Inqilab Logo

শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ০৭ বৈশাখ ১৪৩১, ১০ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

পশুরহাট ভর্তি দেশি গরু

ক্রেতাদের বেশি চাহিদা ছোট গরু বিগ সাইজ গরুতে চমক থাকলেও ক্রেতাদের আগ্রহ কম

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ৭ জুলাই, ২০২২, ১২:০০ এএম

রাজধানীর কোরবানির পশুর হাট জমতে শুরু করেছে। ইতোমধ্যে ঢাকার বিভিন্ন এলাকায় সিটি করপোরেশন নির্ধারিত পশুর হাটে দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে কোরবানির পশু আসছে। গত দুই বছরের তুলনায় এবার কয়েকদিন আগে থেকেই বাজার জমতে শুরু করেছে। তবে কোরবানির পশুর হাটে এবার দেশি পশুই দেখা যাচ্ছে। রাখার যায়গা না থাকায় ঢাকায় বসবাসরত মানুষ এখনো কোরবানির পশু পুরোদমে কিনতে শুরু করেননি। যারা কোরবানির পশু কিনবেন তারা প্রতিদিন বাজারে আসছেন। বিভিন্ন ধরনের পশু দেখছেন। কোন কোন বাজারে এখন লোকজনের ভিড় না থাকার কারণে ছোট বাচ্চাদের নিয়ে এসে কোনবানির পশু পছন্দ করছেন।
রাজধানীর কয়েকটি পশুর হাট ঘুরে দেখা গেছে, ছোট গরুর প্রতি ক্রেতাদের আগ্রহ বেশি। তবে বিগ সাইজের গরুর নানা নামকরণ করে চমক সৃষ্টি করা হলেও সেগুলোর কেনার প্রতি ক্রেতাদের তেমন আগ্রহ দেখা যাচ্ছে না। এখনো বিক্রি জমে উঠেনি। ব্যবসায়ীরা বলছেন, এবার দেশে পর্যাপ্ত কোরবানির পশু আছে। দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে যে হারে কোরবানির পশু আসছে তাতে মনে হয় এবার দেশি পশুতেই চাহিদা মিটবে। যদি এবার বিদেশি পশু না আসে তাতেও কোন সমস্যা নেই। বাজারে এখনই অনেক পশু এসেছে। আর কয়েকদিনের মধ্যে আরো আসতে থাকবে। কোনবানির ঈদের দিন পর্যন্ত ক্রেতারা তাদের পছন্দ মতো কোরবানির জন্য পশু কিনতে পারবেন। তবে বড় গরু দর্শকদের আকর্ষণ করলেও দামের কারণে ক্রেতাদের আগ্রহ তেমন দেখা যাচ্ছে না।
ঈদুল আজহাকে কেন্দ্র করে রাজধানীর দুই সিটিতে বসেছে মোট ১৭টি পশুর হাট। এর বাইরে গাবতলীর স্থায়ী পশুর হাট ও ডেমরার সারুলিয়ার পশুহাট। কোরবানির ঈদ ঘিরে পশুর হাটগুলোতে হাজার হাজার মানুষের সমাগমে লেনদেন হয় হাজার হাজার কোটি টাকা। বিগত বছরের মতো এবারও পশুর হাটগুলোতে নিরাপত্তায় রয়েছে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। হাটের শৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণে এবার সমন্বিতভাবে কাজ করছে ঢাকা মহানগর পুলিশ, মহানগর গোয়েন্দা (ডিবি) ও র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‌্যাব)।
গুরুত্বপূর্ণ হাট ও জনসমাগম এবং লেনদেন বিবেচনায় প্রায় প্রতিটি হাটে শতাধিকের বেশি পুলিশ সদস্য মোতায়েন করা হয়েছে। হাট ও হাটের আশপাশে গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টে মোতায়েন রয়েছেন সাদা পোশাকের পুলিশ সদস্যরা। ১০০ ফুট অন্তর বসানো হয়েছে ওয়াচ টাওয়ার। দূরবীণ হাতে হাটের সার্বক্ষণিক চিত্র পর্যবেক্ষণ করছেন পুলিশ সদস্যরা। প্রতিবারের মতো এবারও রাজধানীর পশুর হাটগুলোতে কোনো হকার বসতে না দেয়ার নীতিগত সিদ্ধান্ত নিয়েছে ডিএমপি। সুষ্ঠু ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা ও নির্বিঘ্নে হাট পরিচালনার জন্য ইজারাদারদের জন্য বিশেষ নির্দেশনা দিয়েছে ডিএমপি।
গতকাল বুধবার রাজধানীর কয়েকটি পশুর হাট ঘুরে দেখা গেছে, গেছে, হাটে ছোট ও মাঝারি গরুর চাহিদা বেশি। বড় গরু বিক্রি সেভাবে হচ্ছে না। বড় গরুর ক্রেতারা আসছে এবং দেখছেন। তবে অনেকে যারা ছোট গরু কিনতে চান তারা কিনছেন। ব্যবসায়ীরা বলছেন, এখন বিক্রি কম। কাস্টমার দেখছি না। অনেকে আসে। দাম করে, চলে যায়। গরুর পেছনে আগে যে খরচ হত, এখন খরচ তার ডাবল। অনেক কাস্টমার দাম বলে, কিন্তু সেটা বেশি না। কিন্তু খরচ যে বেশি সেটা তারা বুঝতে চায় না। যদিও রাজধানীর ক্রেতারা ঈদের এক-দুদিন আগে কোরবানির পশু কিনে থাকেন। সেই হিসেবে শুক্র ও শনিবার রাজধানীর হাটগুলোতে ক্রেতা বাড়বে। তখন বড় গরুর চাহিদাও বাড়বে বলে মনে করছেন ব্যবসায়ীরা।
কোরবানির ঈদ সামনে রেখে রাজবাড়ির পাংশা থেকে গাবতলীতে আনা হয়েছে একটি খাসি এটির নাম দেয়া হয় চেয়ারম্যান। ৮৫ থেকে ৯৫ কেজির চেয়ারম্যানের দাম এক লাখ ১৫ হাজার টাকা হাঁকছেন এর মালিক। তবে যোগ্য মালিক পেলে দাম কিছু কম হলেও তার হাতেই তুলে দেয়া হবে চেয়ারম্যানকে। খাসিটির মালিক মো. বাবু মিয়া বলেন, আমি রাজবাড়ির পাংশা থেকে এসেছি। এটি আমার নিজের খামারের খাসি। আমি গত দুই বছর ধরে এটি লালন-পালন করেছি। ছয় মাস বয়সে আমার চেয়ারম্যানকে এক ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানের কাছ থেকে কিনি।
রাজধানীর গাবতলীতে পশুর হাটে দিনাজপুর থেকে আসেন আবদুর রশিদ। তার সাথে ছোট ভাইকে নিয়ে এসেছেন ১০টি গরু দেখাশুনার জন্য। গতকাল পর্যন্ত তিনি দুইটি গরু বিক্রি করেছেন। তিনি জানান এখন গরু কেনার ক্রেতা কম। ক্রেতারাও এখন গরুর দাম কম বলেন। হয়তো আস্তে আস্তে ক্রেতাও বাড়বে দামও বৃদ্ধি পাবে। এই গরুগুলো বিক্রি হয়ে গেলে আরও কিছু গরু আছে নিয়ে আসব।
রাজধানীর কমলাপুর হাটে এসেছেন গরু বিক্রেতা কাজল মিয়া। তিনি তিনটি গরু নিয়ে এসেছেন হাটে। তার প্রতিটি গরুর দাম হাঁকছেন সাড়ে ১০ লাখ টাকা। এই প্রথম তিনি ঢাকায় গরু নিয়ে এসেছেন। এবার ভালো লাভ হলে প্রতি বছর গরু নিয়ে আসবেন বলে জানান তিনি। তবে তার গরুগুলো কোন ক্রেতা দাম বলেনি। তার আশা ঈদের সময় কাছে আসলে তিনি ঠিকই গরু ভালো দামে বিক্রি করতে পারবেন। তিনি আরো জানান, প্রতিদিন হাটে থাকতে খাওয়া অন্যান্য খরচ ও গরুর খাবার পেছনে অনেক টাকা চলে যাচ্ছে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: কোরবানির পশু


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ