Inqilab Logo

শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১, ১৭ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

স্বপ্ন সত্যি হচ্ছে দক্ষিণাঞ্চলবাসীর

এস এম সোহেল বিল্লাহ, পিরোজপুর থেকে | প্রকাশের সময় : ২৫ মে, ২০২২, ১২:০২ এএম

দক্ষিণাঞ্চলবাসীর আরেকটি স্বপ্ন পূরণ হতে যাচ্ছে পিরোজপুরের কঁচা নদীতে ৮ম বাংলাদেশ-চীন মৈত্রী সেতুর নির্মাণ কাজ সম্পন্নের মধ্য দিয়ে। ২০২২ সালের জুনে দক্ষিণাঞ্চলের এ গুরুত্বপূর্ণ সেতুটির নির্মাণ শেষ করে আগষ্ট মাস নাগাদ তা যানবাহন চলাচলের জন্য খুলে দেওয়ার আশা করছেন নির্মাতারা। ২০১৭ সালের ১ অক্টোবরে নির্মাণ কাজ সূচিত ও চীন সরকারের অর্থায়নে ৮৯৪ কোটি ৮ লাখ টাকা ব্যয়ের ৯৯৮ মিটার দৈর্ঘের সেতুটি ৮ম বাংলাদেশ-চীন মৈত্রী সেতু বলে নামকরণ করা হয়।

বরিশাল-পিরোজপুর-খুলনা আঞ্চলিক মহাসড়কে পিরোজপুরের কঁচা নদীর উপর এ সেতুর নির্মাণের ফলে বরিশাল বিভাগীয় সদরের সাথে খুলনা বিভাগীয় শহরের নিরবচ্ছিন্ন যোগাযোগ স্থাপনসহ পায়রা সমুদ্র বন্দর, মোংলা সমুদ্র বন্দর, বেনাপোল ও বাংলাবন্দর স্থল বন্দরকে সেতুটি সরাসরি সড়ক সংযুক্ত করবে। পাশাপাশি পদ্মা সেতু চালুর পর দক্ষিণাঞ্চলের বাসিদের জন্য এ সেতুটি বিশেষ সুবিধা সৃষ্টি করবে। সড়কপথে বরিশাল-খুলনা আঞ্চলিক মহাসড়কটি প্রায় ১০০ কিলোমিটার দৈর্ঘের হলেও যান চলাচলে সময় লাগে প্রায় তিন ঘণ্টা। কঁচা নদীর বেকুটিয়া পয়েন্টে সেতুটি চালুর পর এ সময় এক ঘণ্টা কমে আসবে।

২০০০ সালে পিরোজপুর সরকারি বালক উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে এক বিশাল জনসভায় তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কঁচা নদীতে একটি সেতু নির্মাণের ঘোষণা দেন। এরপরে কঁচা নদীর বেকুটিয়া পয়েন্টে সেতু নির্মাণের সমীক্ষা কাজ একটি প্রকল্পের অধীনে হাতে নেয়া হয়। তবে পরবর্তী বিএনপি সরকার ক্ষমতায় এলে সেতুর নির্মাণ কাজ খুব একটা এগোয়নি। পরে ২০০৯ সালে শেখ হাসিনার নেতৃত্বে গঠিত সরকারের আমলে প্রকল্পটি গতি পায় এবং চীন সরকারের আর্থিক অনুদানে ২০১৭ সালের শেষে এই সেতু নির্মাণের কাজ শুরু হয়ে এখন নির্মাণ কাজ শেষ পর্যায়ে। পিরোজপুর সদর উপজেলার নলবুনিয়া ও কাউখালী উপজেলার বেকুটিয়া ফেরি ঘাটের পাশে ৮ম বাংলাদেশ-চীন মৈত্রী সেতু নির্মাণ এলাকা ঘুরে জানা গেছে, সেতুটির নির্মাণ কাজ প্রায় ৯৫ শতাংশ সম্পন্ন হয়েছে।

সেতুটির নির্মাণ কাজ তদারকিতে দায়িত্বরত প্রজেক্ট ম্যানেজার মাসুদ মাহমুদ সুমন জানান, এ পর্যন্ত সেতুর ১০টি পিলার (পায়ার), নয়টি স্প্যান ও গার্ডার এবং ১৫টি ভায়া ডেক্ট নির্মাণ কাজ সম্পন্ন হয়েছে। প্রকল্পের অধীনে কঁচা নদীর দুই তীরে নদী শাসন কাজ চলছে। বাংলাদেশ সরকারের অর্থায়নে নয় কোটি ৪৭ লাখ টাকা ব্যয়ে সেতুর টোল প্লাজা নির্মাণ ও একটি পরিদর্শন বাংলো নির্মাণের কাজও শেষ পর্যায়ে। আমরা আশা করছি আগামী জুন মাসের ভেতর সেতুটি আমরা হাতে পাব।

যে নদীর উপর সেতুটি নির্মিত হচ্ছে তা ভারত-বাংলাদেশ নৌ প্রোটোকাল চুক্তি অনুযায়ী আন্তর্জাতিক নৌপথ। এ পথ দিয়ে পশ্চিম বাংলা থেকে বাংলাদেশ হয়ে আসাম ও ত্রিপুরার সাথে ভারতের পণ্যবাহী নৌযান চলাচল করে। এছাড়া মোংলা বন্দর ও খুলনা থেকে দেশের অভ্যন্তরে পণ্যবাহী বড় বড় নৌযান ও জ্বালানীবাহী অয়েল ট্যাংকার চলাচলেরও নৌ-পথ এটি। যে কারণে সেতুটি নেভিগেশন ক্লিয়ারেন্স পানির স্বাভাবিক উচ্চতা থেকে ১৮ মিটার বলে জানা গেছে। চলতি অর্থ বছরের ৩০ জুন ৮ম বাংলাদেশ-চীন মৈত্রী সেতুর নির্মাণ কাজ নির্ধারিত মেয়াদে শেষ হবে।

নির্মাণকারী চীনা প্রতিষ্ঠান চায়না রেলওয়ে মেজর ব্রিজ রিকনাইজেন্স ডিজাইন ইন্সটিটিউট এর ডেপুটি ম্যানেজার চ্যাং মিং ওয়েং জানান, জুন মাসের ভেতর তারা বাংলাদেশ সরকারের হাতে সেতুটি হস্তান্তর করবেন।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: দক্ষিণাঞ্চলবাসী
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ