Inqilab Logo

বৃহস্পতিবার, ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ০৫ বৈশাখ ১৪৩১, ০৮ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

পলিথিন ও প্লাস্টিকে তলদেশ ভরাট হয়ে সুরমার পানি উপচে সিলেট নগরে ঢুকেছে

বন্যা পরিস্থিতি প্রসঙ্গে আবদুল করিম চৌধুরী

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ১৮ মে, ২০২২, ৫:৫৪ পিএম

উত্তর-পূর্ব ভারতে প্রবল বর্ষণে আন্তসীমান্ত সব নদী দিয়ে প্রবল বেগে পাহাড়ি ঢল নামছে। এই ঢলের সঙ্গে আসছে হাজার হাজার টন মাটি ও বালু। সিলেট অঞ্চলেও বৃষ্টিপাত চলছে। এ কারণে আকস্মিক বন্যার মুখোমুখি সিলেট ও সুনামগঞ্জের মানুষ। সিলেট নগরের ভেতর দিয়ে প্রবাহিত ২৬টি ছোট-বড় পাহাড়ি ছড়া (প্রাকৃতিক খাল) ও খাল দিয়ে দৈনিক অর্ধশত টন পলিথিন ও প্লাস্টিকযুক্ত বর্জ্য সুরমা নদীতে গিয়ে মেশে। এতে সুরমা নদীর তলদেশ ভরাট হয়ে গেছে। তলদেশ ভরাট হয়ে যাওয়ায় সুরমা নদীর পানি উপচে ঢলের পানি নগরে ঢুকেছে।

ভারতের উজান থেকে এক সপ্তাহ ধরে পাহাড়ি ঢল নামছে। পাশাপাশি সিলেটে ভারী বৃষ্টি হচ্ছে। এতে নদ-নদীর পানি বেড়ে সিলেট নগরসহ জেলার ১৩টি উপজেলায় বন্যা পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। ডুবে গেছে ফসলের খেত ও রাস্তাঘাট, ভেসে গেছে পুকুরের মাছ। অসংখ্য বাসা–বাড়িতেও পানি ঢুকেছে। জেলার কয়েক লাখ মানুষ দুর্ভোগে পড়েছে। এ প্রসঙ্গে নিজের প্রতিক্রিয়া জানাতে বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলনের (বাপা) সিলেট শাখার সাধারণ সম্পাদক আবদুল করিম চৌধুরী এ কথা বলেন।

তিনি বলেন, সিলেট নগর ছাড়াও সিলেটের ১৩টি উপজেলা এবং সুনামগঞ্জের বিভিন্ন উপজেলাও বন্যার পানিতে প্লাবিত হয়েছে। এর একটাই কারণ, গত কয়েক দশকে সিলেটের বড় দুই নদী সুরমা, কুশিয়ারাসহ সব নদ-নদীর তলদেশ ভরাট হয়ে পড়েছে। শুকনো মৌসুমে নদীতে বড় বড় চর জাগে। অসংখ্য নদী মরে গেছে।

এ থেকে উত্তরণের পথ বাতলে দিতে গিয়ে তিনি বলেন, সুরমা ও কুশিয়ারা নদীর তলদেশ ভরাট হয়ে আছে। নাগরিক বর্জ্য, বিশেষ করে প্লাস্টিকজাত দ্রব্য সুরমা নদীর তলদেশে শক্তভাবে বসে আছে। তাই সিলেট মহানগরের অংশে সুরমা নদী খননের দাবি আমরা অসংখ্যবার জানিয়েছি। সেই দাবি আমলে নিলে নদীর পানি উপচে বন্যা হতো না, সিলেট নগরের ছড়া ও খালের পানিও অনায়াসে নেমে যেতে পারত। এমনিতেই নদ-নদীর তলদেশ ভরাট হয়ে আছে। এর মধ্যে এবার ভারতের উজানের পাহাড় থেকে নেমে আসা পানিতে আছে প্রচুর মাটি ও বালু। উত্তর-পূর্ব ভারতে বিশেষ করে মেঘালয় বৃক্ষশূন্য করার কারণেই এমন ভূমিক্ষয় হচ্ছে। এতে সুরমাসহ সিলেটের অন্য নদ-নদীর তলদেশ আরও ভরাট হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। দ্রুত সুরমা, কুশিয়ারাসহ সিলেটের অন্য নদ-নদীর খনন করা প্রয়োজন। তবেই এ পরিস্থিতি থেকে উত্তরণ সম্ভব।

আবদুল করিম চৌধুরী আরও বলেন, হাওরে বেড়িবাঁধ নির্মাণের চেয়েও নদ-নদীর খনন আগে প্রয়োজন। যত দিন নদ-নদী খনন করা হবে না, তত দিন মানুষকে এই দুর্ভোগ নিয়েই চলতে হবে। বন্যা হলেই কেবল সরকার কিংবা প্রশাসন তৎপর হয়, অথচ এ তৎপরতা আগে চালানো উচিত। নদী খনন করা না গেলে কোনোভাবেই বন্যা পরিস্থিতি ঠেকানো সম্ভব নয়। অপরিকল্পিত নগরায়ণও একটা বিষয়। সিলেট মহানগরের পুকুর ও দিঘি ভরাট হয়ে গেছে। এগুলো বন্ধ করতে প্রশাসনকে আন্তরিক হতে হবে। পাহাড়-টিলা কাটা রোধ করতে হবে। প্রকৃতি বিনষ্ট হলে প্রাকৃতিক দুর্যোগ ঠেকানো মুশকিল।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ