Inqilab Logo

শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৬ বৈশাখ ১৪৩১, ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

আদালত ও পুলিশের শরণাপন্ন হয়েও প্রতিকার মিলছে না ভূমিদস্যুদের অত্যাচারে অতিষ্ঠ ডেমরার বাসিন্দারা

প্রকাশের সময় : ১৭ নভেম্বর, ২০১৬, ১২:০০ এএম

স্টাফ রিপোর্টার : রাজধানীর ডেমরা থানা এলাকায় ভূমিদস্যুদের অত্যাচারে অতিষ্ঠ অনেকেই। আদালত ও পুলিশের শরণাপন্ন হয়েও পরিত্রাণ মিলছে না ভুক্তভোগীদের। তাদের অভিযোগ, সরকারি দলের কতিপয় নেতা নামধারীরা সংঘবদ্ধ হয়ে সরকারি খাস জমিসহ মানুষের জমিজমা দখল করে চলেছে। 

ডেমরা থানা এলাকায় বহু খাস জমি ইতোমধ্যেই দখল করে নিয়েছে সংঘবদ্ধ একাধিক চক্র। ডেমরার কোনাপাড়া, দেইল্যা, মাতুয়াইল, মুসলিমনগর, বাঁশেরপুল, স্টাফরোড, মুরগিফার্মসহ বিভিন্ন এলাকার বহু জমি ইতোমধ্যে বেদখল হয়ে গেছে। এখন চলছে নিরীহ মানুষের বাড়িঘরের জায়গাসহ খালি জমি দখলের চেষ্টা। ভুক্তভোগীদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, সংঘবদ্ধ দখলদাররা প্রথমে নিরীহ মানুষের জমি টার্গেট করে। এরপর ওই জমির জাল দলিল তৈরি করে হঠাৎ করে একদিন সেখানে স্কুল বা কোনো প্রতিষ্ঠানের সাইনবোর্ড লাগায়। মালিকের প্রতিক্রিয়া পর্যবেক্ষণ করে একদিন দলেবলে হাজির হয়ে জমি দখল করে নেয়। এ বিষয়ে থানা পুলিশের শরণাপন্ন হলেও কোনো প্রতিকার মেলে না বলে জানান কয়েকজন ভুক্তভোগী। তাদের ভাষায়, দখলদাররা নিজেদের এমপির লোক বলে পরিচয় দেয়। একথা শুনেই পুলিশ নীরব হয়ে যায়। ডেমরা ডগাইর নতুনপাড়া এলাকার ভুক্তভোগী মরণ ম-লের সাড়ে ৫ কাঠা জমিতে এভাবেই ব্র্যাক স্কুলের সাইনবোর্ড লাগিয়েছে একটি সংঘবদ্ধ চক্র। একই মালিকের জমিতে ইসলামিক ফাউন্ডেশনের সাইনবোর্ডও লাগানো হয়। এ বিষয়ে মরণ ম-ল চলতি বছরের ৩০ জুলাই ডেমরা থানায় একটি জিডি (নং- ১২৪২) করেন। তাতে তিনি উল্লেখ করেছেন, ঢাকা মহানগর জরিপ মোতাবেক ১১৯২৪ নং খতিয়ানে ৫৬৯ নং দাগে মোট ৫৬০ অযুতাংশ জমির মালিক তিনি। নিজ জমিতে নির্মাণকাজ করতে গেলে গত ১০ জুলাই এবায়দুল ইসলাম, নুরুল ইসলাম, ফজলুল হকসহ আরো কিছু অজ্ঞাত লোকজন এসে সম্পত্তিটি তাদের নিজের বলে দাবি করে কাজ বন্ধ করে দেয়। পরবর্তীতে জমির কাগজপত্রসহ এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তির সাথে আপস- মীমাংসার কথা বলে তারা আর মীমাংসায় বসেনি। মরণ ম-ল গত ৫ নভেম্বর ডেমরা থানায় আরেকটি জিডি (নং-২১৬) করেন। তাতে তিনি অভিযোগ করেন, আব্দুল মান্নান ও হায়দার আলী মোল্লা নামে দুই ব্যক্তি একইভাবে তার জমি নিজেদের বলে দাবি করে। একই সাথে জমিটি দখলে নেয়ার জন্য মরণ ম-লকে নানাভাবে ভয়ভীতি ও হুমকি-ধমকি দিয়ে যায়।
স্থানীয়দের সাথে কথা বলে জানা গেছে, ডেমরা এলাকার ভূমিদস্যুদের বেশিরভাগই আওয়ামী লীগের সমর্থক। এ জন্য তারা আইনকে থোরাই কেয়ার করে। এর মধ্যে ফজলুল হক নিজেকে স্থানীয় এমপির লোক বলে পরিচয় দেয়। আব্দুল মান্নান স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক কর্মকর্তার আত্মীয় বলে দাবি করে। এই দু’জনের সাথে এবায়দুল, নুরুল ইসলাম ছাড়াও আছে করিম গাজী, মীর আবদুল মজিদসহ বেশ কয়েকজন। জানতে চাইলে জিডির তদন্তকারী কর্মকর্তা ডেমরা থানার এসআই অমল কৃষ্ণ দে বলেন, মরণ ম-লের জমি নিয়ে একটা ঝামেলা হয়েছে। তবে যার জমি তার দখলেই আছে। কারা ওই জমি দখল করতে চায় জানতে চাইলে তদন্তকারী কর্মকর্তা বলেন, আমি জানি না তারা কারা। তিনি বলেন, বেশি ঝামেলা মনে করলে জমির মালিক আদালতে গিয়ে মামলা করতে পারেন।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: আদালত ও পুলিশের শরণাপন্ন হয়েও প্রতিকার মিলছে না ভূমিদস্যুদের অত্যাচারে অতিষ্ঠ ডেমরার বাসিন্দা
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ