Inqilab Logo

মঙ্গলবার, ১৬ এপ্রিল ২০২৪, ০৩ বৈশাখ ১৪৩১, ০৬ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

৩০ বছর পর নাটোরের যাবজ্জীবন কারাদন্ড প্রাপ্ত আসামি শাহজাহান গ্রেফতার

নাটোর জেলা সংবাদদাতা | প্রকাশের সময় : ২৩ জুলাই, ২০২২, ৫:১৩ পিএম | আপডেট : ৫:১৪ পিএম, ২৩ জুলাই, ২০২২

৩০ বছর পর যাবজ্জীবন কারাদন্ডপ্রাপ্ত আসামী শাহজাহান আলী @ সোহরাব হোসেন স্বপনকে গ্রেফতার করেছে নাটোর র‌্যাব ক্যাম্পের অপারেশন দল। গ্রেফতারকৃত শাহজাহান আলীর বাড়ি নাটোরের নলডাঙ্গা উপজেলার ২ নং মাধনগর ইউনিয়নের পশ্চিম সোনাপাতিল গ্রামে। তিনি একই এলাকার মৃত হোসেন আলীর ছেলে। শনিবার সকাল ৬টার দিকে সিরাজগঞ্জ জেলার হাটিকুমরুল এলাকা হতে নাটোর র‌্যাব ক্যাম্প সিপিসি-২ এর কোম্পানী অধিনায়ক, অতিঃ পুলিশ সুপার মোঃ ফরহাদ হোসেন এবং কোম্পানী উপ-অধিনায়ক, মোঃ রফিকুল ইসলামের নেতৃত্বে তাকে গ্রেফতার করা হয়।
শনিবার সকাল সাড়ে ১০টায় নাটোর র‌্যাব ক্যাম্প সিপিসি-২ এর কার্যালয়ে এক প্রেস ব্রিফিং-এ জানানো হয় গ্রেফতারকৃত শাহজাহান আলী @ সোহরাব হোসেন স্বপন (৫৪) স্থানীয় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ৬ষ্ঠ শ্রেণী পর্যন্ত পড়াশোনা করেছিল। পরে ১৯৯২ সালে শাহজাহান পার্শ¦বর্তী গ্রামে ফিরোজা বেগম কে বিয়ে করে। উক্ত বিয়েকে কেন্দ্র করে শাহজাহান এবং মৃত শাহাদাতের মধ্যে বিরোধ সৃষ্টি হয়। সৃষ্ট বিরোধ কে কেন্দ্র করে ১৯৯২ সালের ১৭ মে তারিখ বেলা সাড়ে ১১টার দিকে বারনই নদীতে মৃত শাহাদত(৩২) গোসলের উদ্দেশ্যে নামলে পূর্বেই নদীতে অবস্থানরত আসামী শাহজাহানের সাথে পূর্ব বিরোধের জের ধরে কথা কাটাকাটি হয় এবং এক পর্যায়ে আসামী শাহজাহান তার হাতে থাকা ছুরি দিয়ে মৃত শাহাদতের বুকে উপর্যপুরি আঘাত করে পালিয়ে যায়। পরবর্তীতে স্থানীয় লোকজন গুরুতর জখম অবস্থায় শাহাদতকে নাটোর হাসপাতালে নিয়ে আসার পথে তার মৃত্যু হয়।
পরবর্তীতে গ্রেফতারকৃত শাহজাহান আলী দিনাজপুর জেলার ফুলবাড়ী পৌরসভায় নিজ পরিচয় গোপনকরে“সোহরাব হোসেন স্বপন নামে বসবাস করতে থাকে। সেখানে প্রথমদিকে সে ঐ এলাকায় বিভিন্ন কাজ করলেও গত ১০ বছর ধরে গাজীপুরের এক গার্মেন্টস কারখানায় কাজ করছে। দিনাজপুরের ফুলবাড়ীতে সে নাম পাল্টিয়ে শাহজাহান এর পরিবর্তে “সোহরাব হোসেন স্বপন” নামে একটি ভূয়া জাতীয় পরিচয়পত্র তৈরী করে। সে দিনাজপুর ও ঢাকায় অবস্থান করলেও গোপনে নিজএলাকায় নিয়মিত যোগাযোগ রাখত।
মৃত শাহাদাতের হত্যাকান্ডের পরপরই তার ভাই মোঃ সেকেন্দার আলী বাদী হয়ে নাটোর জেলার সদর থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। যার নম্বর- ১২, তারিখঃ ১৭ মে ১৯৯২, জিআর-৯৪/৯২ (নাটোর), ধারা- ৩০২ পেনাল কোড। উক্ত মামলার তদন্ত কারী কর্মকর্তা একমাত্র আসামী শাহজাহানকে অভিযুক্ত করে বিজ্ঞ আদালতে চার্জশীট দাখিল করেন। স্বাক্ষ্য গ্রহণ শেষে ১৯৯৫ সালের ২৯ মে নাটোর জেলার বিজ্ঞ জেলা সেশন আদালত অভিযুক্ত শাহজাহান আলীকে যাবজ্জীবন কারাদন্ড এবং ৫ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরো এক বছরের কারাদন্ড প্রদান করেন। উক্ত হত্যাকান্ডের পর হতে আসামী শাহজাহান আত্মগোপনে চলে যায়। ৩০ বছর পলাতক থাকার পর যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত আসামী শাহজাহান আলীকে গ্রেফতারের ব্যাপারে র‌্যাব উদ্যোগী হয় ও গোয়েন্দা নজরদারী রেখে শনিবার ২৩ জুলাই সকাল ৬ টার দিকে শাহজাহান আলীকে সিরাজগঞ্জের হাটিকুমরুল থেকে গ্রেফতার করা হয়।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: গ্রেফতার


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ