Inqilab Logo

শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ০৭ বৈশাখ ১৪৩১, ১০ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

ইসি বিষবৃক্ষ রেখে ডালপালা ছেঁটেছে : সুজন সম্পাদক

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ৩ ডিসেম্বর, ২০২২, ৭:৫৬ পিএম

গাইবান্ধা-৫ আসনের উপনির্বাচনে অনিয়ম ও দুর্নীতি তদন্তে নির্বাচন কমিশন (ইসি) গঠিত কমিটি ‘নামকাওয়াস্ত তদন্ত’ করে বিষবৃক্ষ রেখে ডালপালা ছেঁটে ফেলেছে বলে মন্তব্য করেছেন সুশাসনের জন্য নাগরিকের (সুজন) সম্পাদক বদিউল আলম মজুমদার। শনিবার (৩ ডিসেম্বর) বিকেলে রংপুরে একটি অনুষ্ঠানে যোগদানের উদ্দেশ্যে এসে আরডিআরএস মিলনায়তনে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এ মন্তব্য করেন।

বদিউল আলম মজুমদার বলেন, গাইবান্ধা ৫-আসনের উপনির্বাচনে ইতিহাস সৃষ্টি হয়েছে। সেখানে প্রথমবারের মতো নির্বাচন কমিশন ভোটকেন্দ্রে সিসিটিভি ক্যামেরা স্থাপন করে যেভাবে অনিয়ম উৎখাত করেছে, তা একটি ইতিহাস। পুরো নির্বাচনী এলাকার নির্বাচন বাতিল করে তদন্ত কমিটি গঠন করাও ইতিহাস। তবে তদন্তে যা বেরিয়ে এসেছে, তা খুব একটা ইতিবাচক নয়। সেখানে রাঘববোয়ালরা ধরা ছোঁয়ার বাইরে থেকে গেল, ধরা পড়ল চুনোপুঁটিরা।

তিনি বলেন, দুর্নীতি বা অনিয়মের যে বিষবৃক্ষ সেটার ডালপালা ছেঁটে দেয়া হয়েছে কিন্তু বিষবৃক্ষটা ঠিকই আছে। এইখানে নির্বাচন কমিশন ব্যর্থ। তাদের দায়িত্ব সুষ্ঠু নিরপেক্ষ নির্বাচন করা। অথচ তারা তা করতে পারেনি। একটা তদন্ত করল কিন্তু কারা দায়ী সেটা বের করতে পারল না। তাহলে এটাতো নামকাওয়াস্তে তদন্ত। সুজন সম্পাদকের অভিযোগ, গাইবান্ধায় রাঘব-বোয়ালরা পার পেয়ে গেছেন। ইসির জালে আটকা পড়েছেন চুনোপুঁটিরা। এই নির্বাচন বার্তা দিয়েছে, যারা ক্ষমতাসীন বা রাঘববোয়াল তারা অন্যায় করেও সহজে পার পেয়ে যাবে।

অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন করতে ইভিএম কার্যকর নয় দাবি করে বদিউল আলম মজুমদার বলেন, এটা একটা দুর্বল এবং জালিয়াতির যন্ত্র। এই যন্ত্র দিয়ে নির্বাচন কমিশন যে ফলাফল চায়, তাই সম্ভব। এটাতে যাচাই-বাছাই, অডিট করা এবং ফলাফল পুনর্গণনা করার সুযোগ হবে না। ইভিএম ব্যবহার করে বাহিরের কেউ জালিয়াতি করতে পারবে না। তবে নির্বাচন কমিশনের যোগসাজশে স্যুট-কোট পরিহিতের দিয়ে জালিয়াতি করা সম্ভব। অর্থাৎ যারা বেড়া তারাই ক্ষেত খাবে।

ইভিএমে ভোট দেওয়া নিয়ে সাধারণ মানুষের আগ্রহ কম উল্লেখ করে তিনি বলেন, গত জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ৬টি আসনে ইভিএম এবং ২৯৪টিতে ব্যালেট পেপারের মাধ্যমে ভোট হয়েছে। এতে ব্যালেট পেপারে ৮১ শতাংশের মতো ভোট কাস্ট হয়। আর যেখানে ইভিএমে ভোট হয়েছিল, সেখানে ভোট কাস্ট ছিল ৫১ শতাংশ। সর্বশেষ কুমিল্লা সিটি করপোরেশনে আগের বারের চেয়ে এবার ইভিএমে নির্বাচন হওয়াতে ভোটের হার অনেক কম ছিল। এই যন্ত্র দিয়ে মানুষ ভোটাধিকার বঞ্চিত হয়। এটা ব্যবহারের কোনো যৌক্তিকতা নেই।

১০ ডিসেম্বর বিএনপির কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে সরকার দলীয়দের পাল্টা ‘খেলা হবে’ মন্তব্য সম্পর্কে বদিউল আলম মজুমদার বলেন, এখন যে উত্তেজনা সৃষ্টি হয়েছে, তা একটি গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রের সঙ্গে সংহতিপূর্ণ নয়। এটি কর্তৃত্ববাদী রাষ্ট্রের প্রতিফলন। আসলে কোন খেলা হবে সেটা আমরা নিজেরাও জানি না। রাজনীতি হচ্ছে জনকল্যাণের পেশা, মানুষের মঙ্গল করার পেশা। অথচ এটা এখন খেলাতে পরিণত করা হয়েছে। এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন সুজনের রংপুর মহানগরের সভাপতি ফখরুল আনাম বেঞ্জু, হাঙ্গার ও সুজনের রংপুর বিভাগীয় সমন্বয়কারী রাজেশ দে রাজু প্রমুখ।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ