Inqilab Logo

শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৬ বৈশাখ ১৪৩১, ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

অর্থপাচার মামলায় সোনিয়া গান্ধীকে জিজ্ঞাসাবাদ, দিল্লিতে কংগ্রেসের আগুন

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ২১ জুলাই, ২০২২, ৪:৪০ পিএম

ভারতের বহুল আলোচিত ‘ন্যাশনাল হেরাল্ড’ সংশ্লিষ্ট অর্থপাচার মামলায় দেশটির বিরোধী দল কংগ্রেসের নেত্রী সোনিয়া গান্ধীকে তদন্ত সংস্থা এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ইডি) প্রায় তিন ঘণ্টা ধরে জিজ্ঞাসাবাদ করেছে। বৃহস্পতিবার সোনিয়াকে জিজ্ঞাসাবাদের প্রতিবাদে ভারতজুড়ে বিক্ষোভ করেছেন কংগ্রেসকর্মীরা। এই বিক্ষোভ থেকে রাজধানী নয়াদিল্লিতে কংগ্রেসের নেতাকর্মীরা ট্রেন অবরোধ এবং বাসে অগ্নিসংযোগ করেছেন।
দেশটির সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি বলছে, সোনিয়া গান্ধীকে জেড প্ল্যাস ক্যাটাগরির নিরাপত্তা দিয়ে ইডির কার্যালয়ে নিয়ে যায় দেশটির আধা-সামরিক বাহিনী সিআরপিএফ। কিছুদিন আগে করোনার চিকিৎসা নেওয়া গান্ধীর সঙ্গে ছিলেন তার ছেলে রাহুল গান্ধী এবং মেয়ে প্রিয়াঙ্কা গান্ধী।
তবে ইডির এই জিজ্ঞাসাবাদের নিন্দা জানিয়েছে সোনিয়া গান্ধীর রাজনৈতিক দল কংগ্রেস। রাজনৈতিক উদ্দেশে সোনিয়াকে হেনস্থা করা হচ্ছে বলে অভিযোগ করেছে দলটি। দলীয় প্রধানের সমর্থনে দেশজুড়ে বিক্ষোভ-প্রতিবাদের ডাক দেওয়ায় দলটির বেশ কয়েকজন নেতাকে গ্রেপ্তার করেছে ভারতের পুলিশ।
‘ইডির অপব্যবহার বন্ধ কর’ লেখা বিশাল ব্যানার নিয়ে কংগ্রেসের নেতাকর্মীরা বৃহস্পতিবার তদন্ত সংস্থাটির ভবনেও বিক্ষোভ করেছেন। এছাড়া দেশজুড়েও বিশাল বিক্ষোভ-প্রতিবাদ কর্মসূচি পালন করেছেন তারা।
দেশটির সংবাদমাধ্যম বলছে, দিল্লিতে কংগ্রেসের নেতাকর্মীদের বিক্ষোভে জলকামান ব্যবহার করেছে পুলিশ। দিল্লির বিভিন্ন প্রান্তে ব্যক্তিগত যানবাহনে অগ্নিসংযোগ এবং ভাঙচুর করেছেন কংগ্রেসের বিক্ষুব্ধ নেতাকর্মীরা। কিছু কিছু জায়গায় বিক্ষোভকারীরা ট্রেন আটকে বিক্ষোভ করেছেন।
১৯৩৮ সালে ভারতের কয়েকজন স্বাধীনতা সংগ্রামীকে সঙ্গে নিয়ে ‘ন্যাশনাল হেরাল্ড’ প্রতিষ্ঠা করেন কংগ্রেসের সাবেক প্রেসিডেন্ট পন্ডিত জওহরলাল নেহেরু। প্রতিষ্ঠার অল্প কয়েকদিনের মধ্যেই এই ইংরেজি দৈনিক কংগ্রেসের মুখপাত্র হয়ে ওঠে। স্বাধীনতার পরও বেশ দাপটের সঙ্গে চলছিল ন্যাশনাল হেরাল্ড। ইংরেজির পাশাপাশি হিন্দি ও উর্দু ভাষার সংস্করণও বের হত এ পত্রিকার।
প্রতিষ্ঠার ৭০ বছর পর, ২০০৮ সালে প্রায় ৯০ কোটি রুপি ঋণের বোঝা নিয়ে বন্ধ হয়ে যায় ন্যাশনাল হেরাল্ড। ন্যাশনাল হেরাল্ড ও তার দুই অঙ্গসংস্থা অ্যাসোসিয়েটেড জার্নালস লিমিটেড (এজেএল) এবং ইয়াং ইন্ডিয়া লিমিটেডের (ওয়াইআইএল) পরিচালনা পর্ষদে ছিলেন কংগ্রেসের নেত্রী সোনিয়া গান্ধী ও রাহুল গান্ধী।
২০১২ সালে ভারতীয় জনতা পার্টির জ্যেষ্ঠ নেতা ও আইনজীবী সুব্রামানিয়ান স্বামী ন্যাশনাল হেরাল্ড, এজেএল ও ইয়াং ইন্ডিয়ার তহবিল তছরুপ ও মুদ্রাপাচারের অভিযোগ আনেন সোনিয়া গান্ধী ও রাহুল গান্ধীসহ পর্ষদের আরও ৪ সদস্যের বিরুদ্ধে।
অভিযোগে বলা হয়, অভিযুক্ত আসামিরা ন্যাশনাল হেরাল্ড তহবিলের প্রায় ২ হাজার কোটি রুপির তহবিল তছরুপ ও মুদ্রাপাচারের সঙ্গে যুক্ত। দুই বছর তদন্তের পর ২০১৪ সালে ভারতের আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর গোয়েন্দা সংস্থা সিবিআিই আদালতে জমা দেওয়া প্রতিবেদনে জানায়, এ ঘটনায় অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে অপরাধের কোনো প্রমাণ পাওয়া যায়নি। সিবিআইয়ের প্রতিবেদনের পর আদালত সেই মামলা খারিজও করে দেয়।
তার পরের বছর, ২০১৫ সালে মামলাটি পুনরুজ্জীবিত করতে আদালতে আবেদন করে ভারতের কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রণালয়ের এখতিয়ারভুক্ত আইন প্রয়োগকারী সংস্থা এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট। সেখানে বলা হয়, এই মামলা ইডি তদন্ত করতে চায়। এ আবেদনে সাড়া দিয়ে মামলা পুনরুজ্জীবিত করেন আদালত। পাশপাশি তা পরিচালানার দায়িত্বও দেওয়া হয় ইডিকে। সূত্র: এএনআই, এনডিটিভি।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ