Inqilab Logo

মঙ্গলবার, ১৯ মার্চ ২০২৪, ০৫ চৈত্র ১৪৩০, ০৮ রমজান ১৪৪৫ হিজরী

ফুসে ওঠা সাগরের জোয়ারের পানিতে দক্ষিণাঞ্চলের ২৪টি ফেরি সেক্টরের বেশীরভাগেই পারাপার বন্ধ থাকছে

বরিশাল ব্যুরো | প্রকাশের সময় : ১২ আগস্ট, ২০২২, ৪:৩১ পিএম

পূর্ণিমার ভরা কাটালে ভর করে ফুসে ওঠা সাগরের জোয়ারের পানিতে বিপুল ফসলী জমি সহ উপকূলভাগ সয়লাব হয়ে যাবার পাশাপাশি দক্ষিণাঞ্চলের বিভিন্ন সড়ক মহাসড়কের ২৪টি ফেরি পয়েন্টের ৪৮টি ফেরি ঘাট দিনের বেশীরভাগ সময়ই ডুবে থাকছে। ফলে গুরুত্বপূর্ণ সড়ক ও মহাসড়কে যানবাহন পারাপার থেকে শুরু সাধারন মানুষের চলাচলও এখন ভয়াবহ সংকটের কবলে। পাশাপাশি তিন দিন ধরে এ অঞ্চলের প্রধান দানাদার খাদ্য ফসল আমনের বীজতলা ও রোপা আমনের একটি বড় অংশ প্লাবনের কবলে থাকায় ঝুকি বাড়ছে। তবে শুক্রবার দক্ষিণাঞ্চলে বৃষ্টিপাতের পারিমান হ্রাস পাওয়ায় নতুন করে পরিস্থিুতির অবনতি না ঘটলেও শণিবার থেকে শুরু হওয়া শ্রাবনের পূর্ণিমায় ভর করে জোয়ারের উচ্চতা আরো বাড়ার আশংকা রয়েছে। দক্ষিনাঞ্চলের সবগুলো পয়েন্টেই মেঘনা,তেতুলিয়া, আড়িয়াল খাঁ, বিষখালী, পায়রা, সন্ধা, সুগন্ধা, বুড়িশ^র, বলেশ^র ও কঁচা নদীর পানি এখনো বিপদ সীমার ওপরে প্রবাহিত হচ্ছে।

আবহাওয়া বিভাগ থেকে পূর্ণিমা ও বায়ুচাপরে আধিক্যের প্রভাবে দক্ষিণাঞ্চল সহ উপক’লীয় জেলা সমুহ ও বিচ্ছিন্ন দ্বীপ এবং চরাঞ্চল স্বভাবিক জোয়োরের চেয়ে ২-৩ ফুট উচ্চতার বায়ু তারিত জলোচ্ছসে প্লাবিত হবার আশংকার কথা বলা হয়েছে। বরিশাল সহ দক্ষিণাঞ্চলের নদী বন্দরসমুহকে এখনো ২ নম্বর সতর্ক সংকেতের আওতায় রাখা হয়েছে। পয়রা বন্দরেও ৩ নম্বর স্থানীয় সতর্ক সংকেত বহাল রয়েছে। গত কয়েকদিনের মাঝারী বর্ষনের সাথে নগরীর পাশ^বর্তি কির্তনখোলা নদীর পানি নগরীতে প্রবেস করে বেশ কিছু এলাকা এখনো প্লাবিত। নগরীর কয়েকটি ব্যাস্ততম সড়কেও গত তিন দিন ধরে পানি আটকে আছে।

এদিকে ফুসে ওঠা সাগরের জোয়ারের সাথে পূবালী হাওয়ায় দক্ষিণাঞ্চলের বিস্তির্ণ এলাকা প্লাবনের পাশাপাশি এ অঞ্চলের ২৪টি ফেরি সেক্টরের ৪৮টি ঘাটের বেশীরভাগই জোয়ারের পানির তলায় চলে যাচ্ছে। এসব ফেরি ঘাটে দিনের বেশীরভাগ সময়ই যানাবাহন পারাপার বন্ধ থাকছে। সবচেয়ে ঝুকিপূর্ণ অবস্থা তৈরী হয়েছে বরিশালÑভোলাÑলক্ষ্ণীপুর-চট্টগ্রাম জাতীয় মহাসড়কের ইলিশা ও লাহারহাট ঘাটে। মেঘনা ও তেতুলিয়ার জোয়ারে এসব ফেরি ঘাট দিয়ে যানবাহন ওঠানামাই করতে পারছেনা গত কয়েকদিন। বরিশাল-পটুয়াখালী-বরগুনা মহাসড়কের আমতলী ও মির্জাগঞ্জের পায়রাকুঞ্জ ফেরি সেক্টরের উভয় প্রান্তের ঘাটের অবস্থাও অত্যন্ত ঝুকিপূর্ণ। বরিশাল-বাউফলÑদশমিনা সড়কের বগা ফেরিঘাটও জোয়ারের পানিতে ঝুকিপূর্ণ অবস্থায় পৌছছে।

এসব ঘাটের মধ্যে ইলিশা ও লাহারহাটে বিআইডব্লিউটিসি ফেরি পরিচালন করলেও ঘাটগুলো সচল রাখার দায়িত্ব বিআইডবিøউটিএ’র। এ অঞ্চলের অপর ২২টি ফেরি সেক্টর সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তরের। এসব ঘাট সচল রাখা সহ ফেরি পরিচালনের দায়িত্ব সড়ক বিভাগের হলেও ফেরি ও পন্টুন সমুহ মেরামত এবং রক্ষনাক্ষেনের দায়িত্ব ফেরি বিভাগের। কিন্তু পন্টুন, গ্যাংওয়ে ও ফেরি সমুহ সচল থাকলেও জোয়ারে ফেরি ঘাট প্লাবিত হওয়ায় গত কয়েকদিন ধরেই ২৪টি ফেরি সেক্টরের বেশীরভাগেই যানবাহন পারপার ব্যাহত হচ্ছে।

তবে ঝুকিপূর্ণ ঘাটগুলোতে বর্তমানে যে স্বল্পদৈর্ঘের গ্যাংওয়ে ব্যাবহার হচ্ছে, তার পরিবর্তে নুন্যতম ৬০ ফুট লম্বা গ্যাংওয়ে প্রতিস্থাপন করলে এ বিরূপ পরিস্থিতি কিছুটা হলেও এড়ান সম্ভব হতে পারে বলে মনে করছেন কারিগড়ি বিশেষজ্ঞগন। বিষয়টি নিয়ে সড়ক অধিদপ্তদরের বরিশাল যান্ত্রিক সার্কেলের তত্ববধায়ক প্রকৌশলী কোন মন্তব্য না করলেও সম্ভব সব কিছু করা হচ্ছে বলে জানিয়ে ফেরি চলাচল স্বাভাবিক রাখতে তাদের আন্তরিকতার ঘাটতি নেই বলেও জানান তিনি।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ