Inqilab Logo

শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৬ বৈশাখ ১৪৩১, ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

চৌদ্দগ্রামের বেকারিগুলোতে অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে তৈরি হয় খাবার সামগ্রী

| প্রকাশের সময় : ১০ ডিসেম্বর, ২০১৬, ১২:০০ এএম

চৌদ্দগ্রাম (কুমিল্লা) উপজেলা সংবাদদাতা : কুমিল্লার চৌদ্দগ্রাম উপজেলার অধিকাংশ বেকারিতে খাবার সামগ্রী তৈরি হচ্ছে নোংরা ও অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে। আর তারা কেকতৈরিতে ব্যবহার করছে ভারত থেকে আনা কচ্ছপের ডিম। আবার অনেক বেকারিতে আবার পচা ডিমও ব্যবহারের অভিযোগ রয়েছে। আর এই সকল অস্বাস্থ্যকর খাবার সামগ্রী খেয়ে ক্রেতারা বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হচ্ছে। উপজেলা সদরে রহমানিয়া বেকারিতে প্রকাশ্য দিবালোকে পচা ডিম আর নোংরা পরিবেশে তৈরি করা হচ্ছে কেকসহ বিভিন্ন বেকারি সামগ্রী। চৌদ্দগ্রাম থানা রোডে অবস্থিত এ বেকারিতে প্রতিদিন হাজার হাজার পচা ডিম দিয়ে কেক তৈরি করা হলেও যেন দেখার কেউ নেই। এ সময় সাংবাদিকরা থানা পুলিশকে খবর দিলে পুলিশ এসে বেকারির মালিক আবদুর রহমানকে আটক করে থানায় নিয়ে আসে পরে ভ্রাম্যমাণ আদালত তাকে ৩০ হাজার টাকা জরিমানা করে ছেড়ে দেয়। সরেজমিন উপজেলার পৌর সভার বিসমিল্লা বেকারিতে গিয়ে দেখা গেছে, ওই বেকারিতে নোংরা পরিবেশে  শ্রমিকরা গ্লাবস ছাড়াই খালি হাতে ডিম ভেঙে বালতি ভর্তি করছে। ডিমগুলো কিসের জানতে চাইলে তারা কোন জবাব দেয়নি। এ ছাড়াও ময়লা-আবর্জনার মধ্যে তৈরি হচ্ছে মিষ্টি। মেসানো হচ্ছে ক্ষতিকারক নানা ধরনের রং। ব্যবহার করা হচ্ছে নষ্ট ও পুরাতন শিরা। এর কিছুক্ষণ পর এক শ্রমিক পচা ডিম ভাঙছে প্রথমে কিছু বুঝতে না পারলেও সাংবাদিক পরিচয় পাওয়ার পর তারা পালানোর চেষ্টা করে। এরপরে অনেক অনুনয়-বিনয় করে তাদের কোন ক্ষতি হবে না আশ্বাস দেয়ার পর তারা কথা বলে। ওই বেকারিতে ১৫ জন শ্রমিক কাজ করে। প্রতিদিন ২-৩ হাজার ডিম লাগে বলে তারা জানায়। এছাড়া আর কিছু বলতে রাজি হয়নি তারা। পরে পাশের আরেক জনের সাথে নাম প্রকাশ না করার শর্তে কথা বললে তিনি জানান, উপজেলার ছুপুয়া এলাকায় অবস্থিত সিপি বাংলাদেশ নামের মুরগির বাচ্চা ফুটানোর হ্যাচারি থেকে বাদ পড়া (বাচ্চা না ফুটানো) তথা পচা ডিমগুলো অল্প দামে ক্রয় করে নিয়ে আসে। প্রত্যেকটি ডিম মাত্র দেড়-২ টাকায় ক্রয় করা যায় বলে তিনি জানান। এছাড়া পচা ডিমের কেক দেখতে সুন্দর দেখায় বলে ক্রেতারাও সহজে আকৃষ্ট হয়ে যায়। ইতোপূর্বে উপজেলা নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের নেতৃত্বে ভ্রাম্যমাণ আদালত বেশ কয়েক বার অভিযান চালিয়ে বিসমিল্লা বেকারির মালিক আবদুল হালিম ও রহমান বেকারির মালিক আবদুর রহমানের অর্থদ-ের জরিমানা করলেও তার স্বভাবের কোন পরিবর্তন হয়নি। মানুষরে জন্য ক্ষতিকর এ খাবার তৈরি থেকে বিরত থাকবে বার বার অঙ্গীকার করলেও চোর না শোনে ধর্মের দোহাই। চৌদ্দগ্রাম হাসপাতালের শিশু বিশেষজ্ঞ ডাঃ ফারুক আহমেদ বলেন, পচা ডিমের তৈরি খাদ্যদ্রব্য খাওয়ার পর ব্যকটেরিয়া সৃষ্টি হয়ে ডায়রিয়া, আমাশয়সহ পেটের পিড়াজনিত বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হতে পারে। এসব খাদ্য নিয়মিত খাওয়ার কারণে স্বাস্থ্যহানী বা দীর্ঘমেয়াদি রোগে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। এভাবে উপজেলার প্রায় শতাধিক বেকারিতে পচা ডিম ও নোংরা পরিবেশে খাবার তৈরি হচ্ছে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ