Inqilab Logo

শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ০৭ বৈশাখ ১৪৩১, ১০ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

আসামে বিধ্বংসী বন্যায় নিহত ৬২ মেঘালয়েও মৃত্যু ১৮ জনের

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ২০ জুন, ২০২২, ১২:০১ এএম

ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্য আসামে ভয়াবহ বন্যায় শনিবার আরও অন্তত ৮ জনের মৃত্যুর পর মোট প্রাণহানির সংখ্যা ৬২তে গিয়ে পৌঁছেছে। পাশের রাজ্য মেঘালয়েও ১৮ জন নিহত হয়েছেন, সেখানেও বন্যা পরিস্থিতির বিশেষ উন্নতি হয়নি। গত শনিবার আসামের করিমগঞ্জ ও হাইলাকান্দি - দুটো জেলাতেই বন্যাজনিত ভূমিধসে জীবন্ত চাপা পড়ে একজন করে নিহত হন। এছাড়াও বন্যায় ভেসে গিয়ে রাজ্যে আরো ৮ জনের মৃত্যু হয়েছে।

দ্য টাইমস অব ইন্ডিয়া জানাচ্ছে, জুনের দ্বিতীয় সপ্তাহে মৌসুমী বৃষ্টি আসামে আছড়ে পড়ার পর এযাবত মোট ৫৩ জন বন্যায় ও ৯ জন ভূমিধসে মারা গেছেন। ফলে রাজ্যে বন্যাজনিত কারণে এ মাসেই মৃত্যুর সংখ্যা ৬২তে গিয়ে ঠেকেছে, যা আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।

দুর্গত ৩০ লাখেরও বেশি মানুষ : আসামের ৩২টি জেলার ৩০ লক্ষেরও বেশি মানুষ এই মুহূর্তে বন্যাকবলিত। রাজ্যের দুর্যোগ মোকাবিলা কর্তৃপক্ষ জানাচ্ছে, আসামের বিভিন্ন প্রান্তে দেড় লক্ষেরও বেশি মানুষ এখন ৫০০টিরও বেশি বন্যাত্রাণ শিবিরে আশ্রয় নিয়েছেন। ব্রহ্মপুত্র ও তার শাখানদীগুলি আসামের বহু জায়গাতেই বিপদসীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। আসামের বাজালি জেলায় বিস্তীর্ণ এলাকা জুড়ে মোট ১৭৩টি গ্রাম বন্যায় সম্পূর্ণ প্লাবিত হয়ে গেছে। নলবাড়ি জেলাতেও প্রায় সোয়া লক্ষ মানুষ বন্যাদুর্গত হয়ে পড়েছেন। বন্যা পরিস্থিতি মোকাবিলায় প্রশাসনের প্রস্তুতি সরেজমিনে খতিয়ে দেখতে আসামের মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্বশর্মা শনিবার কামরূপ (গ্রামীণ) জেলার রঙ্গিয়া শহর পরিদর্শন করেন।

প্রস্তুত সেনাবাহিনী : মুখ্যমন্ত্রী জানান, ‘বন্যাকবলিত সব এলাকা থেকে দুর্গত মানুষজনকে উদ্ধার করে ত্রাণ শিবিরে নিয়ে যাওয়ার জন্য সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের জরুরি নির্দেশ দেয়া হয়েছে’।
বন্যাত্রাণে প্রয়োজনে সেনাবাহিনীকেও নামানোর জন্য প্রস্তুত রাখা হয়েছে। এই মুহুর্তে অবশ্য জাতীয় ও রাজ্য স্তরের ‘ডিজাস্টার রেসপন্স ফোর্সে’র কর্মীরাই ত্রাণ ও উদ্ধার অভিযানের তদারকি করছেন। শনিবার সকালে দেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের সার্বিক বন্যা পরিস্থিতি পর্যালোচনা করেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীও। বন্যা মোকাবিলায় কেন্দ্রীয় সরকার সব ধরনের সাহায্য করবে বলেও তিনি আশ্বাস দিয়েছেন।

এদিকে বার্তা সংস্থা পিটিআই জানাচ্ছে, শুক্রবার থেকে প্রবল বর্ষণ ও বন্যায় আর একটি উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্য ত্রিপুরাতেও অন্তত ১০ হাজার মানুষ গৃহহীন হয়ে পড়েছেন। মেঘালয়েও গত আটচল্লিশ ঘণ্টায় অতিবৃষ্টি, বন্যা আর ভূমিধসে জীবন ও সম্পত্তির ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে - ওই রাজ্যেও অন্তত ১৮ জন নিহত হয়েছে বলে প্রশাসনিক সূত্রগুলো জানাচ্ছে।

চেরাপুঞ্জিতে সর্বোচ্চ বৃষ্টি : শুক্রবার মেঘালয়ের পূর্ব খাসি হিলস এলাকার চেরাপুঞ্জিতে এক দিনেই ৯০৮.৪ মিমি বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়। ভারতের আবহাওয়া বিভাগ বলছে, ১৯৯৮ সালের পর জুন মাসের কোনও দিনে চেরাপুঞ্জিতে কখনো এত বৃষ্টি হয়নি। মেঘালয়ের চেরাপুঞ্জি-মৌসিনরাম এমনিতেই পৃথিবীতে সবচেয়ে বৃষ্টিবহুল এলাকা হিসেবে পরিচিত। এবার চলতি জুন মাসেই অন্তত ন’বার চেরাপুঞ্জিতে দৈনিক ৮০০ মিলিমিটারের বেশি বৃষ্টি রেকর্ড হয়েছে - আবহাওয়া বিভাগ রেকর্ড রাখতে শুরু করার পর যা আর কখনো ঘটেনি। উজানে এই নজিরবিহীন অতিবৃষ্টি আর ব্রহ্মপুত্র, বরাকসহ বিভিন্ন নদীর বিপুল জলস্ফীতিই ভাঁটির দেশ বাংলাদেশে বন্যার অন্যতম প্রধান কারণ হিসেবে বলা হচ্ছে। সূত্র : বিবিসি বাংলা।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: ভারত


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ