Inqilab Logo

শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

‘ইউক্রেনের ঘাড়ে দোষ’ অ্যামনেস্টির রিপোর্টে, জেলেনস্কি রেগে লাল

অনলাইন ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ৫ আগস্ট, ২০২২, ১২:২৯ পিএম

টানা পাঁচ মাসের বেশি সময় ধরে রাশিয়ার সামরিক অভিযান মোকাবিলা করছে ইউক্রেন। রুশ এই আগ্রাসনের বিপরীতে নিজেকে নির্যাতিত হিসেবে উপস্থাপন করে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের কাছ থেকে সহানুভূতি আদায়েও সচেষ্ট এই দেশটি। তবে এবার ইউক্রেনের বিরুদ্ধে উল্টো অভিযোগ এনেছে মানবাধিকার বিষয়ক আন্তর্জাতিক সংস্থা অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল। -রয়টার্স

সংস্থাটি রাশিয়ার আগ্রাসনের সময় আবাসিক এলাকায় সৈন্য মোতায়েন করে বেসামরিক নাগরিকদের বিপদে ফেলার জন্য ইউক্রেনকে অভিযুক্ত করেছে। বৃহস্পতিবার (৪ আগস্ট) এক রিপোর্টে দেশটির বিরুদ্ধে এই অভিযোগ আনে সংস্থাটি। অবশ্য মানবাধিকার এই সংস্থাটির এই রিপোর্টকে রাশিয়ান প্রচারণা এবং বিভ্রান্তিকর বলে আখ্যায়িত করেছে কিয়েভ। শুক্রবার (৫ আগস্ট) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে বার্তাসংস্থা রয়টার্স। বার্তাসংস্থাটির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালের অভিযোগের তীব্র নিন্দা জানিয়েছে ইউক্রেন। আর এর নেতৃত্ব দিয়েছেন খোদ প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি। তার অভিযোগ, মানবাধিকার এই গোষ্ঠীটি আগ্রাসন পরিচালনাকারীর থেকে অপরাধের দায়ভার ইউক্রেনের দিকে সরানোর চেষ্টা করছে।

বৃহস্পতিবার প্রকাশিত রিপোর্টে বলা হয়েছে, অ্যামনেস্টির কর্মীরা গত এপ্রিল মাস থেকে জুলাই মাস পর্যন্ত ইউক্রেনের পূর্ব ও দক্ষিণে জোরালো লড়াই চলছে এমন বেশ কয়েকটি এলাকায় পরিদর্শন করেন। সেসময় সংস্থাটির কর্মীরা কিছু জনবহুল আবাসিক এলাকায় ইউক্রেনীয় বাহিনীকে ‘ঘাঁটি স্থাপন এবং অস্ত্র ব্যবস্থাপনা পরিচালনা’ করতে দেখেছেন। অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালের সেক্রেটারি জেনারেল অ্যাগনেস ক্যালামার্ডকে উদ্ধৃত করে রিপোর্টে বলা হয়েছে, ‘ইউক্রেনীয় বাহিনী জনবহুল এলাকায় তাদের কর্মকাণ্ড পরিচালনা করছে বলে আমরা নথিভুক্ত করেছি। এটি যুদ্ধের আইনের লঙ্ঘন এবং এই ধরনের কর্মকাণ্ড বেসামরিক নাগরিকদের ঝুঁকির মধ্যে ফেলে দেয়। আর তাই ইউক্রেনীয় বাহিনীকে জনবহুল এলাকা থেকে দূরে অবস্থান করার বিষয়টি নিশ্চিত করতে অথবা সব বেসামরিক নাগরিককে প্রথমে ওই এলাকাগুলো থেকে সরিয়ে নিতে ইউক্রেন সরকারের প্রতি আহ্বান জানান ক্যালামার্ড।

অবশ্য অ্যামনেস্টির এই রিপোর্টের পরই কার্যত ক্ষোভে ফেটে পড়েন ইউক্রেনীয় প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি। বৃহস্পতিবার রাতে দেওয়া ভিডিও বার্তায় তিনি বলেন, মানবাধিকার বিষয়ক আন্তর্জাতিক এই সংস্থাটি একটি ‘সন্ত্রাসী রাষ্ট্রকে সাধারণ ক্ষমা’ করার চেষ্টা করছে। মূলত ‘সন্ত্রাসী রাষ্ট্র’ শব্দটি তিনি প্রায়শই রাশিয়ার জন্য ব্যবহার করেন। অ্যামনেস্টির রিপোর্টের জবাবে স্পষ্টভাবে উত্তেজিত হয়ে জেলেনস্কি বলেন, এমন কোনো শর্ত নেই, এবং হতেও পারে না, এমনকি অনুমানগতভাবেও, যার অধীনে ইউক্রেনের ওপর রাশিয়ার যেকোনো আক্রমণ ন্যায়সঙ্গত হয়ে যায়। তিনি আরও বলেন, ‘যে কেউ রাশিয়াকে ক্ষমা করে দেয় এবং যারা কৃত্রিমভাবে এমন একটি তথ্যের প্রেক্ষাপট তৈরি করে যেখানে সন্ত্রাসীদের কিছু আক্রমণ ন্যায্য বা বোধগম্য বলা হয়, তারা বুঝতে ব্যর্থ হতে পারে না যে, এটি করার মাধ্যমে তারা কার্যত সন্ত্রাসীদেরই সাহায্য করছে। এবং যদি এই ধরনের কারসাজি রিপোর্ট তৈরি করা হয়, তাহলে তাদের (রাশিয়ার) সাথে মানুষ হত্যার দায় আপনারও।’

অন্যদিকে ইউক্রেনের উপ-প্রতিরক্ষা মন্ত্রী হান্না মালিয়ার বলেছেন, অ্যামনেস্টির প্রতিবেদনে রাশিয়ার পদক্ষেপের সমালোচনা করতে ব্যর্থ হওয়া মূলত ‘সশস্ত্র ধর্ষকের কর্মকাণ্ড বিবেচনা না করে ভিকটিমদের কর্মকাণ্ড নিয়ে গবেষণার মতো’। এছাড়া ইউক্রেনীয় পররাষ্ট্রমন্ত্রী দিমিত্রো কুলেবা বলেছেন, তিনি অ্যামনেস্টির এই প্রতিবেদনে ‘ক্ষুব্ধ’ হয়েছেন। একইসঙ্গে অ্যামনেস্টিকে ‘মিথ্যা বাস্তবতা তৈরি করা বন্ধ করার’ আহ্বানও জানিয়েছেন তিনি।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: ইউক্রেন


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ