Inqilab Logo

শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৬ বৈশাখ ১৪৩১, ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

বাংলাদেশে ভারত ও যুক্তরাষ্ট্রের স্বার্থ অভিন্ন

ভারতের দ্য হিন্দুকে মার্কিন রাষ্ট্রদূত বার্নিকাট

| প্রকাশের সময় : ২৪ ডিসেম্বর, ২০১৬, ১২:০০ এএম

স্টাফ রিপোর্টার : ঢাকায় নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত মার্সিয়া স্টিফেন্স ব্লুম বার্নিকাট সম্প্রতি ভারতের অঙ্গরাজ্য পশ্চিমবঙ্গের শহর কলিকাতা সফর করেন। সেখানে ভারতীয় পত্রিকা দ্য হিন্দুর সঙ্গে বিভিন্ন বিষয়ে কথা বলেন তিনি। সেখানে তিনি বলেন, বাংলাদেশে চীনের ক্রমবর্ধমান অর্থনৈতিক ভূমিকা নিয়ে উদ্বিগ্ন নয় যুক্তরাষ্ট্র। কারণ, অবকাঠামো উন্নয়ন একটি ‘ভালো জিনিস’। পাশাপাশি তিনি কথা বলেছেন বাংলাদেশ সরকারের সন্ত্রাসবাদ বিরোধী পদক্ষেপ, আসন্ন জাতীয় নির্বাচন, বাংলাদেশে ভারতের প্রভাব, ইত্যাদি নিয়ে। দ্য হিন্দুকে দেয়া সেই সাক্ষাৎকারের কিছু অংশ নিচে তুলে ধরা হলো।
প্রশ্ন : জুলাইয়ে গুলশান হামলার পর বাংলাদেশ সরকার কড়া পদক্ষেপ নিয়েছে। সরকারের পদক্ষেপ নিয়ে আপনি কী মনে করেন?
উত্তর : ক্ষমতায় বসার পর থেকে সন্ত্রাসীদের প্রতি ‘জিরো টলারেন্সে’র যে-ই নীতি প্রধানমন্ত্রীর, তার ওপর ভিত্তি করেই কাজ করেছেন তিনি। তিনি ভারত সরকারের সঙ্গে খুবই নিবিড়ভাবে কাজ করেছেন। তিনি ও তার সরকার সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে আমাদের অসাধারণ অংশীদার। আল কায়দা ও আইএস’র হুমকিতে রয়েছে বাংলাদেশ। এরা প্রকাশ্যে ঘোষণা দিয়েছে যে তারা বিদেশি, সরকারি কর্মকর্তা ও ব্লগারদের আক্রমণ করতে চায়। বাংলাদেশ আগের হত্যাকান্ডগুলোর প্রতিক্রিয়া দেখিয়েছে। বেশ কিছু কড়া পদক্ষেপ ছিল। নতুন সিটি ইউনিট খোলা হয়েছে। অনেক সার্ভিসকে ঘনিষ্ঠভাবে একযোগে কাজ করতে আদেশ দেয়া হয়েছে। বাংলাদেশের বন্ধু ভারত ও যুক্তরাষ্ট্র এবং অন্যান্য দেশ সামনে এগিয়ে এসেছে। যুক্তরাষ্ট্র থেকে শিগগিরই একটি দল বাংলাদেশে আসবে। প্রশিক্ষণ ও ম্যাটেরিয়ালের দিক থেকে আমরা আরও কী করতে পারি, তা খতিয়ে দেখবে তারা।
প্র : ২০১৯ সালে জাতীয় নির্বাচন। যুক্তরাষ্ট্র কি আশাবাদী যে এ নির্বাচন সম্পূর্ণরূপে অংশগ্রহণমূলক হবে? যুক্তরাষ্ট্র কি দুই প্রধান দলের মধ্যে সংলাপ আয়োজনে কোনোভাবে সম্পৃক্ত?
উ: আমরা আশাবাদী যে এ নির্বাচন হবে অংশগ্রহণমূলক। এর চেয়ে বড় গুরুত্বপূর্ণ কথা হলো প্রধানমন্ত্রী নিজেই আওয়ামী লীগের কাউন্সিলের শেষে বলেছেন যে, তিনি ২০১৯ সালের নির্বাচন দেখতে চান। দুই দলের মধ্যে সংলাপের প্রশ্ন খুবই সংকীর্ণ। হ্যাঁ, এই দুই দল সব দিক থেকেই দেশের প্রধান দুই দল। কিন্তু বাংলাদেশে আরও অনেক দল আছে। আমি মনে করি, গ্রহণযোগ্য নির্বাচন অনুষ্ঠানের বিষয়টি অংশত নির্ভর করবে দেশব্যাপী আলোচনার ওপর। শুধু দলগুলোর মধ্যে নয়, দেশের নাগরিকদের মধ্যেও। বাংলাদেশে শক্ত নির্বাচন কমিশন আছে। নতুন কমিশন কীভাবে গঠিত হয়, সেটি হবে একটি ভালো নির্বাচনের প্রথম ও বাস্তব লক্ষণ।
প্র : বাংলাদেশে ভারতের ক্রমবর্ধমান প্রভাব নিয়ে কি যুক্তরাষ্ট্র উদ্বিগ্ন?
উ: আমাদের স্বার্থ সত্যিই একই সূত্রে গাঁথা। বাংলাদেশের নিরাপত্তা ও সমৃদ্ধির ভিত্তিতে আমরা আমাদের স্বার্থ ও মঙ্গলকে সংজ্ঞায়িত করি। আমি মনে করি আমরা উভয় দেশই (ভারত ও যুক্তরাষ্ট্র) বিভিন্ন ঐতিহাসিক স্মৃতি থেকে ভুগি। এসব স্মৃতি অনেক সময় বাংলাদেশীদের আমাদের প্রভাব ও স্বার্থ নিয়ে সন্দেহপ্রবণ করে তুলেছে। সরকার না হলেও, বাংলাদেশীদের করেছে, যদিও বিভিন্ন সরকার ভিন্ন ভিন্নভাবে আচরণ করেছে। বাংলাদেশীরা ভীষণ স্বাধীন। যখনই আমাদের দু’ দেশ, সরকার, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বা গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিবিশেষ দৃশ্যত তাদের (বাংলাদেশীদের) নিজ সিদ্ধান্ত নেয়ার সক্ষমতায় অনভিপ্রেত প্রভাব বিস্তারের চেষ্টা করে, তখন আমরা নিজেদের বিপদই ডেকে আনি।
প্র: বাংলাদেশে সম্প্রতি বিপুল পরিমাণ চীনা বিনিয়োগ প্রস্তাবিত হয়েছে। এটি কি যুক্তরাষ্ট্রকে উদ্বিগ্ন করে?
উ: সবচেয়ে ব্যয়বহুল উন্নয়ন কাজ কী? অবকাঠামো। আমি ও যুক্তরাষ্ট্র মনে করে, যদি চীন এ সমাধানের অংশ হতে চায়, এটি ভালো জিনিস। আমরা বিশ্বজুড়ে প্রত্যেক প্লেয়ারের কাছ থেকে যেটি চাই সেটি হলো, আমরা এধাইআইবি’র (এশিয়ান ইনফ্রাস্ট্রাকচার ইনভেস্টমেন্ট ব্যাংক) কথা বলি বা চীনা সরকারের কথাই বলি, দয়া করে দায়িত্বশীল প্লেয়ার হোন। স্বীকৃতি দিন যে, এত বছর ধরে বিশ্বব্যাংক, এশিয়ান ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক ও অন্যান্য ব্যাংক এমন এক কাঠামো গড়ে তুলেছে যেটি স্বচ্ছ, কার্যকর, অংশগ্রহণমূলক। এমনভাবে এ কাঠামো গড়া হয়েছে যাতে আপনি যদি কোনো সুযোগ প্রস্তাব দিয়ে থাকেন, তবে এই আন্তর্জাতিক আদর্শ মেনে চলুন। এর ফলে সবাই আরও শক্তিশালী হবে।



 

Show all comments
  • সরমি ২৪ ডিসেম্বর, ২০১৬, ১:১৪ এএম says : 0
    যাদের যা বুঝা দরকার নিজ দায়িত্বে বুঝে নিন।
    Total Reply(0) Reply
  • Mohammed Shah Alam Khan ২৪ ডিসেম্বর, ২০১৬, ৮:৪১ এএম says : 0
    বিজয় দিবস উপলক্ষে টেলিগ্রাফ কে দেয়া মন্তব্য আর আজকের মন্তব্য দুটা দুরকমের। সেখানে আমিরিকার রাষ্ট্রদূত শক্তিশালী বিরোধী দলের কথা বলায় বিষয়টা বিএনপির পক্ষে চলেগিয়েছিল। কিন্তু আজকে সাংবাদিকের প্রশ্নের জবাব এতই সুন্দর ভাবে তিনি দিয়েছেন সরকারের পক্ষে জোড়াল এবং বিএনপির বিষয়ে অতটা জোড় যেটা গতবার দেখা গেছে সেটা নয়। তবে তিনি আজ আবার আলোচনার উপর বিএনপির সাথে আওয়ামী লীগের মধ্যে সংলাপের প্রশ্ন খুবই সংকীর্ণ। তারপর আবার ছোট ছোট দলের কথাও বলেছেন এমনকি দেশব্যাপী আলোচনা এমনকি নাগরিকদের মধ্যেও আলোচনার কথা বলেছেন। একদিকে তিনি বলছেন দেশে শক্ত নির্বাচন কমিশন আছে আবার বলছেন নতুন কমিশন কিভাবে গঠিত হয়, সেটি হবে একটি ভালো নির্বাচনের প্রথম ও বাস্তব লক্ষণ। রাষ্ট্রদূত বলেছেন ভারত ও যুক্তরাষ্ট্র বিভিন্ন ঐতিহাসিক স্মৃতি থেকে ভুগে। এসব স্মৃতি অনেক সময় বাংলাদেশীদের (আমার ভষায় বাঙ্গালী) আমাদের প্রভাব ও স্বার্থ নিয়ে সন্দেহপ্রবণ করে তুলেছে। আমি এখানে বলতে চাই প্রকৃত বিষয়টা হচ্ছে বাঙ্গালীরা আমেরিকার উপর সন্দেহ করছে আর বাংলাদেশীরা (পাকিস্তানের পক্ষের বাংলাভাষীরা) সন্দেহের চোখে দেখছে ভারতকে। তিনি বলেন সরকার না হলেও, বাংলাদেশীদের করেছে, যদিও বিভিন্ন সরকার ভিন্ন ভিন্নভাবে আচরণ করেছে। ওনার “বাংলাদেশীরা ভীষণ স্বাধীন” এই কথাটার সাথে আমি একমত নই কারন আমি আমার ৬৭ বছরের অভিজ্ঞতা থেকে বলছি বাঙ্গালীরা ভীষন স্বাধীন,...................... যদিও আমরা মুক্তিযুদ্ধ করেছিলাম বাঙ্গালী জাতী হিসাবে এবং বিশ্বে আমাদের ভাষা বাংলা এবং আমরা বাঙ্গালী এটা প্রতিষ্ঠা করার জন্য। যাইহোক রাষ্ট্রদূত এবার খুবই ভাল বলেছেন কারন তিনি একজন কূটনীতিবিদ তাকে সেভাবেই ধরি মাছ না ছুই পানি এভাবেই কথা বলতে হবে এটাই সত্য এবং আমাকে মানতে হবে।
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: বার্নিকাট


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ