Inqilab Logo

মঙ্গলবার, ১৬ এপ্রিল ২০২৪, ০৩ বৈশাখ ১৪৩১, ০৬ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

নান্দাইল উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে অহরহ চুরি ঘটনায় আতঙ্কিত সেবাপ্রার্থীরা

নান্দাইল (মযমনসিংহ) সংবাদদাতা | প্রকাশের সময় : ৩ অক্টোবর, ২০২২, ৫:০২ পিএম

ময়মনসিংহের নান্দাইলে উপজেলা সদরে অবস্থিত ৫০ শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতালটি প্রায় ৫ লাখ মানুষের স্বাস্থ্য সেবার একমাত্র ভরসাস্থল। আর এই হাসপাতালে সেবা নিতে এসে দিনদুপুরে প্রতিনিয়ত টাকা-পয়সা সহ স্বর্ণালংকার চুরি চিনতাইয়ের শিকার হচ্ছেন সেবাগ্রহীতারা। বেশ কিছু দিন যাবত এ চোর চক্রটি সেবাপ্রার্থীদের অজান্তেই হাতিয়ে নিচ্ছে অর্থ-সম্পদ। প্রতিদিনই হাসপাতালের আউটডোরে টিকেট এর জন্য দাঁড়িয়ে থাকা লোকজন তথা সেবা গ্রহিতাদের সাথে মিশে গিয়ে চুরি কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে। এছাড়া হাসপাতালের ইনডোরে থাকা রোগী ও রোগীর স্বজনদের সাথে থাকা টাকা-পয়সার চুরি করে চক্রটি। রোববার হাসপাতালের সামনে দাঁড়িয়ে রহিমা খাতুন নামে এক নারীর অঝোরে কান্না করছিল। কান্নার কারণ জানতে চাইলে সে বলে নিজের চিকিৎসার জন্য অল্প করে ৫০০ টাকা যোগাড় করেছিলাম হাসপাতালে আসতেই লোকজনের ভিড়ে টাকা গুলো চুরি হয়ে গেছে। রহিমা উপজেলার চন্ডিপাশা গ্রামের মৃত হাফিজ উদ্দিনের স্ত্রী। গাংগাইল ইউনিয়নের মধ্যগয়েশপুর গ্রামের মতির মিয়ার স্ত্রী করোনা আক্তার তাঁর মেয়ের চিকিৎসা সেবা নিতে এসে টিকেটের জন্য লাইনে দাড়িঁয়েই ১৪শত টাকা চুরি হয়ে গেছে। কে বা কারা চুরি করেছে তিনি তা বলতে পারছেন না। শুধু তাই নয় একই দিন মধ্যাহ্ন ভোজের সময় সেবা নিতে আসা অজ্ঞাত আরো ২ মহিলার নগদ ৩ হাজার টাকা ও স্বর্ণালংকার চুরি করে নিয়ে চোর চক্রটি। গত কিছু পূর্বে মোয়াজ্জেমপুর ইউনিয়নের কৃষ্ণচন্দ্রপুর গ্রামের আঃ আজিজের স্ত্রী মদিনা আক্তার টিকেটের জন্য লাইনে দাঁড়িছিল। পরক্ষণেই ভ্যানেটি ব্যাগে হাত দিয়ে দেখতে পায় তার সাথে থাকা ৫ হাজার টাকা চুরি হয়ে গেছে।এসব ঘটনায় আতঙ্কিত হয়ে পড়েছে সেবাগ্রহীতারা। তবে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ সেবা গ্রহিতাদের নিরাপত্তা নিশ্চিতে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহন না করায় নিরাপত্তাহীনতায় ভোগছে সেবা নিতে আসা সাধারন মানুষ। যে কোন সময় হাসপাতালে সিন্ডিকেট চোর চক্রের খপ্পরের শিকার হচ্ছেন তারা। খোঁজ নিয়ে জানাগেছে, হাসপাতালে ইনডোরে রোগীদের কয়েকটি ওয়ার্ডে সিসি ক্যামেরা থাকালেও আউটডোরের একটি মাত্র সিসি ক্যামরা রয়েছে তাও আবার অচল অবস্থায় পড়ে রয়েছে। তবে আউটডোরের সিসি ক্যামেরাটি কেন অচল তা নিয়ে প্রশ্ন তোলেছেন সেবাপ্রার্থীরা। এ অবস্থার জন্য সেবা গ্রহিতারা হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে দায়ী করছে। কারন আগে এরকম চুরি-ছিনতাই ছিলনা। হঠাৎই কেন হাসপাতালে চুরি-ছিনতাই বৃদ্ধি পেয়েছে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে হাসপাতালে চুরির ঘটনা নিয়ে সুশীল সমাজের ব্যক্তিগণ তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানায়। গত কয়েকদিন আগে হাসপাতালের সাধারন জনগণের জন্য দেওয়া সিলিং ফ্যান সরিয়ে সেবা প্রদানকারীর মাথার উপর সিলিং ফ্যান ঝুলিয়ে রাখা হয়েছে। অপরিষ্কার ও অপরিচ্ছনতা সহ এ ধরনের অনেক অভিযোগ রয়েছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে। এ দিকে প্রতি মাসে হাসপাতাল ব্যবস্থাপনা কমিটির সভা অনুষ্ঠিত হয়ে থাকে। তবুও কেন এমন অবব্যস্থপনা তা নিয়ে প্রশ্ন তোলেছেন সাধারণ মানুষ। এ ব্যাপারে নান্দাইল উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মো. মাহমুদুর রশীদ জানান, আমি যথাসাধ্য চেষ্টা করছি, সাধারন মানুষ যেন সঠিক চিকিৎসা সেবা পায়। আর হাসপাতাল মনিটরিংয়ের জন্য লাগানো সিসি ক্যামেরা রয়েছে। তবে টেকনিয়াশান ও যান্ত্রিক ত্রুটির কারনে একটু ব্যাঘাত করছে। পাশাপাশি হাসপাতালে জনবল সংকট থাকা এটাও একটা অন্যতম কারন হয়ে দাড়িয়েছে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ