Inqilab Logo

শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৬ বৈশাখ ১৪৩১, ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

চীন ও দ.আফ্রিকার সাথে মহড়ায় রাশিয়ান রণতরী

ইনকিলাব ডেস্ক : | প্রকাশের সময় : ২৫ জানুয়ারি, ২০২৩, ১২:০০ এএম

চীন ও দক্ষিণ আফ্রিকার নৌবাহিনীর সাথে মহড়ায় রাশিয়ার হাইপারসনিক ক্রুজ অস্ত্রসজ্জিত একটি রণতরী যোগ দেবে। আগামী ফেব্রুয়ারিতে এই মহড়া অনুষ্ঠিত হবে। রাশিয়ার রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন সংবাদ সংস্থা তাস জানিয়েছে, মহড়ায় অ্যাডমিরাল অব দি ফ্লিট অব দি সোভিয়েত ইউনিয়ন গোরশকভ ওই মহড়ায় অংশ নেবে। এই ফ্রিগেটেজিরকন ক্ষেপণাস্ত্র মোতায়েন রয়েছে। এই ক্ষেপণাস্ত্র শব্দের চেয়ে ৯ গুণ বেশি গতিতে ছুটতে পারে এবং এক হাজার কিলোমিটারের বেশি দূরত্বে আঘাত হানতে পারে। রাশিয়ার হাইপারসনিক অস্ত্রভা-ারে জিরকন হলো প্রধান হাতিয়ার। তাস জানায়, অ্যাডমিরাল গোরশকভ প্রথমে সিরিয়ার টারটাস পর্যন্ত যাবে। তারপর চীন ও দক্ষিণ আফ্রিকার নৌবাহিনীর সাথে যৌথ নৌমহড়ায় অংশ নেবে। দক্ষিণ আফ্রিকার ন্যাশনাল ডিফেন্স ফোর্স জানিয়েছে, ১৭-২৮ ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠেয় মহড়াটি দক্ষিণ আফ্রিকার পূর্ব উপকূল ডারবান ও রিচার্ডস বের কাছে হবে। এতে আরও বলা হয়, দক্ষিণ আফ্রিকা, রাশিয়া ও চীনের মধ্যকার ইতোমধ্যেই বিকশিত সম্পর্ক আরও জোরদার করার জন্যই এই মহড়ার আয়োজন করা হচ্ছে। এই তিন দেশ ২০১৯ সালেও মহড়া চালিয়েছিলো। খবরে বলা হয়, রাশিয়া ও চীনের সঙ্গে যৌথ মহড়ায় যোগ দিচ্ছে দক্ষিণ আফ্রিকা। যৌথ এই সামরিক মহড়া হবে আগামী ১৭ থেকে ২৭ ফেব্রুয়ারি। এই নৌ-মহড়ার মধ্যেই পড়বে রাশিয়ার ইউক্রেন আক্রমণের প্রথম বার্ষিকী। গত বছর ২৪ ফেব্রুয়ারি ইউক্রেন আক্রমণ করেছিল রুশ বাহিনী। দক্ষিণ আফ্রিকার সঙ্গে মস্কোর বাণিজ্যের পরিমাণ খুব বেশি নয়। কিন্তু যেটা গুরুত্বপূর্ণ তা হলো, দক্ষিণ আফ্রিকা প্রথম থেকেই ইউক্রেন নিয়ে রাশিয়া ও চীনের অবস্থানকে সমর্থন করছে। গত তিন দশক ধরে দক্ষিণ আফ্রিকার ক্ষমতাসীন আফ্রিকান ন্যাশনাল কংগ্রেস (এএনসি) রাশিয়াকে সমর্থন করে আসছে। এর আগে রাশিয়া বর্ণবিদ্বেষের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে বরাবরই এএনসিকে সমর্থন ও সাহায্য করেছে। তবে দক্ষিণ আফ্রিকা ঘোষিত অবস্থান হলো, তারা নিরপেক্ষ। কিন্তু পশ্চিমা দেশগুলোর কাছে ভূ-রাজনৈতিক কারণে দক্ষিণ আফ্রিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ দেশ। আফ্রিকার দেশগুলোর সঙ্গে সম্পর্ক ভালো করার জন্য তারা দক্ষিণ আফ্রিকাকে পাশে পেতে চায়। আর এ কারণে রাশিয়া ও চীনের সঙ্গে যৌথ মহড়ায় অংশ নেওয়ায় দক্ষিণ আফ্রিকার সমালোচনা শুরু হয়েছে। আফ্রিকার এই দেশটির আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিষয়ক মন্ত্রী নালেদি পান্ডোর বলেছেন, বন্ধুদের সঙ্গে যৌথ সামরিক মহড়া দক্ষিণ আফ্রিকা করেই থাকে। এটা নতুন কিছু নয়। সাউথ আফ্রিকার প্রেসিডেন্ট সিরিল রামাফোসা এর আগে রাশিয়া ও ইউক্রেনের মধ্যে মধ্যস্থতা করার প্রস্তাব দিয়েছিলেন। তিনি দাবি করেছেন, দক্ষিণ আফ্রিকা একটা নিরপেক্ষ অবস্থান নিয়ে চলেছে। কিন্তু বিরোধী রাজনৈতিক নেতা ও বুদ্ধিজীবীদের একাংশ এই দাবি মানতে নারাজ। বিরোধী দলের প্রধান নেতা ড্যারেন বার্গম্যান জানিয়েছেন, এটা এখন স্পষ্ট, দক্ষিণ আফ্রিকা রাশিয়াকেই সমর্থন করছে। জোহানেসবার্গের সংগঠন ডেমোক্রেসি ওয়ার্কস ফাউন্ডেশনের এক্সিকিউটিভ চেয়ারপার্সন উইলিয়াম গুমেড জানিয়েছেন, দক্ষিণ আফ্রিকা যে অবস্থান নিয়েছে তা মানা যায় না। কারণ সংবিধানে বলা আছে, সরকারকে আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে মানবাধিকারের বিষয়টি সমর্থন করতে হবে। এই পরিস্থিতিতে রাশিয়া-আফ্রিকার দেশগুলোর শীর্ষ-সম্মেলনের আগে ছয় মাসের মধ্যে দ্বিতীয়বার সাউথ আফ্রিকা সফর করছেন রুশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই ল্যাভরভ। এই শীর্ষ বৈঠক আগামী জুলাইতে অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে। এদিকে দক্ষিণ আফ্রিকায় নিযুক্ত ইউক্রেনের রাষ্ট্রদূত বলেছেন, তারা যেন প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কির দশ দফা শান্তি প্রস্তাব সমর্থন করে। গত নভেম্বরে জি-২০ বৈঠকে এই শান্তিপ্রস্তাব দিয়েছিলেন জেলেনস্কি। জেলেনস্কি ইউক্রেনের সঙ্গে আফ্রিকার দেশগুলোর সম্পর্ক জোরদার করতে চাইছেন, কিন্তু এখনও কোনও সাফল্য পাননি। আফ্রিকার অধিকাংশ দেশ এই বিরোধে কারও পক্ষ নিতে দ্বিধাবোধ করছে। মানবাধিকার কাউন্সিলে রাশিয়ার সদস্যপদ খারিজ করা নিয়ে ভোটাভুটিতে আফ্রিকার ৫৪টি দেশের মধ্যে মাত্র ১০টি দেশ অংশ নিয়েছিল। নয়টি দেশ বিরোধিতা করে এবং বাকিরা ভোটে অংশ নেয়নি। ২০১৬ সাল থেকে ২০২০ সালের মধ্যে আফ্রিকার দেশগুলো যত অস্ত্র কিনেছে, তার মধ্যে ১৮ শতাংশ এসেছে রাশিয়া থেকে। স্টকহোমের ইন্টারন্যাশনাল পিস রিসার্চ ফাউন্ডেশনের বার্ষিক পর্য়ালোচনায় এই তথ্য সামনে এসেছে। তাস, আরটি, রয়টার্স।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ