Inqilab Logo

শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

আগামী ৮ বছরে দেশে দরিদ্র লোক থাকবে না অর্থমন্ত্রী

| প্রকাশের সময় : ১ ডিসেম্বর, ২০১৬, ১২:০০ এএম

অর্থনৈতিক রিপোর্টার  : আগামী ৮ বছরের মধ্যে বাংলাদেশে আর কোনো দরিদ্র লোক থাকবে না বলে জানিয়েছেন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত। গতকাল বুধবার রাজধানীর পিকেএসএফ মিলনায়তনে মঙ্গা নিরসনে সমন্বিত উদ্যোগ কর্মসূচির সমাপনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
অর্থমন্ত্রী বলেন, দরিদ্র লোক না থাকার মানে এই নয়, একেবারে দরিদ্র থাকবে না। কিছু সংখ্যক বৃদ্ধ, বয়স্ক, প্রতিবন্ধী থেকেই যাবে যারা বিশ্বব্যাপী রাষ্ট্রের ওপর নির্ভরশীল। আমরা এসব লোকদের কীভাবে বন্দোবস্ত করা যায় সে উদ্যোগ নিচ্ছি। ‘মঙ্গা’ প্রসঙ্গে অর্থমন্ত্রী বলেন, আজকের পর বাংলা শব্দকোষ থেকে ‘মঙ্গা’ শব্দটি বিদায় করে দিলাম। আমরা আনন্দের সঙ্গে এ শব্দটিকে বিদায় দিতে পারি। কারণ বাংলাদেশে এখন আর ‘মঙ্গা’ নেই।
পিকেএসএফের চেয়ারম্যান ড. কাজী খলীকুজ্জমান আহমেদের সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন অর্থ বিভাগের সিনিয়র সচিব মাহবুব আহমেদ এবং পিকেএসএফের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. আবদুল করিম।
অর্থ সচিব মাহবুব আহমেদ বলেন, বাংলাদেশে দারিদ্র্য কমেছে কিন্তু বৈষম্য রয়ে গেছে। তবে বিশ্বব্যাপী যে হারে বৈষম্য সৃষ্টি হয়েছে বাংলাদেশে সে তুলনায় কম। তিনি বলেন, দারিদ্র্য বিমোচনে সরকারের প্রচেষ্টা সফল হয়েছে। মঙ্গা বিদায় হয়েছে।
অনুষ্ঠানে জানানো হয়, পিকেএসএফ কর্তৃক বাস্তবায়িত প্রাইম কর্মসূচির আওতায় অতিদরিদ্রের সংগঠিত করার মাধ্যমে তাদের মাঝে নমনীয় সঞ্চয়, সহনীয় ও নমনীয় ঋণ এবং আপদকালীন ঋণ প্রদান করা হয় এবং আয়বর্ধনমূলক কর্মকা-ে (আইজিএ) অতিদরিদ্র সদস্যদের দক্ষতা বৃদ্ধির মাধ্যমে স্ব-নিয়োজিত ও মজুরীভিত্তিক কর্মসংস্থান সৃষ্টির জন্য প্রশিক্ষণ প্রদান করা হয়। অতিদরিদ্র পরিবারের নাজুকতা দূরীকরণে আর্থিক সেবার পাশাপাশি স্বাস্থ্য ও কারিগরি সেবা প্রদান করা হয়। এছাড়া প্রয়োজনে মঙ্গাকালীন সময়ে কাজের বিনিময় অর্থ কার্যক্রম এবং সুপেয় পানি বিতরণ কার্যক্রম পরিচালনা করা হয়।
এ কর্মসূচিভুক্ত দরিদ্র সদস্যদের মাঝে এ যাবত প্রায় ২ হাজার ৩৮৫ কোটি ৯০ লাখ টাকা নমনীয় ঋণ এবং ৭০ কোটি ৩৮ লাখ টাকা আপদকালীন ঋণ বিতরণ করা হয়েছে। এছাড়া এ কর্মসূচির আওতায় ২ লাখ ৬৪ হাজার ৬৯৫ জন সদস্যকে কৃষিজ ও অকৃষিজ বিষয়ক দক্ষতা উন্নয়নমূলক প্রশিক্ষণ এবং ১ হাজার ৭৬৬ জন সদস্যকে বিভিন্ন ট্রেডে বৃত্তিমূলক কারিগরি প্রশিক্ষণ প্রদান করা হয়েছে। এ কর্মসূচির আওতায় ঋণ ও অনুদান সহায়তার মাধ্যমে সদস্য পর্যায়ে প্রায় ৫ লাখ ৩৫ হাজার কৃষি বিষয়ক আইজিএ ৮ লাখ ৭৯ হাজার প্রাণিসম্পদ বিষয়ক আইজিএ এবং ৬ লাখ ৫৯ হাজার অকৃষিজ বিষয়ক আইজিএ বাস্তবায়ন করা হয়েছে। এছাড়া, এ কর্মসূচির মাধ্যমে সদস্যদের পরিবার প্রায় ২২ হাজার ৫১৫টি মডেল আইজিএ স্থাপন করা হয়েছে। এ কর্মসূচিভুক্ত প্রাথমিক সেবা কার্যক্রমের আওতায় প্রায় ৮৯ হাজারটি স্যাটেলাইট ক্লিনিকের মাধ্যমে ২০ লাখ ৯ হাজার দরিদ্র রোগীকে সেবা প্রদান করা হয়েছে। এছাড়া প্রাথমিক সেবা কার্যক্রমের আওতায় ৩ হাজার ১৫৪টি হেলথ ক্যাম্প আয়োজন করা হয়েছে এবং দুই হাজার জন অতিদরিদ্র রোগীর ছানি অপারেশন করা হয়েছে। এছাড়া এ কর্মসূচির আওতায় প্রায় ২ কোটি ৪৬ লাখ টাকার ওষুধ অতিদরিদ্র সদস্যের মাঝে বিতরণ করা হয়েছে।
সমাপনী অনুষ্ঠানে জানানো হয়, প্রাইম কর্মসূচির অর্জন হলো কর্মসূচিভুক্ত পরিবারের বার্ষিক আয় ২০০৭ সালে ছিল ৩৭ হাজার টাকা, তা এখন বেড়ে ১ লাখ ৪২ হাজার ৬৩৮ টাকা দাঁড়িয়েছে। খাদ্য নিরাপত্তা ২০০৭ সালে তিন বেলা খাওয়া মাত্র ৪ শতাংশ ছিল, যা এখন বেড়ে ৯৯ শতাংশ দাঁড়িয়েছে। মঙ্গাকালীন সময়ে কর্মসংস্থান প্রায় শূন্যের কোঠা থেকে বর্তমানে মাসে ২১ দিন হয়েছে। ২০০৮ সালে পরিবারের গড় সম্পদ ছিল ৬২ হাজার টাকা, এখন তা বৃদ্ধি পেয়ে দাঁড়িয়েছে ২ লাখ ১১ হাজার টাকা।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: অর্থমন্ত্রী


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ