Inqilab Logo

শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ০৭ বৈশাখ ১৪৩১, ১০ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

টেনিসেও ফিক্সিংয়ের কালো ছায়া!

প্রকাশের সময় : ১৯ জানুয়ারি, ২০১৬, ১২:০০ এএম

স্পোর্টস ডেস্ক : ভদ্রলোকের খেলা হিসেবে বিশ্বজোড়া পরিচিত ক্রিকেট। পাতানো খেলার বিষবৃক্ষ শেকড় ছড়িয়েছিল সেখান থেকেই। ক্রীড়াঙ্গনের ভয়াবহ অন্ধকার জগতের খোঁজ মিলেছিল এখান থেকেই। এর পর ওলটপালট হলো ফুটবলেও। যেকোনো খেলার মূল রোমাঞ্চ এখানে, এর ফল কী হবে কেউ জানে না। অথচ আগে থেকেই ঠিক হয়ে রাখা হলো সেই খেলার ফল! এবার জানা গেল, সত্যিকারের ভদ্রলোকের খেলা টেনিসেও আছে ম্যাচ পাতানোর ভয়াবহ, দগদগে এক ক্ষত!
বছরের প্রথম গ্যান্ড ¯ø্যাম অস্ট্রেলীয় ওপেন শুরুর লগ্নেই বিবিসি ও বাজফিডে প্রকাশিত এমন এক খবর হইচই ফেলে দিয়েছে টেনিস দুনিয়ায়। বার্তা সংস্থা রয়টার্সও বলছে, টেনিসের বিশ্ব র‌্যাঙ্কিংয়ের প্রথম ৫০-এর মধ্যে থাকা ১৬ জন টেনিস তারকা পাতানো খেলার সঙ্গে জড়িত। এর মধ্যে আছেন টেনিসের শীর্ষ টুর্নামেন্ট গ্র্যান্ড সø্যামজয়ীরাও! সবচেয়ে বিস্ফোরক তথ্য হলো, টেনিসের সবচেয়ে ঐতিহ্যবাহী ও গৌরবের টুর্নামেন্ট উইম্বলডনেও ম্যাচ পাতানো হয়েছে!
সংস্থাগুলোর দাবি, পুরুষ টেনিসের পেশাদার সংগঠন এটিপির একটি তদন্ত প্রতিবেদন তাদের হাতে এসেছে। ২০০৭ সালে গঠিত সেই তদন্ত কমিটির প্রতিবেদনে বিশ্ব টেনিসের সর্বোচ্চ পর্যায়ের দুর্নীতি ও খেলোয়াড়দের ম্যাচ পাতানোর অনেক তথ্য প্রমাণই আছে। যেখানে বলা হয়েছে, ২০০৭ সালে এটিপি গঠিত তদন্ত কমিটি বিভিন্ন বিষয়ে তথ্যানুসন্ধান করে যে প্রতিবেদনটি প্রকাশ করেছিল, তাতে রাশিয়া, ইতালি ও সিসিলিতে বেটিং (বাজিকর) সিন্ডিকেটের সন্ধান পাওয়ার কথা বলা হয়েছে। তদন্ত প্রতিবেদনে সন্দেহ করা হয়েছে, সেই বেটিং সিন্ডিকেট টেনিস খেলাকে কেন্দ্র করে কোটি কোটি ডলারের ব্যবসায় ফেঁদে বসেছে। বিবিসির সেই খবরে বলা হয়, গত এক দশকে র‌্যাঙ্কিংয়ের শীর্ষ ৫০ জনের মধ্যে থাকা ১৬ জন খেলোয়াড়ের সন্দেহজনক গতিবিধির ব্যাপারে বেশ কয়েকবারই জানানো হয়েছে টেনিসের দুর্নীতি দমন সংস্থা-টেনিস ইনটিগ্রিটি ইউনিটকে (টিআইইউ)। কিন্তু টিআইইউ হয় এ ব্যাপারে সঠিকভাবে তদন্ত চালাতে ব্যর্থ হয়েছে, অথবা তারা এই ১৬ খেলোয়াড়ের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করেনি।
সন্দেহভাজন এই তারকাদের মধ্যে গ্র্যান্ড ¯ø্যাম বিজয়ী তারকাও আছে বলে দাবি করেছে বিবিসি ও বাজফিড। তবে তারা বলেছে, ব্যাংক হিসাব, ফোন ও কম্পিউটার অনুসন্ধান ছাড়া এই ১৬ খেলোয়াড়ের নাম প্রকাশ করা সম্ভব নয়। এতে করে এর মধ্যে কেউ নিরপরাধ হলে তিনিও মানুষের সন্দেহের দৃষ্টিতে পড়ে যাবে।
আগুনে ঘি ঢাললেন বিশ্বের এক নম্বর নোভাক জকোভিচ। তাকেও ম্যাচ গড়াপেটার প্রস্তাব দেয়া হয়েছিল বলে জানালেন তিনি। মেলবোর্ন পার্কে প্রথম ম্যাচ জয়ের পর সংবাদ সম্মেলনে ১০ট গ্র্যান্ড সø্যামের মালিক জোকার বলেন, ‘আমাকে সরারসরি কেউ ম্যাচ গড়াপেটার প্রস্তাব দেয়নি। কিন্তু আমার টিমে যারা কাজ করে তাদের মারফত আমার কানে আসে। ম্যাচ ফিক্সিংয়ের জন্য প্রায় এক লাখ পাউন্ডের প্রস্তাব দেয়া হয়েছিল। আমি শুনেই চমকে গিয়েছিলাম। আমার কাছে এটা জঘন্ন অপরাধ। আমার কাছে স্পোর্টসে এর কোনও স্থান নেই।’ এ ব্যাপারে ২১টি গ্র্যান্ড সø্যাম জয়ী সেরেনা উইলিয়ামসের দাবি, ‘আমি এ ব্যাপারে কখনও কিছু শুনিনি।’
টিআইইউ ও এটিপি অবশ্য টেনিসের দুর্নীতির তদন্তে নিজেদের ব্যর্থতার বিষয়টি প্রত্যাখ্যান করেছে। এটিপি প্রধান ক্রিস কারমোড বলেছেন, ‘আমরা কোনোভাবেই দুর্নীতিকে হালকাভাবে নিই না। ম্যাচ ফিক্সিংয়ের প্রমাণ চেপে যাওয়া হয়েছে, এমন অভিযোগ সত্যি নয়।’ ২০০৯ সালে এটিপি টেনিসে একটি নতুন দুর্নীতি-বিরোধী নীতিমালা প্রণয়ন করে। সেখানে পুরোনো অভিযোগগুলোর বিষয়ে নতুন করে তদন্ত করার ব্যাপারে নীতিগত একটা সিদ্ধান্ত নিয়েছিল তারা। কিন্তু এত আগে তদন্ত করা হলেও এ ব্যাপারটি না জানিয়ে কেন উল্টো চেপে যাওয়া হলো, এ নিয়ে দেখা দিয়েছে প্রশ্ন।

 



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: টেনিসেও ফিক্সিংয়ের কালো ছায়া!
আরও পড়ুন
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ