Inqilab Logo

শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৬ বৈশাখ ১৪৩১, ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

শয়তান মানুষের দরবারে হাজির হয় গোমরাহীর পসরা সাজিয়ে-ছারছীনার পীর ছাহেব

| প্রকাশের সময় : ১ ডিসেম্বর, ২০১৬, ১২:০০ এএম

ছারছীনা সংবাদদাতা : আমীরে হিযবুল্লাহ, ছারছীনা শরীফের পীর ছাহেব কেবলা আলহাজ্ব হযরত মাওলানা শাহ্ মোহাম্মদ মোহেব্বুল্লাহ (মা.জি.আ) বলেছেন- নামাজ শ্রেষ্ঠ ইবাদত। কিয়ামতের মাঠে সর্বপ্রথম আল্লাহ নামাজের হিসাব নিবেন। তাই নামাজ কায়েমের ব্যাপারে সকলকে যতœবান হতে হবে।
আর নামাজ কবুলের জন্য বিশুদ্ধ কোরআন তেলাওয়াত একান্ত প্রয়োজন। পাশাপাশি নিয়মিত আল্লাহর জিকির করা এবং প্রিয় নবী (সা.) এর শানে দরূদ পাঠ করার দ্বারা নামাজের মধ্যে একাগ্রতা বেশি পয়দা হয়। পীর ছাহেব বলেন, ইলমে মারেফাতের চর্চা করব শরীয়তের মধ্যে থেকে। শরীয়ত বিরোধী কর্মকা- যে দরবারে হয়, যারা নামাজ রোজার ধার ধারে না, সুন্নতের আমল করে না তারা কখনো হক্কানী হতে পারে না। ছারছীনা দরবার দলীয় রাজনীতিমুক্ত একটি হক দরবার। প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকেই কোরআন-সুন্নাহ মোতাবেক এ দরবার পরিচালিত হচ্ছে। বেদায়াতী, বেয়াদবী ও ভ-ামীর স্থান এ দরবারে নেই। পীর ছাহেব কেবলা মাহফিলে আগত লাখো লাখো পীর-ভাই, মুহিব্বীন ও ধর্মপ্রাণ মুসলমানদের উদ্দেশ্যে আরও বলেন- আমাদের ভারত বর্ষে কোন নবীর আগমন ঘটেনি। বণিক ও মুবাল্লিগ বেশে কতিপয় সাহাবায়ে কেরাম এ দেশে এসেছেন। তবে উল্লেখযোগ্য হারে যারা এসেছেন তারা হচ্ছেন নায়েবে নবী তথা আউলিয়ায়ে কেরাম। এ দেশের মুসলিম শাসন আউলিয়ায়ে কেরামের আগমনের পথ সুগম করেছে মাত্র। এদেশের কোন বিধর্মীকে জোরপূর্বক ইসলাম ধর্মে দীক্ষিত করা হয়েছে মর্মে ইতিহাসে কোন প্রমাণ নেই। বরং আউলিয়ায়ে কেরামের চরিত্র-মাধুর্য এবং তাছাররুফের বদৌলতে সাগর পাড়ের এ বঙ্গদেশটি মুসলমান সংখ্যাগরিষ্ঠ জনগণের রাষ্ট্রে পরিণত হয়েছে। আমরা তাদের উত্তরসূরী, এ কথাটি আমাদের মনে রাখতে হবে। তবে শয়তান বসে নেই, সে নিত্য নতুন সুরাতে নানা বেশে মানুষের দ্বারে হাযির হয় তার গোমরাহীর পসরা সাজিয়ে।
পীর ছাহেব কেবলা মায়ানমারের মুসলমানদের উপর নির্মম নির্যাতনের কথা উল্লেখ করে এ ব্যাপারে সকলকে সোচ্চার হওয়ার এবং বিশেষ করে সরকারকে এ ব্যাপারে জোরালো ভূমিকা রাখার আহ্বান জানান।      
গতকাল বুধবার ছারছীনা দরবার শরীফের তিন দিনব্যাপী ১২৬তম ইছালে ছওয়াব মাহফিল ও বাংলাদেশ জমইয়াতে হিযবুল্লাহ সম্মেলনের শেষদিনে আখেরী মোনাজাতের পূর্বে গুরুত্বপূর্ণ নসীহত করতে গিয়ে পীর ছাহেব কেবলা একথা বলেন।
মাহফিলে বিশেষ মেহমান হিসেবে উপস্থিত ছিলেন- স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল (এম.পি), আমিন মোহাম্মদ গ্রুপের চেয়ারম্যান আলহাজ্ব এম.এম এনামুল হক, বানারীপাড়া-২ আসনের সংসদ সদস্য এড. তালুকদার মো: ইউনুস, পিরোজপুর-১ আসনের সংসদ সদস্য আলহাজ্ব এ.কে.এম.এ আউয়াল, বরিশাল বিভাগীয় কমিশনার মো: গাউস, ডিআইজি শেখ মারুফ হাসানসহ সরকারের বিভিন্ন স্তরের এবং বাংলাদেশ জমইয়তে হিযবুল্লাহর নেতৃবৃন্দ।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেন, ছারছীনা দরবারে দ্বীনের জন্য, নিজের শান্তির জন্য ঢল নামে। এখানে যারা আসে তারা নিজের ঈমান ও আমলকে মজবুত করে আল্লাহওয়ালা হওয়ার জন্যই আসে। আমি মুসলমান। আমি দ্বীন তথা ধর্মকে ভালোবাসি। আর তাই দ্বীনের মহব্বতেই এ হক্কানী দরবারে আমার ছুটে আসা।
মাহফিলে কোরআন ও হাদীসের গুরুত্বপূর্ণ বিষয়াবলীর উপর আলোচনা করেন- বাংলাদেশ জমইয়তে হিযবুল্লাহর সিনিয়র নায়েবে আমীর ও পীর ছাহেব কেবলার বড় ছাহেবজাদা আলহাজ্ব শাহ আবু নছর নেছারুদ্দিন আহমদ হুসাইন, মরহুম হযরত পীর ছাহেব কেবলার সফরসঙ্গি আলহাজ্ব মাওলানা আবু জাফর মোঃ শামসুদ্দোহা, চৈতা দরবারের পীর ছাহেব আলহাজ্ব মাওলানা মোঃ নূর খান, দারুন্নাজাত সিদ্দিকীয়া কামিল মাদরাসার মুহাদ্দিস মাওলানা ওসমান গণি ছালেহী, সহ অন্যান্য ওলামায়ে কেরাম।
মাহফিলে কোরআন তেলাওয়াত, জিকির-আজকার, মীলাদ-কিয়াম ও তওবা-ইস্তেগফার করে লাখো লাখো মুরীদানদের নিয়ে দেশ-জাতি ও মুসলিম উম্মাহর সার্বিক কল্যাণ ও মায়ানমারের মুসলমানদের সুখ-শান্তি ও আল্লাহর রহমত কামনা করে আমীরে হিযবুল্লাহ হযরত পীর ছাহেব কেবলা আখেরী মুনাজাত পরিচালনা করেন। 



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: ছারছীনার পীর ছাহেব


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ