Inqilab Logo

শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ১৮ রমজান ১৪৪৫ হিজরী

কক্সবাজার হেফাজত সংবাদ সম্মেলন আরাকানে নির্বিচারে রোহিঙ্গা হত্যা বন্ধে বিশ্ব সম্প্রদায়ের জরুরি হস্তক্ষেপ কামনা

প্রকাশের সময় : ২ ডিসেম্বর, ২০১৬, ১২:০০ এএম | আপডেট : ২:৫৮ এএম, ২ ডিসেম্বর, ২০১৬

কক্সবাজার অফিস : প্রায় দেড় মাস ধরে চলমান মিয়ানমারের আরাকানে নিরীহ মুসলমানদের নির্বিচারে হত্যা, ধর্ষণ, লুটতরাজ বন্ধে বাংলাদেশ সরকারের মাধ্যমে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের জরুরি হস্তক্ষেপ কামনা করেছে কক্সবাজার হেফাজতে ইসলাম। গতকাল এক সংবাদ সম্মেলনে ৫ দফা দাবির মাধ্যমে হেফাজত নেতৃবৃন্দ আন্তর্জাতিক এই হস্তক্ষেপ কামনা করেন।
বৃহস্পতিবার সকালে কক্সবাজার শহরের এক আবাসিক হোটেলের সম্মেলন কক্ষে অয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে সংগঠনটির কক্সবাজার জেলা শাখার পক্ষ থেকে দাবিসমূহ পেশ করা হয় কক্সবাজার জেলা সেক্রেটারি মাওলানা ইয়াসীন হাবিব।
সংবাদ সম্মেলনে হেফাজত নেতৃবৃন্দ বলেন, আন্তর্জাতিক সংস্থা ও বিশ্ব নেতৃবৃন্দের সাথে আলোচনার মাধ্যমে বাংলাদেশ সরকার কূটনৈতিক চাপ প্রয়োগ করে রোহিঙ্গা মুসলিম নিধন বন্ধে কার্যকর ভূমিকা পালন করতে পারে।
হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশ কক্সবাজার জেলা সভাপতি মাওলানা আবুল হাসানের সভাপতিত্বে সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পেশ করেন সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক মাওলানা ইয়াছিন হাবিব।
লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, আমাদের পার্শ্ববর্তী দেশ মিয়ানমারে সামরিক বাহিনী ও উগ্রবাদী মগ দস্যু কর্তৃক আরাকানের নিরীহ মুসলমানদের ওপর ইতিহাসের বর্বরতম হত্যাযজ্ঞ চালানো হচ্ছে। তারা মসজিদ-মাদ্রাসা জ্বালিয়ে দেয়া, লুটতরাজসহ স্মরণকালের ভয়াবহ নির্যাতন, নিপীড়ন অব্যাহত রেখেছে। যা জাহেলী যুগের চরম বর্বরতাকেও হার মানায়। এই পৈশাচিক নির্যাতনের শিকার হয়ে সেখানকার হাজার হাজার শিশুসহ অসংখ্য মুসলিম নারী-পুরুষ তাদের মা-বাবা, আত্মীয়-স্বজন ও বসতবাড়ি হারিয়ে আশ্রয়হীন অবস্থায় অনাহারে-অর্ধাহারে মানবেতর জীবন-যাপন করছে। মুসলানদের রক্ত স্রোতে ভাসছে আরাকান। সৃষ্টি হয়েছে ভয়াবহ মানবিক বিপর্র্যয়। আরাকানের মজলুম মুসলমানদের আর্তনাদে আকাশ-বাতাস ভারি হয়ে উঠেছে।
সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, আরাকানে এরকম মুসলিম নিধন ও নির্মম নির্যাতনের কাহিনী অনেক পুরনো। মুসলিম উৎখাতের উদ্দেশ্যে মিয়ানমারের আরাকানে ১৯৩৭ ইং থেকে ২০১২-১৩ ইং সাল পর্যন্ত ১০০টিরও অধিক ছোট-বড় আকারের হত্যাযজ্ঞ সংঘটিত হয়। নানা ঠুনকো অজুহাতে মিয়ানমার সরকারের পৃষ্ঠপোষকতায় মগ সন্ত্রাসীরা এহেন নরকীয় তাÐবের জন্ম দিয়ে হত্যার রাজত্ব কায়েম করে। মুসলমানদের উপর চলমান ভয়াবহ হত্যাযজ্ঞও তারই ধারাবাহিকতা মাত্র। মিয়ানমারের সামরিক বাহিনী ও উগ্রবাদী মগ দস্যুরা মুসলমানদেরকে জবাই করে হত্যা করেছে। মুসলমান হিসেবে পরিচয় পেলেই হায়েনার মতো ঝাঁপিয়ে পড়ে তাদেরকে হত্যা করে লাশ সাগরে ভাসিয়ে দিচ্ছে। জ্বালিয়ে দিচ্ছে মসজিদ-মাদ্রাসাসহ মুসলমানদের অসংখ্য বাড়ি-ঘর। মুসলিম তরুণীদের অপহরণ করে নিয়ে গিয়ে ধর্ষণ করছে সেনা-পুলিশ ও দস্যুরা।
মাওলানা হাফেজ মুহাম্মদ আবুল মঞ্জুুর-এর পরিচালনায় সংবাদ সম্মেলনে বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেন হেফাজতের জেলা সহ-সভাপতি মাওলানা হাফেজ ছালামত উল্লাহ, রামু রাজারকূল আজিজুল উলুম মাদরাসা পরিচালক মাওলানা মুহছেন শরীফ।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন হেফাজতের জেলা সহ-সভাপতি মাওলানা মোহাম্মদ আলী, মাওলানা নুরুল আলম আল মামুন, অর্থ সম্পাদক মাওলানা হাফেজ মুবিনুল হক, প্রচার সম্পাদক মাওলানা আবদুস ছালাম কুদছী, জেলা ইমাম পরিষদের সাধারণ সম্পাদক মাওলানা হাফেজ ইউনুছ ফরাজি প্রমুখ।



 

Show all comments
  • ৩ ডিসেম্বর, ২০১৬, ৮:১৭ পিএম says : 0
    আমি সরকার মহোদয়কে সবিনয় অনুরোধ করব, কুটনৈতিক ভাবে মায়ানমার সরকারকে চাপ প্রয়োগ করা র জন্য।
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ