Inqilab Logo

শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ০৭ বৈশাখ ১৪৩১, ১০ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

শ্রীলঙ্কাকে হারিয়ে সেমিতে ইংল্যান্ড

অস্ট্রেলিয়ার বিদায়

জাহেদ খোকন | প্রকাশের সময় : ৬ নভেম্বর, ২০২২, ১২:০০ এএম

টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের সুপার টুয়েলভ পর্বে গ্রুপ-১ এ নিজেদের পঞ্চম ও শেষ ম্যাচে শ্রীলঙ্কাকে হারিয়ে দ্বিতীয় দল হিসেবে সেমিফাইনালে জায়গা করে নিলো ইংল্যান্ড। ইংলিশদের এই জয়ে এবারের বিশ্বকাপ থেকে বিদায় নিতে হলোÑ বর্তমান চ্যাম্পিয়ন স্বাগতিক অস্ট্রেলিয়াকে। গতকাল সিডনি ক্রিকেট গ্রাউন্ডে নিজেদের মহাগুরুত্বপূর্ণ ম্যাচে ইংল্যান্ড ৪ উইকেটে হারায় লঙ্কানদের।

টস জিতে প্রথমে ব্যাট করতে নেমে নির্ধারিত ২০ ওভারে ৮ উইকেটে ১৪১ রান করে শ্রীলঙ্কা। জবাবে জয়ের জন্য ১৪২ রানের লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে দুই বল হাতে রেখে ৬ উইকেটে ১৪৪ রান তুলে জয়ের বন্দরে পৌঁছে যায় ইংল্যান্ড। ইংলিশরা ম্যাচ জেতায় গ্রুপ-১ সব খেলা শেষে সমান ৭ পয়েন্ট করে পেয়েছে নিউজিল্যান্ড-ইংল্যান্ড ও অস্ট্রেলিয়া। তবে রানরেটে এগিয়ে থাকায় পয়েন্ট টেবিলের শীর্ষ দুই দল যথাক্রমে নিউজিল্যান্ড ও ইংল্যান্ড সেমিফাইনালে খেলার যোগ্যতা অর্জন করেছে। নিউজিল্যান্ডের রানরেট ২.১১৩। তারা গ্রুপ সেরা হয়েছে। আর ০.৪৭৩ রানরেট নিয়ে গ্রুপ রানার্সআপ হয়ে শেষ চারে জায়গা পেয়েছে ইংলিশরা। অজিদের রানরেট -০.১৭৩। গ্রুপে তারা তৃতীয়স্থান পেলেও ছিটকে গেছে বিশ্বকাপ থেকে। এই গ্রুপে এশিয়ার চ্যাম্পিয়ন শ্রীলঙ্কা ৪, আয়ারল্যান্ড ৩ ও আফগানিস্তা ২ পয়েন্ট করে পেয়ে বিশ্বকাপ মিশন শেষ করল। জিতলেই সেমিফাইনাল, আর হারলে বাদ। এমন সমীকরণ মাথায় নিয়ে কাল লঙ্কানদের মুখোমুখি হয়েছিল ইংলিশরা। প্রথমে ব্যাট করতে নেমে শুরুতেই ইংল্যান্ডের বোলারদের চাপে ফেলেন শ্রীলঙ্কার দুই ওপেনার পাথুম নিশাঙ্কা ও কুশল মেন্ডিস। চার ওভারে ৩৯ রান তুলে বিচ্ছিন্ন হয় এই জুটি। ১৪ বলে ১৮ রান করা মেন্ডিসকে ফিরিয়ে ইংল্যান্ডকে প্রথম সাফল্য এনে দেন পেসার ক্রিস ওকস। সতীর্থ ফিরলেও, পাওয়ার প্লে-র শেষ ওভারে ১৩ রান তুলে নেন নিশাঙ্কা। এতে ছয় ওভারে ১ উইকেটে ৫২ রান পায় লঙ্কানরা। তবে পাওয়ার প্লে শেষে রানের গতি কমে যাওয়ায় ১২ ওভারে শ্রীলঙ্কার সংগ্রহ দাঁড়ায় ৩ উইকেটে ৮৯ রান। নবম ওভারে ব্যক্তিগত ৯ রানে ধনাঞ্জয়া ডি সিলভা আউট হন স্যাম কারানের বলে। ১১তম ওভারে চারিথা আসালঙ্কাকে বিদায় করেন বেন স্টোকস। ফেরার আগে ৯ বলে ৮ রান করেন আসালঙ্কা। ইংলিশ বোলারদের তোপে মিডলঅর্ডার ব্যাটাররা ব্যর্থ হলেও অন্য প্রান্তে একাই লড়ে যান নিশাঙ্কা। ১২তম ওভারের শেষ বলে এবারের আসরে দ্বিতীয় ও ক্যারিয়ারের নবম হাফসেঞ্চুরি তুলে নেন তিনি। হাফসেঞ্চুরি পেতে নিশাঙ্কা খেলেন ৩৩ বল। ইনিংসের ১৬তম ওভারে স্পিনার আদিল রশিদ থামান নিশাঙ্কাকে। যিনি ইংল্যান্ডের পথের কাটা হয়ে দাঁড়িয়েছিলেন। আউট হওয়ার আগে ৪৫ বলে ২ চার ও ৫ ছক্কার মারে ৬৭ রান করেন নিশাঙ্কা। এই ইনিংস খেলার পথে টি-টোয়েন্টিতে ১ হাজার রানও পূর্ণ করেন তিনি। নিশাঙ্কার বিদায়ের পর লঙ্কান ব্যাটারদের চেপে ধরেন ইংল্যান্ডের বোলাররা। মার্ক উডের করা ইনিংসের শেষ ওভারে ৩ উইকেট হারায় শ্রীলঙ্কা। ফলে দুই ওপেনারের দুর্দান্ত শুরুর পরও শেষ পর্যন্ত দেড়শ’র আগেই নির্ধারিত ওভার শেষ করে তারা। ভানুকা রাজাপাকসে ২২ বলে ৩ চারে ২২ ও চামিকা করুনারত্নে শূন্য রানে উডের শিকার হন। আর রান আউট হন হাসারাঙ্গা ডি সিলভা। তিনি করেন ৯ বলে ১ চারের মারে ৯ রান। ইংল্যান্ডের উড তিন ওভার বল করে ২৬ রানে ৩টি উইকেট পান। চার ওভারে ১৬ রান খরচায় ১ উইকেট নেন আদিল রশিদ।

সেমিফাইনাল নিশ্চিত করতে মামুলী লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে দারুণ সূচনা এনে দেন ইংল্যান্ডের দুই ওপেনার অধিনায়ক জশ বাটলার ও অ্যালেক্স হেলস। পাওয়ার প্লে-তে ৭০ রান তুলেন তারা। এসময় দু’জনেই ৯টি চার ও ২টি ছক্কা মারেন। হেলস ১৯ বলে ৪২ ও বাটলার ১৮ বলে ২৫ রান করেন। লঙ্কান পেসার কাসুন রাজিথার করা পাওয়ার প্লে’র শেষ ওভারে ২০ রান নেন হেলস। অষ্টম ওভারে দলীয় ৭৫ রানে ভাঙে হেলস-বাটলার জুটি। তাদের আলাদা করেন হাসারাঙ্গা। ডিপ মিড উইকেটে বাটলারের দুর্দান্ত ক্যাচ নেন করুণারত্নে। ফেরার আগে ২ চার ও ১ ছক্কায় ২৮ রান করেন বাটলার। ১০ম ওভারে ইংল্যান্ড শিবিরে দ্বিতীয় আঘাত হানেন হাসারাঙ্গা। এবার হেলসকে বিদায় করেন তিনি। ৩০ বলে ৭ চার ও ১ ছয়ের মারে ৪৭ রানের দারুণ ইনিংস খেলে আউট হন হেলস। দলীয় ৮২ রানের মধ্যে দুই ওপেনারকে হারানোর পর মিডলঅর্ডারে দ্রুত ৩ উইকেট হারিয়ে ৫ উইকেটে ১১১ রান পায় ইংল্যান্ড। হ্যারি ব্রুক ও লিয়াম লিভিংস্টোন ৪ রান করে তুলেন। আর মঈন আলী আউট হন ১ রানে। ষষ্ঠ উইকেটে কারানকে সঙ্গে নিয়ে ২১ বলে ১৮ রান করে ইংল্যান্ডকে জয়ের পথে রাখেন তিন নম্বরে নামা বেন স্টোকস। ষষ্ঠ ব্যাটার হিসেবে নামা কারানকে আউট করে জুটি ভাঙ্গেন লঙ্কান পেসার লাহিরু কুমারা। ১৮ ওভারে দলীয় ১২৯ রানে ফেরার আগে কারান ১১ বলে করেন ৬। ফলে জয়ের জন্য শেষ দুই ওভারে ৪ উইকেট হাতে নিয়ে ১৩ রান দরকার পড়ে ইংল্যান্ডের। ১৯তম ওভারে ৮ রান নেন স্টোকস এবং ওকস। শেষ ওভারের চতুর্থ বলে ব্যাকওয়ার্ড পয়েন্ট দিয়ে বাউন্ডারি হাঁকিয়ে ইংল্যান্ডের জয় নিশ্চিত করার পাশাপাশি দলকে সেমিফাইনালে ওঠান ওকস। স্টোকস শেষ পর্যন্ত ৩৬ বলে ২ চারের মারে ৪২ এবং ওকস ৩ বলে ১ বাউন্ডারিতে ৫ রানে অপরাজিত থাকেন। ২টি করে উইকেট পান কুমারা, হাসারাঙ্গা ও ধনাঞ্জয়া। মিতব্যয়ী বোলিংয়ে ম্যাচ সেরা নির্বাচিত হন আদিল রশিদ।

আজকের খেলা
নেদারল্যান্ডস-দ.আফ্রিকা, ভোর ৬টা
বাংলাদেশ-পাকিস্তান, সকাল ১০টা
ভারত-জিম্বাবুয়ে, দুপুর ২টা



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: টি ২০ বিশ্বকাপ

১০ নভেম্বর, ২০২২

আরও
আরও পড়ুন
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ