Inqilab Logo

শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৬ বৈশাখ ১৪৩১, ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

ভিত্তিহীন অভিযোগ কাম্য নয়

ড. মো. কামরুজ্জামান | প্রকাশের সময় : ৩০ জুলাই, ২০২২, ১২:০৬ এএম

গত ২৩ জুলাই ২০২২ তারিখে দৈনিক ইনকিলাবে আমার একটি লেখা প্রকাশিত হয়। লেখাটির শিরোনাম ছিল, ‘নূপুর শর্মা ভারতে হেরেছে, জিতেছে বাংলাদেশে’। উক্ত লেখার মধ্যে আমি বলেছি, নূপুর শর্মা ভারতীয় রাজনীতিবিদ ও আইনজীবী। তিনি ২০২২ সালের জুন পর্যন্ত ভারতীয় জনতা পার্টি (বিজেপি)’র জাতীয় মুখপাত্র ছিলেন। তিনি প্রায়শই ভারতীয় টেলিভিশন বিতর্কে একজন সরকারি মুখপাত্র হিসেবে বিজেপির প্রতিনিধিত্ব করতেন। ২৬ মে ২০২২ তারিখে এক টেলিভিশন বিতর্কে নূপুর শর্মা মহানবী (সা.)কে নিয়ে আক্রমণাত্মক ও অসম্মানজনক মন্তব্য করেন। এ ঘটনায় উত্তর প্রদেশের কানপুরের মুসলিমরা প্রতিবাদে ফুঁসে ওঠে। স্থানীয় সংখ্যালঘু মুসলিমদের সাথে সংখ্যাগরিষ্ঠ হিন্দুদের সংঘর্ষ বাঁধে। দুই গোষ্ঠির সংঘর্ষে আহত হয় অনেকে। বিক্ষুব্ধ মুসলিমদের উপর কানপুর পুলিশ দমন-নিপীড়ন শুরু করে। দেড় হাজার মুসলিমকে গ্রেপ্তার করে। কানপুর পুলিশ হাজারেরও বেশি মুসলিমের বিরুদ্ধে গ্যাংস্টার আইনে মামলা করে। বুলডোজার দিয়ে সংখ্যালঘু মুসলিমদের ঘরবাড়ি মাটির সাথে মিশিয়ে দেয়। উপসাগরীয় দেশ কুয়েত, কাতার, দুবাই, সৌদি আরব, জর্ডান, ইরাকসহ মুসলিম দেশগুলো এ ঘটনার তীব্র নিন্দা ও ক্ষোভ প্রকাশ করে। মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন দেশ ভারতীয় পণ্য বর্জন ও ভারতীয় শ্রমিকদের ছাঁটাই করা শুরু করে। ইরান, কুয়েত, কাতারসহ বিভিন্ন দেশ নিন্দা জানাতে ভারতীয় রাষ্ট্রদূতকে তলব করে। সৌদি আরব কড়া ভাষায় বিবৃতি প্রদান করে। নূপুর শর্মার বিতর্কিত ওই মন্তব্যের জেরে ওআইসি ভারতের বিরুদ্ধে অবস্থান গ্রহণ করে।

দলের কেন্দ্রীয়কমিটি দলীয়পদ থেকে নূপুর শর্মাকে বহিষ্কার করে। শুধু বিজেপিই নয়, নূপুর শর্মার মন্তব্য নিয়ে কড়া প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করে ভারতের সুপ্রিমকোর্ট। ‘দেশটির শীর্ষ আদালত দেশজুড়ে অশান্তির জন্য দায়ী নূপুর শর্মাকে দায়ী করে এবং তাকে দেশবাসীর কাছে ক্ষমা চাওয়ার নির্দেশ প্রদান করে। গোটা দেশের অশান্ত পরিবেশের জন্য তাঁকে দায়ী করে বিচারপতি সূর্যকান্ত বলেন, ‘আপনার আলটপকা মন্তব্যে দেশে আগুন জ্বলে গিয়েছে। সারা জায়গায় যে অশান্ত পরিস্থিতি, তার জন্য একা এই মহিলাই দায়ী। উনিই দেশের নিরাপত্তায় হুমকির কারণ। যেভাবে উনি গোটা দেশে আবেগে সুড়সুড়ি দিয়েছেন। দেশে যা ঘটছে তার জন্য এই মহিলা একাই দায়ী। বিচারপতি সূর্যকান্ত আরও বলেন, উনি একটা দলের মুখপাত্র তো কী হয়েছে! উনি ভাবছেন, ক্ষমতার ব্যাকআপ আছে ওঁর সঙ্গে, তাই দেশের কানুনকে সম্মান না জানিয়ে যে কোনো রকম মন্তব্য করতে পারেন!’ একইসঙ্গে বিচারপতির নির্দেশ ছিল এমন: ‘আপনার উচিত টিভিতে এসে সারাদেশের মানুষের কাছে ক্ষমা চাওয়া। আপনি তাদের (মুসলিমদের) ধর্মীয় ভাবাবেগকে আঘাত করেছেন।’ সুপ্রিমকোর্টের এ পর্যবেক্ষণকে স্বাগত জানায় বিরোধী রাজনৈতিক দল কংগ্রেস। ঘটনা এখানেই শেষ নয়, নূপুর শর্মার বিরুদ্ধে দুটি এফআইআর দায়ের করেছে মুম্বাই পুলিশ। নূপুরের বক্তব্যটি সোশ্যাল মিডিয়াতে ভাইরাল হওয়ার পর থেকে দেশে ও বিদেশের মুসলিমরা নূপুরের শাস্তির দাবিতে বিক্ষোভ করে। ভারতেও মুসলিম সম্প্রদায়ের বড় অংশ রাজ্যে রাজ্যে রাস্তায় নেমে আন্দোলনের মাধ্যমে নূপুরের শাস্তি দাবি করে। কিন্তু মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ প্রতিবেশী হওয়া সত্ত্বেও এসব থেকে নিজেদের দূরে সরিয়ে রেখেছে বাংলাদেশ। পুরো বিষয় নিয়ে বাংলাদেশ একেবারেই নীরবতা পালন করেছে।

বাংলাদেশের নড়াইল সদর উপজেলার এক কলেজ ছাত্র রাহুল দেব রায় গত ১৬ জুন ফেসবুকে নূপুর শর্মার পক্ষে একটি স্ট্যাটাস দিয়েছে। রাহুল দেব উক্ত স্ট্যাটাসে নূপুর শর্মার একটি ছবি সংযুক্ত করে। আর তাতে লেখা ছিল ‘প্রণাম নিও বস নূপুর শর্মা, জয় শ্রী রাম!’ আবার গত ১৫ জুলাই নড়াইল জেলার দিঘলিয়াতে কলেজ ছাত্র আকাশ সাহা মহানবী (সা.)কে নিয়ে আপত্তিকর কমেন্ট করে। এ দুটি ঘটনায় স্বাভাবিকভাবে মুসলিমগণ প্রতিবাদ করে। তাদের মধ্যে কিছু লোক হিন্দুদের বাড়িঘর হামলা ও ভাংচুর করে। অতঃপর প্রতিবাদী মুসলিম জনতার বিরুদ্ধে পুলিশবাদী মামলা হয়। নবীপ্রেমিক মুসলিমদেরকে পুলিশ গ্রেপ্তার করে রিমান্ডে নেয়। কিন্তু মহানবী (সা.)কে দেয়া গালির ঘটনা আড়াল হয়ে যায়! কলামের শেষ দিকে আমার বক্তব্য ছিল, প্রকৃত ধার্মিক কখনও অন্য ধর্মের লোককে ক্ষতি করতে পারে না; অন্য কোনো ধর্মকে কটাক্ষও করতে পারে না। প্রত্যেকেই তার নিজ ধর্মের বিধান মেনে চললে সমাজে অশান্তি সৃষ্টি হতো না। আমরা অধিকাংশই ধার্মিক সাজতে শিখেছি, কিন্তু ধার্মিক হতে শিখিনি। ধর্মকে আমরা পালন করতে শিখিনি কিন্তু ব্যবহার করতে শিখেছি। অধিকাংশই আমরা ধর্মের বিধান মতে চলি না, বরং ধর্মকে আমরা চালাই। অর্থাৎ ধর্মকে সুবিধামত ব্যবহার করি। এসব স্বার্থপরতার বৃত্ত থেকে বেরিয়ে আসতে হবে। তাহলেই সমাজে শান্তি ও নিরাপত্তা প্রতিষ্ঠিত হবে।’ এটা ছিল আমার লিখিত কলামের মূল ভাষ্য। উল্লেখিত ঘটনাগুলো আমার নিজের আবিষ্কৃত নয়। উল্লেখিত তিনটি ঘটনাই নেট দুনিয়ায় ছড়িয়ে আছে। পাঠকগণ ইচ্ছা করলে এ লেখাগুলো দেখতে পারেন। আমার লেখাটিও ইচ্ছা করলে পড়তে পারেন!

কিন্তু দুঃখজনকভাবে জনৈক হিন্দু ভাই আক্রমণাত্মক ভাষায় আমাকে একটা ইমেইল করেছেন। ২৩ জুলাই দিবাগত রাত ১২টা ১ মিনিটে তিনি আমাকে ইংরেজি ভাষায় ইমেইলটি সেন্ড করেন।

এ বার্তাটিতে হিন্দু ভাইটি বাংলাদেশকে একটি সাম্প্রদায়িক দেশ হিসেবে উল্লেখ করেছেন। আমি এ বক্তব্যের তীব্র প্রতিবাদ জানাচ্ছি। ভাইটির এ বক্তব্যটি সম্পূর্ণ মিথ্যা। কারণ, বাংলাদেশ বিশ্বের একমাত্র সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির দেশ, যেখানে সকল ধর্মের মানুষ সম্প্রীতির বন্ধন নিয়ে একত্রে বসবাস করে। এদেশে সকল ধর্মের মানুষ তাদের সামাজিক, রাজনৈতিক, ধর্মীয় তথা সকল প্রকার নাগরিক অধিকারসমূহ সমভাবে ভোগ করেন। এ ব্যাপারে একটা উদাহরণ পেশ করছি: যেকোনো একটি দেশের মেরুদন্ড হলো শিক্ষা ব্যবস্থা। এদেশে মুসলিম সংখ্যা ৯০ শতাংশ। হিন্দু সংখ্যা ১০ শতাংশ। অথচ, এ দেশের শিক্ষাব্যবস্থা হিন্দু শিক্ষিত ভাইদের হাতেই ন্যস্ত। কারণ ১. দেশের প্রাথমিক শিক্ষা অধিপ্তরের মহাপরিচালক (ডিজি) শ্যামল কান্তি ঘোষ। ২. পাঠ্যপুস্তক বোর্ডের (এনসিটিবি) সচিবের নাম বজ্র গোপাল ভৌমিক। ৩. কারিগরি শিক্ষা অধিপ্তরের মহাপরিচালক ও শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব হলেন অশোক কুমার বিশ্বাস। ৪. সৃজনশীল পদ্ধতি বাস্তবায়নকারী মাধ্যমিক শিক্ষা খাত উন্নয়ন কর্মসূচির (সেসিপ) যুগ্ম পরিচালক রতন কুমার রায়। ৫. সৃজনশীল পদ্ধতি বাস্তবায়নকারী মাধ্যমিক শিক্ষা খাত উন্নয়ন কর্মসূচির (সেসিপ) বিশেষজ্ঞ ড. উত্তম কুমার দাশ। ৬. ঢাকা বোর্ডের উপ-কলেজ পরিদর্শক অদ্বৈত কুমার রায়। ৭. চট্টগ্রাম শিক্ষাবোর্ডের সচিব ড. পীযুষ কান্তি দন্ত। ৮. শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের উপ প্রধান তথ্য কর্মকর্তা সুবোধ চন্দ্র ঢালী। ৯. বাংলাদেশের পাঠ্যপুস্তক বোর্ডের চেয়্যারম্যান নারায়ন চন্দ্র পাল। ১০. ঢাকা বোর্ডের মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ডের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক শ্রীকান্ত কুমার চন্দ্র। ১১. শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের উপ-সচিব অজিত কুমার ঘোষ। ১২. শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সহকারী সচিব পতিত পাবন দেবনাথ। ১৩. শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সহকারী সচিব অসীম কুমার কর্মকার। ১৪. শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম-প্রধান স্বপন কুমার ঘোষ। ১৫. শিক্ষামন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব শ্রী বনমালী ভৌমিক। ১৬. শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব ড. অরুণা বিশ্বাস ও ১৭. শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব স্বপন কুমার সরকার। এরপরও আপনি কি বলবেন বাংলাদেশের ৯৯ শতাংশ লোক সাম্প্রদায়িক? আপনি বলেছেন, ইসলামি হানাদাররা সারা বিশ্বের ন্যায় উপমহাদেশেও লুটপাট, ধর্ষণ, হত্যা এবং জোরপূর্বক মানুষকে ইসলামে ধর্মান্তরিত করেছে। আপনার এ অভিযোগটি সর্বৈব মিথ্যা।

মুসলিম জাতি পৃথিবীর দ্বিতীয় বৃহত্তম সংখ্যাগরিষ্ঠ জাতি। লুটপাপ, ধর্ষণ আর জোর যবরদস্তি করলে বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম জাতি হওয়া যেতো না। আবার ২০০টি রাষ্ট্রের মধ্যে এককভাবে ৫৭টি মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ রাষ্ট্রের মালিক হওয়াও সম্ভব হতো না। দীর্ঘ প্রায় আট শত বছর মুসলিমরা উপমহাদেশ শাসন করেছে। জোর যবরদস্তি করলে এ উপমহাদেশে একজন হিন্দুও অবশিষ্ট থাকতো না। ১৯৭৮ সালে জন্ম নেয়া ছেলেটিকে আপনি রাজাকার বানিয়ে ছাড়লেন! বাংলাদেশের স্বাধীনতার বয়স এখন ৫১ বছর চলমান। আর আমার বয়স এখন ৪৪ বছর। সুতরাং আমাকে রাজাকার বলা সম্পূর্ণ অযৌক্তিক, মিথ্যা ও বিভ্রান্তিমূলক। আমাকে অপরাধী বানাতে গিয়ে আপনি ঘৃণ্য মিথ্যার আশ্রয় নিয়েছেন। মিথ্যা ও অনুমান নির্ভর কথা বলে সমাজে আপনি বিভ্রান্তি ছড়াচ্ছেন, যা দেশ ও জাতির কল্যাণের পরিবর্তে অকল্যাণই বয়ে আনছে। আমার লেখনির মাধ্যমে আমি সাম্প্রদায়িকতা ছড়াচ্ছি বলে আপনি আমাকে অপবাদ দিয়েছেন। এর উত্তরে আমি বলবো, আমার লেখা শুধু ইনকিলাবেই প্রকাশিত হয় না। আরো একাধিক জাতীয় দৈনিকে আমার প্রায় শতাধিক লেখা প্রকাশিত হয়েছে। লেখাগুলো নেট জগতে ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে। উক্ত লেখাগুলো দেশ, জাতি ও আন্তর্জাতিক কল্যাণ বিষয়ের নির্দেশক। উক্ত লেখাগুলোতে মুক্তিযুদ্ধ, জাতি, ধর্ম, বর্ণ নির্বিশেষে মানবতার কল্যাণের বিষয় স্থান পেয়েছে। প্রত্যেকটি লেখাই সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির নির্দেশক। সুতরাং আপনার এ অভিযোগটিও সম্পূর্ণ মিথ্যা। আপনি বলেছেন, অতীতে এদেশ হিন্দু মেজরিটি ছিল। মুসলিমদের অত্যাচারে নিম্নবর্ণের হিন্দুরা ইসলাম গ্রহণ করেছে। প্রিয় ভাই, আপনি নিশ্চয়ই জানেন, জোর করে কারো মন জয় করা যায় না। ইসলাম প্রচারকদের চরিত্র মাধুর্য আর মানবতায় মুগ্ধ হয়েই হিন্দু সমাজে অত্যাচারিত হিন্দুরা ইসলামে দীক্ষিত হয়েছিল। নিম্নবর্ণ নয়, উচ্চ বর্ণের অনেক হিন্দুই ইসলামের সুমহান আদর্শে উজ্জিবিত হয়ে তারা ইসলাম গ্রহণ করেছিলেন, যার সর্বশেষ উদাহরণ ভারতের প্রায় ১০০ কোটি হিন্দুর ভগবান ড. শিবশক্তি স্বরুপজি। তিনি পৃথিবীর ১২টি ভাষাতে দক্ষ ছিলেন। যিনি ভারতের মথুরা জেলার বৃন্দাবনে ১৯৩৬ সালে জন্মগ্রহণ করেন। হিন্দু গবেষকদের মতে, এ বৃন্দাবনেই জন্মগ্রহণ করেছিলেন তাদের ভগবান শ্রীকৃষ্ণ। তাই বৃন্দাবন ছিল তাদের তীর্থভূমি। ভারতের হিন্দু সমাজের মতে, রাধাকৃষ্ণের লীলাভূমিতেই আরেক ভগবান জন্মগ্রহণ করে শিবশক্তি নাম ধারণ করেছেন। অথচ, সেই তিনিই ১৯৮৬ সালে ইসলামে দীক্ষিত হন। ইসলাম গ্রহণের পরে তিনি ড. ইসলামুল হক নামে বিশ্বময় পরিচিতি পান। সুতরাং ভাইটির এ অভিযোগেরও কোনো ভিত্তি নেই। আপনি বলেছেন, পশ্চিমা বিশ্বে বাংলাদেশকে ধর্মান্ধ দেশ হিসেবে চিত্রিত করা হয়। কথাটা ঠিক নয়। কারণ, তারা বাংলাদেশকে একটি মডারেট মুসলিম দেশ হিসেবেই মনে করে। যুক্তরাজ্যের বিখ্যাত দৈনিক পত্রিকা দ্যা গার্ডিয়ান, সাময়িকী ইকোনোমিস্ট, বিবিসি, যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্ক টাইমস, সাময়িকি টাইম ইত্যাদি বাংলাদেশকে ইতিবাচক রাষ্ট্র হিসেবে ফলাও করে প্রকাশ করেছে। এছাড়া তাদের সাথে বাংলাদেশের সবধরনের সম্পর্ক ইতিবাচক অবস্থাতেই অবস্থান করছে। এছাড়া পশ্চিমা বিশ্বের অনেক দেশে বাঙালি মুসলিমরা অত্যন্ত সম্মানের সাথে বসবাস করছেন। পশ্চিম ইউরোপের শুধু ইতালিতেই প্রায় ১ লাখ বাঙালি মুসলিম বসবাস করে। সুতরাং বাংলাদেশ নিয়ে এ ধরনের অভিযোগ একবারেই ভিত্তিহীন। সবশেষে ইনকিলাবে আমার প্রকাশিত প্রবন্ধের সকল তথ্যকে আপনি মিথ্যা বলেছেন। আপনার কাছে প্রশ্ন, নূপুর শর্মা কি আমাদের মহানবী (সা.)-এর বিরুদ্ধে অসম্মানজনক কথা বলেননি? অতঃপর এটাকে কেন্দ্র করে কি ভারতে সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা বাঁধেনি? অতঃপর বিজেপি কি তাকে দল থেকে বহিষ্কার করেনি? তার বিরুদ্ধে কি ভারতের সুপ্রিমকোর্টে মামালা হয়নি? তাকে প্রণাম করে বাংলাদেশের নড়াইলে কি দেবনাথ রায় নামে এক কলেজ ছাত্র স্ট্যাটাস দেয়নি? নড়াইলের আরেক কলেজ ছাত্র আকাশ সাহা কি নবীর বিরুদ্ধে অপমানজনক কমেন্ট করেনি? আর এসব ঘটনার কারণেই কি নড়াইলে অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি? আপনার কাছে প্রশ্ন, এসব ঘটনা কি মিথ্যা? এঘটনাগুলোইতো আমি আমার লেখায় আলোকপাত করেছি। প্রকৃত ধার্মিক কারো ক্ষতি করতে পারে না। সকলেই যদি তাদের নিজ নিজ ধর্ম সঠিকভাবে পালন করতো তাহলে কেউ অন্য ধর্মের লোককে অসম্মান করতো না। কিন্তু আমরা কেউই নিজ ধর্মের বিধি বিধান মানি না। ধর্ম মতে আমরা চলি না। ধর্মকে আমরা আমাদের সুবিধা মতো ব্যবহার করি। আপনার কাছে প্রশ্ন, এ কথাগুলোও কি মিথ্যা? পরিশেষে আমি বলতে চাই, আপনি আপনার ধর্ম সঠিকভাবে মেনে চলুন! আর আমি আমার ধর্ম মেনে চলি! তাতে দেশ ও জাতির মঙ্গল হবে। কারো বিরুদ্ধেই হিংসাত্মক মনোভাব পোষণ করা উচিত নয়। আর এটা সকল ধর্মেই পরিত্যাজ্য। প্রতিহিংসার মাধ্যমে আসলে ভালোকিছু অর্জন করা যায় না।

লেখক: কলামিস্ট ও অধ্যাপক, দাওয়াহ এন্ড ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগ, ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়, কুষ্টিয়া
[email protected]



 

Show all comments
  • jack ali ৩০ জুলাই, ২০২২, ১১:১২ পিএম says : 0
    Not a single nations follow their religion only muslim follow their religion as such we do not kill or rape or repel other religious people from their country but mayanmer killed thousands of muslims raped them, they rape them in gruesome way also they killed muslim in gruesome way. They have burned all their houses and more than 1 millions muslim ran away from their country in came to our country. Since Liberation india is killing muslims like rats, in kashmir since 1948 they they killed hundreds and thousands of muslims and raped may thousands muslim women. recently in kashmir they kidnapped a 10 year muslim girl and kept in Hindu Mondir and ganged raped her for many days two of the rapist is father and son, you see they are absolutely barbarian. In Palestine there is no Jews country, so called wester civilized people install a jews country in the land of Palestine and they evicted millions of Palestinian and demolished their home and they refugee. Whole Palestinian is land is occupied by Zionist Jews except Gaza but Zionist Jews blocked Gaza for 15 years and become the biggest open prison in the world. Every day Zionist barbarian kill Palestinian and also they bombed Gaza.
    Total Reply(0) Reply
  • jack ali ৩০ জুলাই, ২০২২, ১০:৫৫ পিএম says : 0
    Bangladesh ruler is the slave of BJP muslim butcher killer Modi. If our country rule by Quran than India will never even dare to point a finger to muslim in India.
    Total Reply(0) Reply
  • Salute Sir ৩১ জুলাই, ২০২২, ৯:১৭ এএম says : 0
    Salute
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: ভিত্তিহীন অভিযোগ কাম্য নয়
আরও পড়ুন