Inqilab Logo

শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ০৭ বৈশাখ ১৪৩১, ১০ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

বিনা চিকিৎসা ও অর্ধাহারে কাটে মুক্তিযোদ্ধার

মো. মনসুর আলী, আদমদীঘি (বগুড়া) থেকে | প্রকাশের সময় : ২৩ নভেম্বর, ২০১৬, ১২:০০ এএম

সরকারি-ভাতা বঞ্চিত নওগাঁর অসুস্থ বীর মুক্তিযোদ্ধা রেজাউল ইসলাম ময়েজ অর্থাভাবে বিনা চিকিৎসায় অর্ধাহারে মানবেতর জীবনযাপন করছেন। ভাতা না পেয়েই কি এই মুক্তিযোদ্ধোকে মৃত্যুবরণ করতে হবে? ১৯৭১ সালে দেশকে পাকবাহিনীর কবল থেকে মুক্ত করতে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নির্দেশে নওগাঁ সদর উপজেলা সাহাপুর গ্রামের মৃত গানা ম-লের দ্বিতীয় ছেলে রেজাউল ইসলাম ময়েজ (৬৫) মহান মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করেন এবং ভারতের প্রতিরামে ক্যাম্প ইনর্চাজ মহিউদ্দীন আহমেদের নেতৃত্বে মুক্তিযোদ্ধের ট্রেনিং শেষ করে দেশে ফিরে যুদ্ধকালীন কমন্ডার সিরাজের নেতৃত্বে পাকবাহিনীর বিরুদ্ধে যুদ্ধ করে পাক শত্রুপক্ষ পরাজিত করে। তার মুক্তি বার্তা নম্বর ২৫৪০১। যুদ্ধপরবর্তী সময় রেজাউল ইসলাম ময়েজ সংসারের অভাব-অনাটন দুরীকরণের লক্ষ্যে ভিটামাটি বিক্রি ও ধারদেনা করে ভাগ্যের চাকা ঘোরাতে ১৯৯১ সালে জনৈক এক আদম বেপারীর মারফত মালয়েশিয়াতে পাড়ি জমান। জনৈক ওই আদম ব্যাপারী এই মুক্তিযোদ্ধাকে ভুলপথে মালয়েশিয়া নিয়ে গিয়ে সেখানে তাকে ফেলে রেখে চলে আসে। সেই থেকে উল্টোদিকে চলতে থাকে মুক্তিযোদ্ধা রেজাউল ইসলাম ময়েজের ভাগ্যের চাকা। অবৈধভাবে প্রবেশের অপরাধের বোঝা নিয়ে বৈধ কাগজপত্রের তৈরির আশা নিয়ে মালয়েশিয়ার বন জঙ্গলসহ বিভিন্ন স্থানে লুকিয়ে থেকে পার করে তার জীবনের ১৫ বছর। দীর্ঘসময়েও বৈধ জাগজপত্র করতে ব্যর্থ হয়ে অবশেষে ২০০০৬ সালে ফিরে আসেন দেশে। এই দীর্ঘসময় প্রবাসে থাকার কারণে মুক্তিযোদ্ধার তালিকা থেকে বাদ পড়ে এই প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধা রেজাউল ইসলাম ময়েজের নাম। তার জমিজমা সহায়-সম্বল কিছুই নেই, নিজে উপার্জন করা ছাড়া সংসারে উপার্জন করার মতো তার কোনো সন্তানও নেই। বর্তমানে গুরুতর অসুস্থ হয়ে এই মুক্তিযোদ্ধা বিনা চিকিৎসায় অর্ধাহারে দিন কাটাচ্ছেন। অসুস্থ মুক্তিযোদ্ধা রেজাউল ইসলাম ময়েজ বলেন, বঙ্গবন্ধুর সুযোগ্য কন্যা দেশ, জাতি এবং মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের গর্ব মাননীয় প্রধানমন্ত্রী মুক্তিযোদ্ধাদের সর্বোচ্চ সম্মানে অধিষ্ঠিত করেছেন। কিন্তু আমি কেন সেই সম্মান থেকে বঞ্চিত হচ্ছি। মৃত্যুর আগে কি আমি মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী সেখ হাসিনার দেয়া সম্মান পাব না ? এই মুক্তিযোদ্ধার বিষয় নিয়ে কথা হয় তার যুদ্ধকালীন কমান্ডার নওগাঁ সদর উপজেলার দোগাছি গ্রামের বীর মুক্তিযোদ্ধা সিরাজের সাথে তিনি বলেন, রেজাউল ইসলাম ময়েজ প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধা তাতে কোনো সন্দেহ নেই। তিনি দীর্ঘদিন প্রবাসে থাকার কারণে আগের তালিকা থেকে বাদ পড়েছেন। এবার ইন্টারনেটের মাধ্যমে তিনি আবেদন করেছেন, আশা করি এবার তার নাম তালিকাভুক্ত হবে। স্থানীয় বোয়ালিয়া ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা মোস্তাক আহমেদ বলেন, সে প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধা সঠিক সময় তার নাম তালিকাবদ্ধ হয়নি। বর্তমানে সে অসুস্থ, সংসারের অবস্থাও ভালো নয়, এই মুহূর্তে তার নাম তালিকা হওয়া দরকার।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ