Inqilab Logo

বুধবার, ১৭ এপ্রিল ২০২৪, ০৪ বৈশাখ ১৪৩১, ০৭ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

সরকার পতনের আন্দোলনে জোর দিতে বাম জোট ছাড়ল দুই দল

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ২৬ মে, ২০২২, ১২:০০ এএম

নির্বাচন সামনে রেখে জাতীয় সরকার গঠন এবং সরকার পতনের এক দফা দাবি আদায়ের আন্দোলন জোরদার করতে বাম গণতান্ত্রিক জোট ছেড়েছে বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টি ও গণসংহতি আন্দোলন। গত মঙ্গলবার জোটের বৈঠকে দুই দলের সদস্য পদ স্থগিত করা হয়। বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টি ও গণসংহতি আন্দোলনের নেতারা বলছেন, বাম জোটের মাধ্যমে আন্দোলন করে সরকার পতন সম্ভব নয়। জোটের আন্দোলনের কৌশলগত দিক নিয়েও প্রশ্ন ছিল তাদের। সেই মতানৈক্যের কারণে তারাই জোটের সদস্য পদ স্থগিত করতে বলেছিলেন।

বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক বলেন, আন্দোলনের মাধ্যমে দাবি আদায়ের কৌশল নিয়ে আমাদের মতপার্থক্য রয়েছে। জনগণের দাবি আদায়ের জন্য বৃহত্তর ঐক্য এবং আন্দোলনের বিকল্প নেই। ফ্যাসিবাদবিরোধী লড়াইয়ে সব বাম, গণতান্ত্রিক শক্তিকে বৃহত্তর আন্দোলন ও তার ভিত্তিতে আন্দোলনের প্ল্যাটফর্ম গড়ে তোলার তাগিদ থেকেই আমরা বাম জোটের সদস্য পদ স্থগিত রাখতে বলেছি।

নির্বাচন সামনে রেখে আরও পাঁচটি দলের সঙ্গে মিলে নতুন রাজনৈতিক মঞ্চ গড়ার প্রক্রিয়ায় আছে বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টি ও গণসংহতি আন্দোলন। মূলত এ বিষয়টিই সম্প্রতি বাম জোটে ভাঙনের বিষয়টি প্রকাশ্যে আনে। গত নির্বাচনে বিএনপি নেতৃত্বাধীন ঐক্যফ্রন্টে থাকা নাগরিক ঐক্য, জেএসডি ছাড়াও রেজা কিবরিয়া ও নুরুল হক নূরের দল গণঅধিকার পরিষদ, ভাসানী অনুসারী পরিষদ ও রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলন থাকছে সেই মঞ্চে। ইতোমধ্যে এসব দলের নেতারা পৃথক মঞ্চ গঠনের জন্য একাধিক বৈঠকও করেছেন। এসব বৈঠকে নীতিগতভাবে সরকারের বিরুদ্ধে আন্দোলনের বিষয়ে তারা একমতও হয়েছেন বলে গণমাধ্যমকে জানিয়েছেন।

জানা যায়, নতুন মঞ্চ গঠন নিয়ে বৈঠক ও আলোচনা শুরুর পর গত মঙ্গলবার বৈঠক করেন বাম জোটের নেতারা। সেখানে আলোচনার পর বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টি ও গণসংহতি আন্দোলনের নেতাদের বলা হয়, যে কোনো একটি জোটে থাকতে হবে। দুই জোটে থাকার সুযোগ নেই। পরে জোটের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টি ও গণসংহতি আন্দোলনের বামজোটের সদস্য পদ স্থগিত রাখা হয়।

গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক জোনায়েদ সাকি বলেন, আমরা দীর্ঘ দিন ধরে বাম জোটে আছি, বর্তমান প্রেক্ষাপটে বাম জোট কোনোভাবেই ফ্যাসিবাদী সরকার পতনের জন্য গণতান্ত্রিক বৃহত্তর আন্দোলন গড়ে তুলতে পারছে না। বৃহত্তর গণতান্ত্রিক আন্দোলন গড়ে তুলতে হলে এর বাইরে গিয়ে গণতান্ত্রিক মঞ্চ তৈরির মাধ্যমে আন্দোলন গড়ে তুলতে হবে। তাতে বাম জোটের নেতাদের আপত্তি ওঠে, যার ফলে আমরা নিজেরাই বলেছি আমাদের সদস্য পদ স্থগিত রাখতে।

নতুন মঞ্চের বিষয়ে সাকি বলেন, আমরা বাম জোটের বাইরে গিয়ে গণতান্ত্রিক মঞ্চ তৈরি করতে আরও পাঁচটি দলকে সঙ্গে নিয়েছি। তবে বামজোটও আমাদের সঙ্গে যুক্ত হতে পারবে, যদি তারা মনে করেন। সাত দলীয় এই মোর্চার নাম আপাতত বলা হচ্ছে ‘গণতন্ত্র মঞ্চ’। আগামী সপ্তাহেই এ মঞ্চের আনুষ্ঠানিক ঘোষণা আসতে পারে।
বাম জোটের সমন্বয়ক ও ইউনাইটেড কমিউনিস্ট লীগের সাধারণ সম্পাদক আব্দুস সাত্তার বলেন, জোটের বাইরে গিয়ে আরও একটি রাজনৈতিক মঞ্চ করার চেষ্টা নিয়ে আমাদের মধ্যে আলোচনা হয়েছে। তারা বলেছে, নির্দিষ্ট কয়েকটি দাবি নিয়ে তারা ওই মঞ্চ তৈরি করছে। আর বাম জোট শিক্ষা, খাদ্য, রাজনৈতিক, কর্মসংস্থান, আন্তর্জাতিক ইস্যুসহ অনেকগুলো বিষয় নিয়ে কাজ করে। সেখানে দুই জায়গায় থাকা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। তারা বলেছে আমরা দুই জায়গায় থাকব। তবে আমরা বললাম না, দুই জায়গায় থাকার সুযোগ নেই, কারণ মঞ্চে সাম্প্রদায়িক শক্তি, মৌলবাদী গোষ্ঠী থাকতে পারে, তাদের সঙ্গে আমাদের আদর্শিক দূরত্ব থাকতে পারে। তাহলে আপনারা ঐ জোটেই থাকেন। পরে সর্বসম্মতিক্রমে জোটে তাদের সদস্যপদ স্থগিত করা হয়েছে।#



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: নির্বাচন

২ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ