Inqilab Logo

শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

সোনারগাঁয়ের রসালো লিচু এখন বাজারে

মোক্তার হোসেন মোল্লা, নারায়ণগঞ্জ থেকে | প্রকাশের সময় : ৯ মে, ২০২২, ১২:০১ এএম

সোনারগাঁয়ের রসালো লিচু বাজারে আসতে শুরু করেছে। এবছর খরা ও ঝড়-বৃষ্টি তেমন না থাকায় লিচুর ফলন ভালো হয়েছে তাছাড়া এবার করোনা প্রাদুর্ভাব না থাকায় লিচু বাগানী ও ব্যবসায়ীরা লিচু বিক্রি করে লাভবান হবেন বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা। সোনারগাঁয়ের লিচু বাজারে আগাম আসে বলে দেশের অন্যান্য অঞ্চলের লিচুর তুলনায় সোনারগাঁয়ে লিচুর কদর অনেক বেশি। বিভিন্ন লিচু বাগান ঘুরে দেখে যায়, এখন বাগানের প্রতিটি গাছে থোকায় থোকায় লিচু ঝুলছে। ঝাঁকড়া গাছের ডালে ডালে ঝুলন্ত লাল টকটকে রঙের ছোট এই ফলের গুচ্ছ দেখতে বেশ মনোরম। স্থানীয় ব্যবসায়ীরা রাত জেগে পাহারা দিচ্ছেন বাগান। বাদুড় ও কাকের উপদ্রপ থেকে বাঁচাতে তারা গাছের চূড়ায় ইলেক্সটিক বাতি, পলিথিন কাগজ, বাস ও টিনের তৈরি বিভিন্ন ধরনের বাজনা (ঠাঠা) লাগিয়ে বাগান পাহারা দিয়ে আসছেন।
সোনারগাঁ উপজেলা কৃষি অফিসের তথ্য মতে, সোনারগাঁ পৌরসভার, বৈদ্যেরবাজার, মোগরাপাড়া, বারদী, সনমান্দি ও সাদিপুর ইউনিয়নের বিভিন্ন স্থানে লিচু বাগান রয়েছে। তবে পৌরসভার সরদার বাড়ী, বাংলাদেশ লোক ও কারুশিল্প ফাউন্ডেশন, দুলালপুর, বাড়ী মজলিশ, দীঘিরপাড়, পানাম, অর্জুন্দি, বাগমুছা, দত্তপাড়া, গোবিন্দপুর, হাতকোপা, দরপত, ছাপেরবন্ধ, গোয়ালদী, টিপরদী, হরিষপুর, ইছাপাড়া, চিলারবাগ, কৃষ্ণপুরা, হাঁড়িয়া, পানাম গাবতলী, ষোলপাড়া ও ভট্টপুর এলাকায় উৎকৃষ্টমানের লিচুর চাষ হয়।
লিচু চাষিরা জানায়, সোনারগাঁয়ে বর্তমানে কদমী, মোজাফফরপুরী, চায়না-৩, এলাচি ও পাতি এই পাঁচ ধরনের লিচুর চাষ হয়ে থাকে। তবে কদমী লিচু চাষের প্রতি চাষিরা মনোযোগী বেশি। প্রতি বছর এক একটি বাগান তিন চার লাখ টাকায় বিক্রি হয়। তাই কোথাও একটু খালি জায়গা পেলেই চাষিরা সেখানে কদমী লিচুর গাছ লাগায় বা বাগান তৈরি করে। আগে সাধারণত শৌখিনতার বসে বাড়ির আশপাশে লিচু গাছ লাগানো হতো। এখন তা বাণিজ্যিকভাবে নিচু জমি ভরাট করে লিচু বাগান তৈরি করা হচ্ছে। বাড়ির আঙিনায় ও কৃষি জমির পাশেও লিচুর চাষ করছেন অনেকেই। লিচুর মধ্যে সবার আগে বাদামি (পাতি) লিচু পাকে। এরপর পর্যায়ক্রমে অন্যান্য লিচু পাকতে শুরু করে। স্বাদে ও রসে পাতির লিচুর কদর রয়েছে বেশ। সোনারগাঁয়ে ছোটবড় মিলিয়ে তিন শতাধিক লিচুর বাগান রয়েছে। এসব বাগানের বেশির ভাগেই কদমী লিচুর চাষ হয়।
লিচু বাগান মালিক কবির জানান, সোনারগাঁয়ে বিভিন্ন প্রজাতির লিচুর চাষ হলেও কদমী লিচুর চাষে অধিক মুনাফা পাওয়া যায়। দিঘীরপাড় এলাকার লিচু ব্যবসায়ী রাসেল জানান, আমরা লিচুর ফলন না দেখেই বাগান মালিকের কাছ থেকে ক্রয় করে থাকি। লিচু ব্যবসায়ীরা ভাগ্যের ওপর নির্ভর করে লিচু ব্যবসা করে।
সোনারগাঁ পৌরসভার দরপত এলাকার লিচুর বাগান মালিক পনির জানান, আমার ৩০ শতাংশ জমিতে ২৭টি লিচুর গাছ। অন্যান্য বছরের তুলনায় এ বছর ভালো ফলন হয়েছে।
স্থানীয়রা জানায়, অন্যান্য এলাকার লিচুর চেয়ে সোনারগাঁয়ের লিচু আকারে বড় ও সুস্বাদু হওয়ায় এ লিচুর চাহিদা বেশি। লিচু ব্যবসায়ীরা জানান, বর্তমানে বাজারে পুরোপুরিভাবে পাতি লিচু নেমেছে। রাজধানী ঢাকা ছাড়াও বিভিন্ন জেলায় এখানকার লিচু নিয়ে যাচ্ছেন পাইকারী ব্যবসায়ীরা। এখন প্রতি হাজার পাতি লিচু বিক্রি হচ্ছে ৩শ’ টাকায় আর কদমী লিচু বিক্রি হচ্ছে প্রতি হাজার সাড়ে চার হাজার টাকা থেকে পাঁচ হাজার টাকায়।
সোনারগাঁ উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মনিরা আক্তার জানান, এ বছর সোনারগাঁয়ের লিচুর ফলন বেশ ভাল হয়েছে। আশা করা যায় লিচুর বাগান মালিক ও মৌসুমী ব্যবসায়ীরা এবার বেশ লাভবান হবে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: লিচু

১২ জুন, ২০২০

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ