Inqilab Logo

শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৬ বৈশাখ ১৪৩১, ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

সেই আবুকে পুলিশে দিলেন হাইকোর্ট

প্রসাধনী ব্যবসার আড়ালে স্বর্ণ চোরাচালান

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ৯ জানুয়ারি, ২০২৩, ১২:০০ এএম

কসমেটিক আমদানির আড়ালে স্বর্ণ চোরাচালানের মামলায় চট্টগ্রামের ব্যবসায়ী আবু আহম্মেদ ওরফে আবুরকে (৪৯) কে পুলিশে দিলেন হাইকোর্ট। গতকাল রোববার বিচারপতি মো: নজরুল ইসলাম তালুকদার এবং বিচারপতি খিজির হায়াতের ডিভিশন বেঞ্চ তাকে ঢাকার শাহবাগ পুলিশের হাতে তুলে দিয়ে তাকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন। এ তথ্য জানিয়েছেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল একেএম আমিনউদ্দিন মানিক। এ সময় আসামির পক্ষে উপস্থিত ছিলেন অ্যাডভোকেট এসএম আবুল হোসেন ও মো: হাবিবুর রহমান। দুদকের পক্ষে উপস্থিত ছিলেন অ্যাডভোকেট শাহীন আহমেদ।

মামলার রেকর্ড থেকে জানা যায়, ২০২০ সালের ১৮ মার্চ চট্টগ্রামের ফটিকছড়ির জাপতনগর এলাকার ফয়েজ আহম্মদ ওরফে বালী সওদাগরের ছেলে আবু আহম্মদ ওরফে আবুসহ ২০জনের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়। মামলাটি করেন, সিআইডির উপ-পুলিশ পরিদর্শক মো: হারুন উর রশীদ।

এজাহারে বলা হয়, বিভিন্ন ব্যাংক হিসাবে আসামিরা সংঘবদ্ধ হুন্ডি (অর্থ পাচার), স্বর্ণ চোরাচালান, চোরাই ও অন্যান্য দ্রব্যের অবৈধ ব্যবসার সর্বমোট ২০৪ কোটি ৩৭ লাখ ৪৫ হাজার ৮৮৭ টাকা জমা ও ২৪০ কোটি ৫ লাখ ১২ হাজার ১৬০ টাকা উত্তোলন করে মানিলন্ডারিং অর্থাৎ স্থানান্তর, হস্তান্তর ও রূপান্তরের মাধ্যমে নামে- বেনামে অঢেল সম্পদের মালিক হয়েছেন। এছাড়া চট্টগ্রামের পাঁচলাইশ, চাঁদগাও, ফতেহনগর, রাউজান, ফটিকছড়িতে জমি ও বাড়ির মালিক হয়েছেন। দুবাইয়ে তার ২/৩টি দোকান রয়েছে। এছাড়াও আবুর বিরুদ্ধে বিভিন্ন থানায় স্বর্ণ চোরাচালানের মামলা রয়েছে।

এ মামলায় গতবছর ৭ ফেব্রুয়ারি হাইকোর্টে আগাম জামিন চান আবু আহাম্মদ। আদালত তাকে জামিন না দিয়ে তিন সপ্তাহের মধ্যে বিচারিক আদালতে আত্মসমর্পণ করতে বলেন। নির্দেশের পর গত ২২ ফেব্রুয়ারি আবু আহম্মদ আত্মসমর্পণ করে জামিন আবেদন করেন। ওইদিন চট্টগ্রামের সিনিয়র বিশেষ জজ আদালত মামলার নথি তলব করে ৫ মে আবেদনটি শুনানির জন্য রাখেন। কিন্তু চট্টগ্রামের মুখ্য মহানগর হাকিম আদালত থেকে নথি না আসায় ওইদিন ১৩ জুলাই জামিন আবেদনের শুনানি রাখেন। ওই তারিখেও নথি না আসায় ৩১ আগস্ট নথি উপস্থাপন করতে বলে আদালত ৫ সেপ্টেম্বর জামিন আবেদনের শুনানির তারিখ ধার্য করেন। পরে নথি এলেও আবু আহম্মদের পক্ষে সময় প্রার্থনা করা হয়। এভাবে বিভিন্ন কৌশলে তার জামিন আবেদনের শুনানি কয়েক দফা পেছানো হয়। গত ১৩ নভেম্বর জামিন আবেদনের শুনানির দিন আবু আহম্মদ আবারও সময় আবেদন করলে তা না মঞ্জুর করে তার বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেন আদালত। কিন্তু এ তথ্য গোপন করে হাইকোর্টে আবারও আগাম জামিন প্রার্থনা করেন আবু আহম্মেদ। গত ৫ ডিসেম্বর আগাম জামিনের আবেদনের শুনানির পর আদালত আদেশের জন্য ৬ ডিসেম্বর তারিখ ধার্য রাখেন। কিন্তু ওইদিনও তিনি আদালতে হাজির হন নি। এ পর্যায়ে আবু আহম্মদের আইনজীবী আগাম জামিনের আবেদনটি ‘নট প্রেসড’ (উত্থাপিত হয়নি বলে খারিজ) করতে চাইলে আইনজীবী ফারিয়া বিনতে আলমের প্রতি আদালত উষ্মা প্রকাশ করেন। আর নট প্রেস না করে আসামিকে গ্রেফতার ও তার দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা দেন। এছাড়া তাকে অবিলম্বে যে কোনো মূল্যে গ্রেফতার করে যথাযথ আদালতে হাজির করতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে নির্দেশনা দেন। পরদিন এ মামলার তদবিরকারককে তলব করেন হাইকোর্ট। তলবে হাজিরের পর ১২ ডিসেম্বর তদবিরকারক নূর মোহাম্মদ নিঃশর্ত ক্ষমা প্রার্থনা করেন। পরে তদবিরকারককে আসামিকে কোর্টে হাজির করার জন্য নির্দেশ দেন। আবু আহমেদ ওরফে আবুর বিরুদ্ধে হাইকোর্টের আদেশ অমান্য করায় রুল জারি করেন আদালত। তাকে গ্রেফতারের বিষয়ে চট্টগ্রাম পুলিশ সুপারকে প্রতিবেদন দাখিল করার নির্দেশ দেন। পরবর্তী আদেশের জন্য তারিখ ধার্য ছিলো গতকাল ৮ ডিসেম্বর। গতকাল তদবিরকারক আবুকে হাজির করলে তাকে শাহবাগ থানা পুলিশের হাতে তুলে দেন হাইকোর্ট।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: হাইকোর্টের


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ