Inqilab Logo

মঙ্গলবার, ২৩ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১, ১৩ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

হাটহাজারীতে লাখো মুসল্লির অংশগ্রহণে তিন দিন ব্যাপী চট্টগ্রামের আঞ্চলিক বিশ্ব ইজতেমা শুরু

| প্রকাশের সময় : ৩০ ডিসেম্বর, ২০১৬, ১২:০০ এএম

হাটহাজারী উপজেলা সংবাদদাতা : মুসল্লিদের মধ্যে কেউ সামিয়ানার ভেতর বসে বয়ান শুনছেন, আবার কেউ জিকিরে মুশগুল আছেন। তার মধ্যে অনেকে মাঠের পাশে তার সাথী ভাইদের (মুসল্লি) জন্য দুপুর ও রাতের খাবার তৈরির কাজে ব্যস্ত সময় পার করছেন বলে জানান পটিয়া উপজেলা থেকে আসা মাওলানা মো. ইসমাইল হোসেন।
ঢাকাস্থ টংগীর বিশ্ব ইজতেমায় স্থান সঙ্কুলান না হওয়ায় বিশ্ব ইজতেমা কমিটির আঞ্চলিক বিশ্ব ইজতেমা করার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী হাটহাজারী উপজেলায় গতকাল বৃস্পতিবার থেকে প্রথম বারের মত লাখো মুসল্লির অংশগ্রহণে তিন দিন ব্যাপী চট্টগ্রামের আঞ্চলিক বিশ্ব ইজতেমা শুরু হয়েছে। ফজর নামাজের পরে আম বয়ানের মধ্য দিয়ে ইজতেমার কার্যক্রম শুরু হয়।
সরেজমিনে ইজতেমাস্থল ঘুরে দেখা গেছে, ধর্মপ্রাণ মুসল্লিরা দলে দলে জড়ো হতে শুরু করেন ইজতেমা মাঠে। এতে বিদেশিদের আগমণ চোখে পড়ার মত। ভারত, চীন, কাতার, মালয়েশিয়া, সৌদি আরব, দক্ষিণ আফ্রিকা, জর্দান, মিশর, কুয়েত ও দুবাইসহ বিভিন্ন দেশের শতাধিক বিদেশি মেহমানও ইজতেমায় স্বতঃস্ফ‚র্তভাবে অংশগ্রহণ করেন।
আগামীকাল শনিবার সকালে আখেরি মোনাজাত পর্যন্ত মুসল্লিদের এ আগমন অব্যাহত থাকবে বলে আয়োজক কমিটির সদস্যরা জানিয়েছেন। গতকাল সন্ধ্যায়ও হাটহাজারী উপজেলা ও উপজেলার পার্শ¦বর্তী এলাকা থেকে মুসল্লিদের শুকনো খাবার, বিছানাপত্রসহ নানা নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিস নিয়ে ইজতেমায় আসা অব্যাহত রেখেছে।
ইজতেমা কমিটির প্রধান সমন্বয়কারী মাওলানা মুফতি জসিম গণমাধ্যমকর্মীদেরকে জানান, গতকাল ফজরের নামাজের পর পার্শ¦বর্তী দেশ ভারতের মাওলানা রিজোয়ান আম বয়ান শুরু করেন। তারই পার্শ্বে মঞ্চে উপবিষ্ট মুফতি শাহেদ ওই মাওলানার উর্দুতে আম বয়ান বাংলাতে তরজমা করেছেন। আর এ বয়ান ভোর থেকে সকাল ৮টা পর্যন্ত করা হয়। এরপর শুরু হয় মুসল্লিদের মধ্যে তা’লিম। এ সময় প্রতিটি গ্রæপে ১০-২৫ জন করে তালিমে অংশ নেন। এভাবে জোহর, আছর, মাগরিব ও এশার নাজের পর তাবলিগ জামাতের মুরিব্বরা বয়ান করেন। আখেরি মোনাজাত পর্যন্ত বিশিষ্ট আলেম ও তাবলিগ জামাতের শীর্ষ স্থানীয় মুরব্বিরা ঈমান, আমল, আখলাক, ইহকাল ও পরকালসহ ইসলামের বিভিন্ন বিষয়ে বয়ান করেন।
তিনি আরো জানান, ইজতেমা উপলক্ষ্যে চারিয়া গ্রামের ১৩১ একর জায়গাজুড়ে ১০ লাখ মুসল্লির সুব্যবস্থা করা হয়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা পর্যন্ত প্রায় ৫ লাখ মুসল্লি ইজতেমায় অংশ নিয়েছেন। শুক্রবার ও মোনাজাতের দিন এ সংখ্যা আরও বাড়বে বলে জানা গেছে।
এদিকে ইজতেমা মাঠের আশপাশের এলাকায় গড়ে ওঠেছে তিন শতাধিক ভাসমান দোকান। এসব দোকানে খাবার, শীতের কাপড় ও নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র বিক্রি করতে দেখা গেছে। এসব দোকানগুলোতে পণ্য মান ও দাম স্বাভাবিক রাখতে জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটসহ আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা টহল অব্যাহত রেখেছে।
অতিরিক্ত চট্টগ্রাম জেলা পুলিশ সুপার মুহাম্মদ রেজাউল মাসুদ সাংবাদিকদের জানান, ইজতেমার নিরাপত্তায় পাঁচ স্তরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা রয়েছে। কোনো অপ্রীতির ঘটনা ঘটেনি। এছাড়া অনুষ্ঠানস্থলে জেলা পুলিশের পক্ষ থেকে একটি কন্ট্রোল রুম খোলা হয়েছে। সিসি ক্যামেরার মাধ্যমে আঞ্চলিক বিশ্ব ইজতেমার সার্বিক চিত্র জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটসহ আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর কর্মকর্তারা কন্ট্রোল রুমে বসে ইজতেমার সার্বিক বিষয়ক পর্যবেক্ষণ করছেন।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: শুরু


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ