পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
নূরুল ইসলাম : ঢাকা-চট্টগ্রাম রেলপথে ট্রেনের গতি বাড়ছে। কমছে রানিং টাইম। এ মাস থেকেই ঢাকা-চট্টগ্রাম রেলপথে চলাচলকারী বিরতিহীন ট্রেনের রানিং টাইম কমিয়ে ৫ ঘণ্টা করা হচ্ছে। আগামী বছরের ফেব্রুয়ারি থেকে এই সময় আরও আধা ঘণ্টা কমিয়ে সাড়ে চার ঘণ্টায় নামিয়ে আনা হবে বলে রেলওয়ে সূত্রে জানা গেছে। ইতোমধ্যে রেল ভবন থেকে এ সংক্রান্ত একটি পরিপত্র জারি করা হয়েছে। এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে রেলমন্ত্রী মোঃ মুজিবুল হক ইনকিলাবকে বলেন, উন্নয়নের পথে এগিয়ে যাচ্ছে রেলওয়ে। সেই উন্নয়নের ধারাবাহিকতায় রেলকে গণপরিবহনে রুপান্তর করার কাজ চলছে, যার সুফল পেতে শুরু করেছে জনগণ। আগামীতে আরও সুফল আসবে ইনশাল্লাহ।
রেলওয়ে সূত্র জানায়, গত ৩০ নভেম্বর রেলভবন থেকে ঢাকা-চট্টগ্রাম রেলপথে চলাচলকারী আন্তঃনগর ট্রেনের পরিচালন সময় (রানিং টাইম) চলতি ডিসেম্বরের মধ্যে ৫ ঘণ্টা এবং আগামী ফেব্রুয়ারি মাস থেকে সাড়ে চার ঘণ্টায় নামিয়ে আনতে একটি পরিপত্র জারি করা হয়। বিষয়টি নিয়ে ইতোমধ্যে রেলওয়ের পূর্বাঞ্চলের কর্মকর্তারা মিটিং সিটিং করেছেন। সূত্র জানায়, পূর্বাঞ্চলের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা কিছুতেই ট্রেনের গতি বাড়াতে চাচ্ছেন তা। নানা যুক্তি দেখিয়ে তারা ঢাকা-চট্টগ্রাম রেলপথের রানিং টাইম ২০-২৫ মিনিট কমানোর পক্ষে। তাও আবার তা সব আন্তঃনগর ট্রেনের জন্য নয়। শুধুমাত্র বিরতিহীন সুবর্ণ ও সোনারবাংলা এক্সপ্রেস ট্রেনের ক্ষেত্রে ২০-২৫ মিনিট কমাতে চান তারা। বিরতিহীন এই ট্রেন দুটি বর্তমানে ৫ ঘণ্টা ৪০ মিনিট সময় নিয়ে গন্তব্যে পৌঁছে।
রেলওয়ে সূত্র জানায়, মেঘা প্রকল্পের অংশ হিসেবে প্রায় চার হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে ঢাকা-চট্টগ্রাম রেলপথের বেশিরভাগ অংশ ডাবল লাইনে উন্নীত করা হয়েছে। বাকী আছে ভৈরব ও তিতাস সেতুর অংশ। আগামী বছরের এপ্রিল মাসের মধ্যে এই দুই সেতুতেও ডাবল লাইন নির্মাণকাজ শেষ হবে। এতে করে শুধুমাত্র এই দুই সেতুর কারণে রানিং টাইম ৮ থেকে ১০ মিনিট কমে যাবে বলে রেলওয়ের সংশ্লিষ্ট বিভাগের প্রকৌশলীরা মনে করেন। সূত্র মতে, আগে যখন সিঙ্গেল লাইন ছিল তখন ১২ বছরের পুরাতন কোচ, ২৫ বছরের পুরাতন লোকো (ইঞ্জিন) দিয়ে বিরতিহীন সুবর্ণ ঢাকা থেকে চট্টগ্রামে পৌঁছাতো সোয়া ৫ ঘণ্টায়। তখন সুবর্ণ’র গতিবেগ ছিল ঘণ্টায় ৬০ থেকে ৭২ কিলোমিটার। বর্তমানের কোরিয়ান ইঞ্জিনের বয়স মাত্র ৬ বছর। কোচগুলো সবেমাত্র আনা হয়েছে। ডাবল লাইন। তারপরেও ট্রেনের গতিবেগ ৫০ থেকে ৬৫ কিলোমিটার। হাজার হাজার কোটি টাকা বিনিয়োগে রেললাইন, ইঞ্জিন, কোচ, সিগনালিং ব্যবস্থা সবকিছু উন্নত হওয়ার পরেও দিন দিন ট্রেনের গতিবেগ কমায় স্বাভাবিকভাবেই প্রশ্ন উঠেছে।
সূত্র জানায়, রেলওয়ের পূর্বাঞ্চলের কর্মকর্তারা মনে করেন, ঢাকা-চট্টগ্রাম রেলপথে বন্ধ স্টেশনগুলো চালু না করা পর্যন্ত ট্রেনের রানিং টাইম কমানো সম্ভব নয়। এই রেলপথে ১৪টি স্টেশন পুরোপুরি বন্ধ রয়েছে। এগুলো হলো, ভাটিয়ারী, বাড়বকু-, বারৈয়াঢালা, মিরসরাই, মাস্তাননগর, মুহুরীগঞ্জ, কালীদাহ, শর্শদী, নাওটি, আলীশহর, ময়নামতি, শ্রীনিধি, ঘোড়াশাল ও আমিরগঞ্জ। আংশিক বন্ধ রয়েছে ফেনীর ফাজিলপুর স্টেশন। নিরাপত্তা ও লুপলাইনের কারণে স্টেশনগুলো অতিক্রম করার সময় ট্রেনের গতি কমিয়ে আনতে হয়। সে কারণে সময় বেশি লাগে। তবে আলাপকালে এই রেলপথের ট্রেন চালকরা জানান, বন্ধ স্টেশনগুলোতে তারা ৪০-৪৫ কিলোমিটার গতিতে ট্রেন চালিয়ে যান। রানিং টাইমে এটা খুব বেশি প্রভাব ফেলে না। একজন রেল বিশেষজ্ঞের মতে, বন্ধ স্টেশনের কারণে ট্রেনের রানিং টাইম কমানো না গেলে সেগুলো খুলে দিলেই তো হয়। এতোদিন বলা হয়েছে, জনবলের অভাবে বন্ধ স্টেশনগুলো চালু করা যাচ্ছে না। বিশেষ করে স্টেশন মাস্টার না থাকায় রেল কর্তৃপক্ষ পেরে উঠছে না। অথচ কিছুদিন আগে ২৭৫ জন সহকারী স্টেশন মাস্টার পদে নিয়োগ দেয়া শেষে তাদেরকে পদায়নও করা হয়েছে। মাত্র ১৪ জনকে নিয়োগ দিলেই তো এই সমস্যার সমাধান করা যায়। ওই বিশেষজ্ঞের মতে, তা যদি সম্ভব না হয় তবে বন্ধ স্টেশনগুলোর লুপলাইন খুলে ফেলে সেগুলো সরাসরি করে দিয়েও ট্রেনের গতি বাড়ানো যায়। পরে যখন স্টেশন মাস্টার নিয়োগ করা হবে তখন সেগুলোতে আবার লুপলাইন লাগানো যাবে। রেলভবনের একজন কর্মকর্তা জানান, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে নির্দেশ এসেছে ঢাকা-চট্টগ্রাম রেলপথের ট্রেনের রানিং টাইম কমানোর জন্য। এখানে পূর্বাঞ্চলের কর্মকর্তারা যতোই যুক্তি দেখান না কেনো, কাজ হবে না। তিনি বলেন, আমাদের মন্ত্রী মহোদয় যাত্রীদের কল্যাণের পক্ষে। দিন-রাত তিনি রেল নিয়ে ভাবেন। যাত্রীরা কিভাবে স্বল্প সময়ে উন্নত পরিবেশে ট্রেনে ভ্রমণ করবেন সে চিন্তা করেন সারাক্ষণ। সুতরাং মন্ত্রী মহোদয়ের ইচ্ছারই প্রতিফলন ঘটবেÑ এটাই স্বাভাবিক। ওই কর্মকর্তা জানান, চলতি মাস থেকেই সুবর্ণ ও সোনারবাংলার রানিং টাইমে ৫ ঘণ্টায় নামিয়ে আনা হবে। ফেব্রুয়ারি থেকে আরও আধা ঘণ্টা কমিয়ে সাড়ে চার ঘণ্টা করা হবে। তিনি জানান, ইতোমধ্যে ঢাকা-রাজশাহী, ঢাকা-খুলনা, ঢাকা-দিনাজপুর, ঢাকা-নীলফামারী রেলপথের আন্তঃনগর ট্রেনগুলোর রানিং টাইম কিছুটা কমানো হয়েছে। জানুয়ারি থেকে আরও কমানো হবে। তখন ব্রডগেজ ট্রেনের সর্বোচ্চ গতিবেগ ঘণ্টায় ৯৫ থেকে একশ’ কিলোমিটার করা হবে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।