই প্রেসিডেন্টের মধ্যে বৈঠক হবে। তিনি বলেছেন যে আলোচনার পর প্রতিটি পর্যায়ে রাশিয়ান এবং ইউক্রেনীয় পক্ষের মধ্যে ক্রমবর্ধমান সম্প্রীতি দেখে তিনি সন্তুষ্ট।
এর আগে তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রজব তাইয়্যেব এরদোগান জানান, ইউক্রেনীয় এবং রাশিয়ান প্রতিনিধিদের মধ্যে শান্তি আলোচনায় অগ্রগতি হয়ছে। এটি দুই দেশের প্রেসিডেন্ট পর্যায়ে বৈঠকের পথ প্রশস্ত করতে পারে। তিনি বলেন যে, তুরস্ক রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভøাদিমির পুতিন এবং ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির মধ্যে একটি বৈঠকের আয়োজন করতে পেরে খুশি হবে, যাকে তিনি উল্লেখ করেন ‘মূল্যবান বন্ধু’ বলে। তিনি বলেন, ‘আমরা আশা করি, বৈঠকগুলো উভয় দেশ ও অঞ্চলের জন্য উপকারী হবে, কারণ তুরস্ক এই সঙ্ঘাত নিয়ে গভীরভাবে চিন্তিত।’ এরদোগান বলেন, রাশিয়া ও ইউক্রেনের মধ্যকার আলোচনা প্রক্রিয়া শান্তির আশা বাড়িয়েছে এবং যত তাড়াতাড়ি সম্ভব যুদ্ধবিরতি নিশ্চিত করা সব পক্ষকে উপকৃত করবে। তিনি উভয় পক্ষের প্রতিনিধিদলকে মহান প্রচেষ্টা চালানোর জন্য অভিনন্দন জানান এবং বলেন যে, তাদের ট্র্যাজেডি শেষ করার অধিকার রয়েছে, যা হাজার হাজার ইউক্রেনীয়কে হত্যা করেছে এবং শহরগুলো ধ্বংস করেছে।
তুরস্ক উভয় পক্ষের অধিকারের উপর জোর দেয় এমন একটি ন্যায্য অবস্থান প্রদর্শন করছে বলে জোর দিয়ে এরদোগান বলেন, আলোচনার ফলাফল তৈরি করার সময় এসেছে। তিনি আরও উল্লেখ করেছেন যে, তুরস্ক এই অঞ্চলে শান্তি ও স্থিতিশীলতার দায়িত্ব নিতে দ্বিধা করেনি। ‘আমরা বিশ্বাস করি যে, একটি ন্যায্য শান্তি চুক্তিতে কেউ হেরে যাবে না,’ তিনি বলেন, ‘বিশ্ব ইস্তাম্বুল থেকে সুসংবাদের জন্য অপেক্ষা করছে।’
এদিকে, রাশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই ল্যাভরভ শুক্রবার বলেছেন যে, ইউক্রেনে আগ্রাসনের জন্য মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং অন্যান্য পশ্চিমা দেশগুলো রাশিয়ার বিরুদ্ধে ‘টোটাল ওয়ারফেয়ার’ বা ‘সর্বাত্মক যুদ্ধ’ ঘোষণা করেছে। তিনি বলেন, ‘এটি একটি সত্যিকারের হাইব্রিড যুদ্ধ, আমাদের বিরুদ্ধে সম্পূর্ণ যুদ্ধ ঘোষণা করা হয়েছিল।’
হাইব্রিড যুদ্ধ বলতে প্রতিপক্ষকে আক্রমণ করার জন্য প্রচলিত এবং অপ্রচলিত উভয় উপায়ের ব্যবহার বোঝায়, উদাহরণস্বরূপ ক্ষেপণাস্ত্র এবং আর্টিলারির মতো প্রথাগত অস্ত্র দিয়ে প্রতিপক্ষকে আক্রমণ করার পাশাপাশি প্রতিপক্ষের যোগাযোগ ব্যবস্থা হ্যাক করা। টোটাল ওয়ারফেয়ার বলতে এমন যুদ্ধকে বোঝায় যা একটি প্রতিপক্ষ রাষ্ট্রের সম্পূর্ণতাকে, এর বেসামরিক জনসংখ্যা সহ, সামরিক পদক্ষেপের বৈধ লক্ষ্য হিসাবে বিবেচনা করে।
লাভরভ বলেন, পশ্চিমাদের দ্বারা ঘোষিত এই ‘সর্বাত্মক যুদ্ধের’ লক্ষ্য হল ‘রাশিয়ার অর্থনীতি এবং সমগ্র রাশিয়াকে ধ্বংস করা, ভেঙে ফেলা, ধ্বংস করা, শ্বাসরোধ করা।’ ল্যাভরভের মন্তব্যে উদ্বেগ জাগিয়েছে রাশিয়া যদি মনে করে যে, তার উপর হুমকি সৃষ্টি করা হচ্ছে, তাহলে তারা মরিয়া হয়ে উঠতে পারে। ল্যাভরভ এবং অন্যান্য রুশ কর্মকর্তারা পূর্বে সতর্ক করেছেন যে, রাশিয়া ইউক্রেনে অস্ত্রের সন্দেহভাজন চালানকে তার বাহিনীর আক্রমণের জন্য বৈধ লক্ষ্য হিসাবে বিবেচনা করবে।
এখন অবধি, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং উত্তর আটলান্টিক চুক্তি সংস্থার (ন্যাটো) অন্যান্য দেশগুলো রাশিয়ান বাহিনীর আক্রমণের বিরুদ্ধে ব্যবহার করার জন্য শত শত টন ম্যান-পোর্টেবল অ্যান্টি-ট্যাঙ্ক এবং অ্যান্টি-এয়ারক্রাফ্ট মিসাইল লঞ্চারসহ ইউক্রেনকে অস্ত্র সরবরাহ করেছে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং অন্যান্য দেশগুলো রাশিয়ান ব্যাংক এবং কর্মকর্তাদের লক্ষ্য করে বিভিন্ন নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে। ইউক্রেনের সামরিক বাহিনীর প্রতি পশ্চিমা নিষেধাজ্ঞা এবং সমর্থনের পরিসর সত্ত্বেও, ল্যাভরভ বলেন, ‘বিশ্বে আমাদের অনেক বন্ধু, মিত্র, অংশীদার, বিপুল সংখ্যক সংস্থা রয়েছে যেখানে রাশিয়া সমস্ত মহাদেশের দেশগুলোর সাথে কাজ করছে এবং আমরা তা চালিয়ে যাব।’
মার্কিন-রাশিয়া সম্পর্কের ‘ফাটল’ কেন উদ্বেগজনক : রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভøাদিমির পুতিন ‘ক্ষমতায় থাকতে পারবেন না’ বলে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের সাম্প্রতিক মন্তব্যটি ইউক্রেনের ক্রমাগত আক্রমণের মধ্যে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং রাশিয়ার মধ্যে সম্পর্ক কতটা নিচে নেমে গেছে তার সর্বশেষ উদাহরণ। যদিও হোয়াইট হাউসের কর্মকর্তারা এবং সেক্রেটারি অফ স্টেট অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন দ্রুত স্পষ্ট করতে গিয়েছিলেন যে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র রাশিয়ায় ‘শাসন পরিবর্তনের’ পক্ষে নয়। তবে বাইডেন সম্প্রতি পুতিনকে ‘কসাই’ এবং ‘যুদ্ধাপরাধী’ বলে অভিহিত করেছেন, যা ক্রেমলিনকে সতর্ক করতে প্ররোচিত করেছে। এর ফলে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক ‘বিচ্ছেদের’ কাছাকাছি চলে গেছে।
বিশ্লেষকরা বলছেন যে, এর প্রভাবগুলো ইউক্রেনের সম্ভাব্য যুদ্ধবিরতি বা শান্তি আলোচনার বাইরে বিশেষত ইরানের পারমাণবিক আলোচনা সহ মার্কিন-রাশিয়ান কূটনীতির অন্যান্য ক্ষেত্রে আরও ভালভাবে ছড়িয়ে পড়তে পারে। ওয়াশিংটন-ভিত্তিক অ্যাডভোকেসি গ্রুপ, আর্মস কন্ট্রোল অ্যাসোসিয়েশনের নির্বাহী পরিচালক ড্যারিল কিমবল বলেছেন, মস্কো একটি চুক্তির সাথে যাবে কি না নিশ্চিত নয়। তারা এখন ইউক্রেনে অভিযান ওয়াশিংটনের সাথে প্রক্সি যুদ্ধ হিসাবে দেখে। তিনি আল জাজিরাকে বলেছেন, ‘আমরা এখন এমন একটি পরিস্থিতিতে আছি যেখানে সম্পর্ক একেবারে তলানীতে। রাশিয়া এমন একটি বোঝাপড়াকে আটকানোর চেষ্টা করতে পারে যা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং ইরানকে সম্মতিতে ফিরিয়ে আনে।’ সূত্র : ডেইলি সাবাহ, এপি, আল-জাজিরা।



 

Show all comments
  • Shohag Dewan ৩০ মার্চ, ২০২২, ২:৪৭ এএম says : 0
    ইউক্রেন এখন রাজি হয়েছে জোট নিরপেক্ষ থাকার।অথচ একটা মাস আগে এই দাবীটা মানলে যুদ্ধটা শুরুই হতো না।
    Total Reply(0) Reply
  • Salah Uddin ৩০ মার্চ, ২০২২, ২:৪৯ এএম says : 0
    জেলেনেস্কির ১০০% ওয়ার্লড ডোকুমেন্ট লিখিত কমিটমেন্ট ছাড়া যুদ্ধ বন্ধে লাগাম না টানাই ব্যাটার।
    Total Reply(0) Reply
  • তাজউদ্দীন আহমদ ৩০ মার্চ, ২০২২, ২:৪৯ এএম says : 0
    রাশিয়ার এই নমনীয়তা মূলত তার দীর্ঘদিনের মিত্র তুরষ্ককে সম্মান জানাতে দেখিয়েছে। মূলত রাশিয়া নিজেদের মতো ঠিকই প্রতিদিন অগ্রসর হচ্ছে, তার টার্গেটেড অতি গুরুত্বপূর্ণ বন্দর শহর ও পূর্বাঞ্চলীয় স্বাধীনতাকমী অঞ্চলগুলো ঘিরে
    Total Reply(0) Reply
  • Masud Rahman ৩০ মার্চ, ২০২২, ২:৫০ এএম says : 0
    যাক অবশেষে ভালো... বিশ্বের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ সংবাদ।
    Total Reply(0) Reply
  • عبدالله المامون ৩০ মার্চ, ২০২২, ২:৫০ এএম says : 0
    এই যুদ্ধ বন্ধ হলে আমাদের দেশের সয়াবিন তেলের ব্যাবসার কি হবে?
    Total Reply(0) Reply
  • আবদুর রহমান ৩০ মার্চ, ২০২২, ১:৪৬ এএম says : 0
    অনতিবিলম্বে যুদ্ধ বন্ধ হওয়া দরকার
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ