Inqilab Logo

শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৬ বৈশাখ ১৪৩১, ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

সংবিধানের প্রদত্ত ক্ষমতা বলে গ্রহণযোগ্য ইসি গঠন করুন

প্রেসিডেন্টকে কাদের সিদ্দিকীর আহ্বান

প্রকাশের সময় : ২২ ডিসেম্বর, ২০১৬, ১২:০০ এএম | আপডেট : ১২:০৮ এএম, ২২ ডিসেম্বর, ২০১৬

স্টাফ রিপোর্টার : দশম জাতীয় সংসদ জনপ্রতিনিধিহীন অভিহিত করে এই সংসদে আইন প্রণয়ন নয়, প্রেসিডেন্টকে সংবিধানের প্রদত্ত ক্ষমতা বলে গ্রহণযোগ্য নির্বাচন কমিশন গঠনের আহ্বান জানিয়েছে সংসদের বাইরে থাকা কৃষক শ্রমিক জনতা লীগ।
নতুন ইসি গঠনে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে প্রেসিডেন্টের সংলাপের তৃতীয় দিনে গতকাল বুধবার বঙ্গভবনের দরবার হলে প্রেসিডেন্ট আব্দুুল হামিদের সাথে সংলাপে বসেন দলের চেয়ারম্যান বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকীর নেতৃত্বে  সংসদের বাইরে থাকা কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের ১২ নেতা।
কাজী রকিবউদ্দীন আহমদ নেতৃত্বাধীন বর্তমান নির্বাচন কমিশনের মেয়াদ শেষে আগামী ফেব্রুয়ারিতে দায়িত্ব নেবে নতুন ইসি। ওই কমিশনের অধীনেই ২০১৯ সালে একাদশ সংসদ নির্বাচন হবে।
ওই কমিশন গঠনের প্রক্রিয়া নিয়ে সংলাপে কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের পক্ষ থেকে একটি গ্রহণযোগ্য নির্বাচন কমিশন গঠনের নিজেদের ধারণা তুলে ধরেন কাদের সিদ্দিকী।
পরে বঙ্গভবনে গেইটে সাংবাদিকদের কাছে তিনি বলেন, মহামান্য প্রেসিডেন্টের আহ্বানে সাড়া দিয়ে তার সাথে কথা বলেছি। সংবিধানের ১১৮তম অনুচ্ছেদে যে কথা বলা হয়েছে, নির্বাচন কমিশন গঠনের প্রেসিডেন্টের কোনো বাধ্যবাধকতা নেই। তিনি স্বাধীন মুক্তভাবে নির্বাচন কমিশন গঠন করতে পারেন।  
বর্তমান সংসদে নির্বাচন কমিশন গঠনে আইন প্রণয়নে জাতীয় পার্টির প্রস্তাবের বিরোধিতা করে কাদের সিদ্দিকী বলেন, মনে হয় কালকে যারা দেখা করেছেন, অতি অল্প সময়ের মধ্যে সংসদের দ্বারা আইন প্রণয়ন করে নির্বাচন কমিশন গঠন করার কথা বলেছেন। আমরা এই সংসদকে জনসমর্থনহীন, জনগণের অনাস্থার সংসদ, যার ১৫৩ জন অনির্বাচিত, বাকিরা সামন্য ভোট পেয়েছেন। এই সংসদের দ্বারা কোনো আইনের প্রয়োজন নেই। আমরা প্রেসিডেন্টকে এটা বলেছি।  
বর্তমান নির্বাচন কমিশনের ভূমিকার সমালোচনা করে তিনি বলেন, আমরা বলেছি, মাছ পানিতে থাকে। ঠিক তেমনি নির্বাচন কমিশনের সাথে রাজনৈতিক দলের সম্পর্ক। বর্তমান নির্বাচন কমিশন কখনো রাজনৈতিক দলের সাথে কোনো কথা বলেননি, কখনো আলোচনা করেননি। আমরা এ-ও বলেছি, একটি গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র রাজনৈতিক দলের ওপর নির্ভরশীল। বছরে অন্তত দুইবার মহামান্য প্রেসিডেন্ট রাজনৈতিক দলগুলোর সাথে আনুষ্ঠানিক আলোচনা করুন, ঠিক তেমনি মাননীয় প্রধানমন্ত্রী করুন।
কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য নাসরিন কাদের সিদ্দকী, সাধারণ সম্পাদক হাবিবুর রহমান তালুকদার, যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক ইকবাল সিদ্দিকী, সাংগঠনিক সম্পাদক শফিকুল ইসলাম দেলোয়ার, কেন্দ্রীয় নেতা এম এ রশিদ, রফিকুল ইসলাম, আবুল হোসেন মল্লিক, হাবিবুন নবী সোহেল, রিফাতুল ইসলাম, ফরিদ আহমেদ ও মনোয়ারা বেগম উপস্থিত ছিলেন এ বৈঠকে।
বিকেল ৪টায় নেতৃবৃন্দকে নিয়ে কাদের সিদ্দিকী বঙ্গভবনে পৌঁছান। ৪৫ মিনিট সংলাপ শেষে বঙ্গভবন থেকে বেরিয়ে প্রধান ফটকের বাইরে তিনি সাংবাদিকদের সাথে কথা বলেন।
মিয়ানমারের অত্যাচারিত রোহিঙ্গাদের পাশে দাঁড়ানো ও তাদের সাময়িকভাবে আশ্রয় দেয়ার বিষয়টিও প্রেসিডেন্টের আলোচনায় তুলেছেন বলে কাদের সিদ্দিকী জানান।
প্রেসিডেন্টের সংলাপ কেমন হয়েছে প্রশ্ন করা হলে বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকী বলেন, প্রেসিডেন্ট একজন পোঁড় খাওয়া রাজনৈতিক। তার চালচলন, কথাবার্তা-ভাষা সবই রাজনৈতিক। আমরা রাজনৈতিক কর্মী হিসেবে তার কথা-বার্তায় সন্তুষ্ট। প্রেসিডেন্ট এই সংলাপের উদ্যোগ আমার কাছে মনে হয়েছে শতাংশ শত অংশ সততা আছে।
সার্চ কমিটি গঠনের বিষয়ে কোনো প্রস্তাব দিয়েছেন কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমরা সার্চ কমিটি গঠন করা হবে কি করা হবে না, এটা আমরা বলিনি। কারণ সংবিধানে যেটা বলা আছেÑ সেটা প্রেসিডেন্ট করতে পারেন। এটা সার্চ কমিটি গঠন করে করেন আমাদের কোনো আপত্তি থাকবে না। তিন যদি সব রাজনৈতিক দলের সাথে আলোচনা করে তার বিবেচনাপ্রসুত করেন, সেটাও আমরা সমর্থন করি।
সংসদের বাইরে থাকা বিএনপির সঙ্গে আলোচনার মধ্য দিয়ে  গত রোববার রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে রাষ্ট্রপ্রধান আব্দুল হামিদের এই সংলাপ শুরু হয়।
প্রথম দফায় গত ১২ ডিসেম্বর পাঁচটি দলকে আলোচনার জন্য দাওয়াত জানায় বঙ্গভবন। তার মধ্যে বিএনপি, জাতীয় পার্টি, এলডিপি ও কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের সাথে আলোচনায় বসেছেন প্রেসিডেন্ট। জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের (জাসদ) সঙ্গে আলোচনার নতুন তারিখ ২৭ ডিসেম্বর নির্ধারণ করা হয়েছে।
দ্বিতীয় দফায় ২৭ ডিসেম্বর বিকেল ৪টায় সরকারের  শরিক ওয়ার্কার্স পার্টি,  ২৯ ডিসেম্বর বিকেল ৩টায় বাংলাদেশ ন্যশনালিস্ট ফ্রন্ট (বিএনএফ) এবং একই দিন সাড়ে ৪টায় ইসলামী ঐক্যজোট, ২ জানুয়ারি বিকেল ৪টায়  জাতীয় পার্টি (জেপি), ৩ জানুয়ারি বিকেল ৩টায় বাংলাদেশ তরিকত ফেডারেশন এবং সাড়ে ৪টায় বাংলাদেশ জাতীয় পার্টির (বিজেপি) সঙ্গে আলোচনায় বসবেন প্রেসিডেন্ট।



 

Show all comments
  • Asma ২২ ডিসেম্বর, ২০১৬, ২:৩২ এএম says : 0
    i agree with him
    Total Reply(0) Reply
  • Mohammed Shah Alam Khan ২২ ডিসেম্বর, ২০১৬, ৪:৪২ এএম says : 0
    কৃষক শ্রমিক জনতা লীগ দলের চেয়ারম্যান বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকী বিজ্ঞ রাজনীতিবিদ ও একজন বিশিষ্ঠ মুক্তিযোদ্ধার মতই কথা বলেছেন। তিনি যেমন মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে বাঁচিয়ে রাখা সাথে সাথে বিরুধী দলের মতই বক্তব্য দিয়েছেন। তিনি রাষ্ট্রপতিকে সংবিধান অনুযায়ী নির্বাচনের অনুরোধ জানিয়ে যদিও একটি ধারার কথা বলেছেন কিন্তু নির্বাচন কমিটি এক ধারায় গঠিত হয়না এটাও সত্য। তবে এক যায়গায় তিনি বলেছেন বর্তমান সংসদ গ্রহণ যোগ্য নয় কারন ১৫৩ জন সাংসদ বিনাপ্রতিদন্দিতায় নির্বাচিত, এটা তিনি সঠিক বলেন নি। রাজনীতি করার জন্য মাঠে ময়দানে মিথ্যা আশ্বাস যদিও ধর্ম বিরুধি তারপরও সবাই বলছে। কিন্তু তিনি ভুলে যান তিনি কে তার মুখের কথা এই দেশের জন্য মূল্যবান সেটা তিনি ভুলে যান তাই আজ তার যে যায়গায় থাকার কথা সেখানে তিনি নেই। তিনি একজন সাধারন দলীয় বড় বড় নেতাদের মত করে কথা বলেন যানাকি ওনার ক্ষেত্রে হওয়া উচিৎ নয়। এখানে তিনি সংবিধানের প্রতি আনুগতা রেখেই কথা বলেছেন গণতান্ত্রিক পদ্ধতীতে যা হওয়া প্রয়োজন। কিন্তু সংবিধানে কি বলে, নির্বাচন ঘোষনার গণতন্ত্রের উপর নির্ভর করে সবাইকে নির্বাচনে অংশ নিতে হয়। না নিলে পরে ১৫৩ কেন ২০০টা সিটেই যদি প্রতিদন্দি না থাকে তাহলেও নির্বাচন সময় মতই হয়ে যাবে। এখন আপনারা বিরুধি দল চালাকি করে একটা দলকে কাবু কাত করার জন্য এক জোট হয়ে দেশ তথা জনগণ তথা সংবিধান কে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখাতে চান তাই গণতন্ত্রের প্রতিক নির্বাচন বর্জন করেন সেটাত মানা যায়না। তাই বঙ্গবীরের এই আবদারটা সংবিধানের কথা নয় এটা “দেখতে পারিনা তাই চলন বাকা” এই প্রবাদের মত শোনায়। আল্লাহ্‌ সবই জানেন এটাই কঠিন সত্য। আমীন
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: ইসি


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ