Inqilab Logo

শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৬ বৈশাখ ১৪৩১, ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

উন্নয়নের এত ঢাকঢোল বাজানো হল তাহলে সারাদেশে লোডশেডিংয়ের দুর্বিসহ পরিস্থিতি কেন? রিজভী

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ৫ জুলাই, ২০২২, ১:৩৫ পিএম

বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, সারাদেশে উন্নয়নের এত যে ঢাকঢোল বাজানো হলো তাহলে সারাদেশে কেন লোডশেডিংয়ে দুর্বিষহ পরিস্থিতি। বিদ্যূৎ নিয়ে নানা রংচংয়ের কথা বলা হয়েছে। জনগণের হাজার হাজার কোটি টাকা ব্যয় করে ১৫২টি বিদ্যূৎ কেন্দ্র স্থাপন করা হয়েছে, যার বেশীর ভাগই এখন অচল হয়ে পড়ে আছে। এখন লোডশেডিংয়ের ভয়াবহ ছোবলে দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলসহ রাজধানী শহরও বিপন্ন হয়ে পড়েছে। অথচ বেসরকারী খাতে বিদ্যূৎ উৎপাদন কেন্দ্র কুইক রেন্টাল স্থাপন করতে ভর্তুকি দিতে হয়েছে জনগণের হাজার হাজার কোটি টাকা। এই টাকা কিভাবে খরচ হচ্ছে সেটি নিয়ে কেউ যাতে প্রশ্ন তুলতে না পারে সেজন্য দায়মুক্তির আইন করা হয়েছে।
মঙ্গলবার (৫ জুলাই) সকালে নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।
রুহুল কবির রিজভী বলেন, বিদ্যূতের সীমাহীন ব্যর্থতার মূল কারণ-ক্ষমতাসীন গোষ্ঠীর আত্মীয়স্বজনের বেপরোয়া লুন্ঠন। এরা স্বদেশ ও স্বসমাজকে এড়িয়ে আত্মীয় তোষণ করতে গিয়েই বেসরকারী বিদ্যূৎ কেন্দ্র স্থাপনের অনুমতি দিয়ে জনগণকে শোষণ করার পথ উন্মুক্ত করেছে। যার কারণে বিদ্যূতের বিল এখন অস্বাভাবিক, কিন্তু দেশ অন্ধকারে নিমজ্জিত হয়েছে।

তিনি বলেন, সরকারপ্রধান শেখ হাসিনার উন্নয়নের হাতির ভেতরের দাঁত যে নেই সেটি এখন স্পষ্ট। শেখ হাসিনার উন্নয়ন যে একটা ভোজবাজি তা এখন আরও দৃশ্যমান হয়ে উঠেছে। ফাঁপা উন্নয়নের তাস দিয়ে যে মানুষের মন জেতা যাবে না, সেটি তিনি বোঝার চেষ্টা করেননি। বাংলাদেশের পরিস্থিতি এখন এমনই যে, যে জনপদের মধ্য দিয়ে হেঁটে যাওয়া হয় সেটিকেই মনে হয় অন্ধকার গোরস্থান। পদ্মা সেতু উদ্বোধন নিয়ে যে কান্ড করা হলো তা আরব্য রজনীর আলিফ লায়লার কাহিনীকেও হার মানাবে। অধিকাংশ প্রিন্ট মিডিয়ার প্রথম পাতা জুড়ে শেখ হাসিনার গুণকীর্তনের কাহিনী ছাপা হয়েছে। ইলেকট্রনিক মিডিয়ায় হরদম প্রচার করা হয়েছে শেখ হাসিনার লজ্জাহীন উচ্ছাস। কিন্তু জাতি হিসেবে দেশবাসী লজ্জিত হয়েছে।
দেশ প্রশাসনের ভয়াবহ কৈবল্য ঘটেছে মন্তব্য করে তিনি বলেন, নাৎসীবাদের জয়জয়কার সর্বত্র। আওয়ামী লীগ ও এর অঙ্গ সংগঠন ছাত্রলীগ এক সুখরাজ্য নির্মাণ করেছে। সমগ্র শিক্ষার মূলে ছাত্রলীগের আগ্রাসনে এক ভীতিকর পরিস্থিতি তৈরী হয়েছে। তাদের রাজনীতির কারণে এখন দেশে দূর্বৃত্তায়ন ও ইতরায়নের জয়জয়কার চলছে। বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর আবাসিক হল সমূহে বরাদ্দ পত্র দেয় ছাত্রলীগ। সাধারণ ছাত্রদের হলে সিট পেতে হল প্রশাসনের নিকট নয় ছাত্রলীগের নেতাদের নিকট যেতে হয়। বিশ^বিদ্যালয় প্রশাসনের কোন উদ্যোগ নেই হলগুলো নিয়ন্ত্রণে নেয়ার। এভাবে ঢাকা, চট্টগ্রাম, রাজশাহী, শাহজালাল, জাহাঙ্গীর নগর বিশ^বিদ্যালয়ে আবাসিক হলগুলো ছাত্রলীগ নিয়ন্ত্রণ করছে। রাজশাহী বিশ^বিদ্যালয়ে মুক্তিযুদ্ধের চেতনার নামে হলের সিট বিক্রি করছে ছাত্রলীগ। সাধারণ ছাত্রদের শঙ্কা ও সংশয়ের মাঝে দিনাতিপাত করা ছাড়া উপায়ান্তর নেই। আওয়ামী সরকারের মদদে আইন আদালতের নির্মম প্রবঞ্চনা ও কপটতার কারণেই ছাত্রলীগ শিক্ষা জীবনকে বিপজ্জনক চোরগর্তের মধ্যে ঠেলে দিচ্ছে। এরা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোকে বিপজ্জনক জোনে পরিণত করেছে।
রিজভী বলেন, পদ্মা সেতুর জাঁকজমক উদ্বোধনে শুধুমাত্র শত শত টয়লেট নির্মাণ করতেই শত শত কোটি টাকা ব্যয় করা হয়েছে। সম্প্রতি গণমাধ্যমের খবর-প্রবল বন্যায় বানভাসী মানুষের জন্য জনপ্রতি মাত্র ১৮ টাকা ও দেড় কেজি চাল বরাদ্দ করা হয়েছে। এ যেন কর্মহীন অর্ধাহার-অনাহারক্লিষ্ট মানুষের প্রতি নির্মম পরিহাস। এই পরিস্থিতি সরকারের অসৎ অনাচারের একটি সুনিশ্চিত ভঙ্গি। এটি এই শতকে সভ্যতার সংকটের এক দূর্বিষহ দৃষ্টান্ত। সরকারের এহেন আচরণ দুঃস্বপ্নের অতীত এক অভিঘাত। মানুষের দীঘশ^াস ঝরে পড়ছে কিন্তু তারা ক্ষমতার নেশায় আচ্ছন্ন হয়ে এধরণের একটি অপরাধপ্রবণ কর্মসূচি নিয়েছে। সরকারের কারণেই এই বন্যা মানবতার অস্তিত্বকে ঝুঁকির মধ্যে ফেলেছে। দেশনায়ক তারেক রহমানের নির্দেশে সারাদেশে বিএনপি নেতাকর্মীরা তাদের যথা সর্বস্ব নিয়ে বানভাসী মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছে। দেশব্যাপী বন্যাদূর্গত এলাকায় চলছে বিএনপি নেতাকর্মীদের ব্যাপক ত্রাণ কার্যক্রম।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: রিজভী

৭ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ