Inqilab Logo

শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

সিরিয়ায় সউদি-তুর্কি যৌথ হামলার আশঙ্কা

হামলার প্রস্তুতি তুরস্কের ইনসিরলিক ঘাঁটিতে স্থলসেনা ও জঙ্গি বিমান মোতায়েন করছে রিয়াদ

প্রকাশের সময় : ১৫ ফেব্রুয়ারি, ২০১৬, ১২:০০ এএম

ইনকিলাব ডেস্ক : সউদি আরবের পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেছেন, সিরিয়ার রাজনৈতিক প্রক্রিয়া ব্যর্থ হলে জোরপূর্বক প্রেসিডেন্ট বাশার আল আসাদকে ক্ষমতা থেকে সরিয়ে দেয়া হবে। গত শনিবার জার্মানির মিউনিখে সিএনএন’র ক্রিস্টিনা আমানপোরকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে সউদি পররাষ্ট্রমন্ত্রী আদেল আল জুবায়ের এ মন্তব্য করেছেন। তিনি বলেন, আমি বিশ্বাস করি বাশার আল আসাদ এখন দুর্বল হয়ে পড়েছে এবং তাকে ক্ষমতাচ্যুত করার এখনই সময়। তিনি এমন এক সময়ে এ কথা বললেন যখন সিরিয়ায় সেনা পাঠাতে শুরু করেছে রিয়াদ। সিরিয়াতে স্থল অভিযান চালানোর লক্ষ্যে তুরস্কের ইনসিরলিক সেনাঘাঁটিতে সৈন্য পাঠাতে শুরু করেছে সউদি আরব। সেই সঙ্গে ওই বিমানঘাঁটিতে জড়ো করা হচ্ছে সউদি আরবের জঙ্গি বিমানও। সউদি আরব এবং তুরস্ক যৌথভাবে তুর্কি ভূখ- থেকে সিরিয়াতে স্থল হামলার পরিকল্পনা করছে। 

সউদি পররাষ্ট্রমন্ত্রী দৃঢ়তার সঙ্গে বলেন, বাশার আল আসাদকে ক্ষমতা ছাড়তেই হবে। এ ব্যাপারে কোনো সন্দেহ নেই। হয় তিনি রাজনৈতিক প্রক্রিয়ায় ক্ষমতা ছাড়বেন নইলে তাকে জোর করে তাড়াতে হবে। তিনি বলেন, আমরা এটি নিশ্চিত করতে চাই যে, রাজনৈতিক প্রক্রিয়ার মধ্যেই তার পতন ঘটবে। রাজনৈতিক প্রক্রিয়া ব্যর্থ হলে শুরু হবে শক্তির প্রয়োগ। বাশার আল আসাদকে ক্ষমতা থেকে সরে যাওয়া ছাড়া কোনো বিকল্প নেই বলেও তিনি উল্লেখ করেছেন।
অপর এক খবরে বলা হয়, তুরস্কের বিমান ঘাঁটিতে জঙ্গি বিমান মোতায়েন করছে সউদি আরব। এরপরই হয়তো সউদি আরব আর তুরস্ক সিরিয়ায় ইসলামিক স্টেটের বিরুদ্ধে স্থল অভিযান শুরু করতে পারে। তুরস্কের পররাষ্ট্রমন্ত্রী গত শনিবার এ তথ্য জানিয়েছেন। আইএসের বিরুদ্ধে কৌশল ঠিক হলে তুরস্ক ও সউদি আরব স্থল অভিযান শুরু করতে পারে, মিউনিখে নিরাপত্তা সম্মেলনে বলছিলেন মেভলুত কাভুসোগ্লু। তিনি বলেন, সউদি আরব তুরস্কের ইনসিরলিক বিমান ঘাঁটিতে জঙ্গি বিমান পাঠাচ্ছে। সউদি কর্মকর্তারা বিমান ঘাঁটিটি পরিদর্শন করেছেন। তবে মেভলুত জানান, সউদি আরব কতটি জঙ্গি বিমান পাঠাবে তা এখনো ঠিক হয়নি। মিশরে ইসলামপন্থীদের ক্ষমতাচ্যুত করে সামরিক বাহিনীর ক্ষমতা দখলকে কেন্দ্র মুসলিম বিশ্বের প্রভাবশালী দুটি দেশ সউদি আরব ও তুরস্কের মধ্যে সম্পর্কের টানাপড়েন তৈরি হলেও সাম্প্রতিক সময়ে রিয়াদ ও আঙ্কারার মধ্যে ঘনিষ্ঠতা বেড়েছে। আইএসের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে ইনসিরলিক বিমান ঘাঁটি কেন্দ্রীয় ভূমিকা পালন করছে। যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য ও ফ্রান্স এই ঘাঁটি ব্যবহার করে সিরিয়ায় হামলা চালাচ্ছে। মেভলুত বলেন, প্রয়োজন মনে করলে সউদি আরব সেনাও পাঠাতে পারে। সিরিয়ায় সন্ত্রাসবাদ দমনে সউদি আরব দৃঢ় প্রতিজ্ঞ। সউদি আরব ও তুরস্ক মনে করে সিরিয়ায় পাঁচ বছর ধরে চলা যুদ্ধের অবসানের জন্য স্বৈরশাসক বাশার আল-আসাদের পতন অপরিহার্য। তবে ইরান ও রাশিয়া আসাদকে টিকিয়ে রাখতে মরিয়া। তুরস্ক সীমান্ত দিয়ে সিরিয়ায় সউদি সেনা ঢুকবে কিনা জানতে চাইলে মেভলুত বলেন, এ ধরনের কোনো পরিকল্পনা নেই। তবে প্রয়োজন মনে করলে স্থল অভিযানে সেনা পাঠাবে রিয়াদ। এদিকে ইস্তাম্বুলে তুরস্কের আরেক ঘনিষ্ঠ মিত্র কাতারের আমির শেখ তামিম বিন হামাদ আল-থানির সাথে কয়েক ঘণ্টাব্যাপী বৈঠক করেছেন তুর্কি প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েব এরদোগান। তবে বৈঠকের বিষয়বস্তু গোপন রাখা হয়েছে। এদিকে ফ্রান্সের প্রধানমন্ত্রী ম্যানুয়েল ভালস রাশিয়াকে সিরিয়ার বেসামরিক মানুষের উপর বোমা হামলা বন্ধ করার আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি বলেন, শান্তি আনার চাবিকাঠি হল বেসামরিক মানুষদের উপর বোমা হামলা বন্ধ করা। জবাবে রাশিয়ার প্রধানমন্ত্রী দিমিত্রি মেদভেদেভ বলেন, সিরিয়ার বেসামরিক মানুষের উপর আমাদের বোমা হামলার প্রমাণ কারো কাছে নেই। তারপরও সবাই আমাদের দিকে অভিযোগের আঙুল তুলছে। সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট আসাদের পক্ষে গত বছর সেপ্টেম্বর থেকে রাশিয়া সেখানে বোমা হামলা শুরু করে। অন্যদিকে সউদি আরব ও তুরস্ক রাজনৈতিকভাবে আসাদ বিরোধী। দেশ দুইটি সিরিয়ার বেশ কয়েকটি বিদ্রোহী দলকে অস্ত্রের যোগানও দিচ্ছে। এখন নতুন করে সম্মুখ যুদ্ধে সেনা পাঠানোর সউদি আরবের প্রস্তাব আরও একটি বিশ্ব যুদ্ধ উসকে দিতে পরে বলে সতর্ক করেছেন রাশিয়ার প্রধানমন্ত্রী মেদভেদেভ। তবে যুক্তরাষ্ট্র, পশ্চিমা দেশ এবং আরব দেশগুলোর দাবি রাশিয়া আইএস দমনের নামে আসলে আসাদের পক্ষে বিদ্রোহীদের উপর হামলা চালাচ্ছে। ইরানও আসাদকে সাহায্য করছে বলে অভিযোগ করা হচ্ছে। সম্প্রতি জাতিসংঘের উদ্যোগে সিরিয়ায় গৃহযুদ্ধ অবসানে শান্তি আলোচনা শুরু হয়েছিল। কিন্তু বিদ্রোহী নিয়ন্ত্রিত আলেপ্পোতে আসাদ বাহিনী অভিযান শুরু করলে ওই আলোচনা স্থগিত হয়ে যায়। রয়টার্স, বিবিসি, আল-জাজিরা।

 



 

Show all comments
  • Tarek Aziz ১৫ ফেব্রুয়ারি, ২০১৬, ৮:৫৩ এএম says : 0
    Jaw agiye sawdi Allah acen apnader sate
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: সিরিয়ায় সউদি-তুর্কি যৌথ হামলার আশঙ্কা
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ