Inqilab Logo

শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৬ বৈশাখ ১৪৩১, ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

লোহাগড়ায় মধুমতির ভাঙন আতঙ্কে ৯ গ্রামের মানুষ

| প্রকাশের সময় : ২৫ ডিসেম্বর, ২০১৬, ১২:০০ এএম

নড়াইল জেলা সংবাদদাতা : বর্ষার পর এবার শুষ্ক মৌসুমে নড়াইলের লোহাগড়ায় মধুমতি নদীতে ভাঙন অব্যাহত রয়েছে। পানি কমে যাওয়ার সাথে সাথে ভাঙন মারাত্মক আকার ধারণ করেছে। ফলে মধুমতি নদী তীরবর্তী উপজেলার শিয়রবর, মাকড়াইল, কাশিপুর, রামচন্দ্রপুর, চর-শালনগর, চর-মাকড়াইল, নওখোলা, দিগনগর, কাতলাশুর গ্রামের কয়েক হাজার মানুষ ভাঙন আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছে। স্রোতের তোড়ে শালনগর ইউনিয়নের নদী তীরবর্তী প্রায় ১০ কিলোমিটার এলাকাজুড়ে ভাঙন দেখা দিয়েছে। ভাঙনের কবলে পড়েছে এলাকার হাটবাজার, বাড়িঘর, দোকানপাট, মসজিদ, স্কুল, আবাদি জমি, ও রাস্তা। ভাঙনকবলিত এলাকার বাসিন্দাদের অভিযোগ, দীর্ঘদিন দরে মধুমতির ভাঙন চললেও তা রোধে কোনো কার্যকর উদ্যোগ নেয়নি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ।
গতকাল ওই এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, ভাঙনের মুখে পড়ে এলাকাবাসী অন্যত্র সরিয়ে নিচ্ছেন তাদের ঘরবাড়ি। ভাঙন অব্যাহত থাকায় ভাঙন আতঙ্কে দিশেহারা হয়ে পড়েছেন এসব গ্রামের বাসিন্দারা। ঘরবাড়ি বিলীন হয়ে কেউ প্রতিবেশী বা আত্মীয়-স্বজনের বাড়িতে, আবার কেউ বা রাস্তার পাশে ছাপড়া তুলে আশ্রয় নিয়েছেন। নিঃস্ব হয়ে পড়েছেন অনেকে। তারা মানবেতর দিনযাপন করছেন।
শালগনর ইউনিয়নের কাশিপুর গ্রামের আয়েশা বেগমের বাড়ি নদীভাঙনে বিলীন হয়ে গেছে। তিনি বলেন, ১৫ বছর বয়সে বউ হয়ে এখানে আসি। জমিজমাসহ শ্বশুরবাড়িতে সুখের সংসার ছিল। নদীর ভাঙনে সব হারিয়েছি। দুইবার বসতঘর সরাতে হয়েছে। এখন পরের জায়গায় ছাপড়া তুলে কোনোরকম আছি। তাও সরিয়ে নিতে বলেছেন জায়গার মালিক। এখন কোথায় যাব?
একই গ্রামের মো: আমিনুর মোল্যার কাছে নদীভাঙনের ভয়াবহতা জানতে তিনি সাংবাদিকদের বলেন, বাপ-দাদার সামান্য কৃষিজমি ছিল। সেই জমি চাষাবাদ করে বেঁচে থাকলেও তা এবার সর্বনাশা নদী গিলেছে। চার শতক জমিতে বসতভিটা আছে।
শিয়রবর বাজারের ব্যবসায়ী নারায়ণ চৌধুরী বলেন, শুরুতে বাজারটি প্রায় ২০ একর এলাকাজুড়ে ছিল। তৎকালীন সময়ে কয়েক জেলার মধ্যে এই বাজারটি ছিল অন্যতম। মধুমতি নদীর অব্যাহত ভাঙনে এখন বাজারটি সম্পূর্ণ বিলীন হয়ে গেলেও ভাঙন রোধে সরকারি কোনো পদক্ষেপ আজো নিতে দেখা যায়নি।
এ বিষয়ে শালনগর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান খান তসরুল ইসলাম বলেন, আমার ইউনিয়নের ৯টি গ্রাম নদীভাঙনের কবলে পড়েছে। বহু পরিবার বসতভিটা হারিয়ে এখন নিঃস্ব। ভাঙন প্রতিরোধে দ্রুত ব্যবস্থা না নেয়া হলে দিন দিন এসব জনপদ বিলীন হয়ে যাবে। এ ব্যাপারে এবং আর্থিক সহযোগিতার জন্য জেলা প্রশাসক এবং উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে (ইউএনও) জানিয়েছি।
নড়াইল পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো: শাহনেওয়াজ তালুকদার বলেন, আমরা ভাঙনকবলিত এলাকা পরিদর্শন করেছি। ইতোপূর্বে ডেভেলপমেন্ট প্রজেক্ট প্রপোজাল ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ বরাবর পাঠিয়েছি। আশা করছি ভাঙন রোধে বিশেষ করে শিয়েরবর বাজার এলাকায় দ্রুত কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করতে পারব।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ