Inqilab Logo

শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

মীরসরাইতে ৬ মাসে ২৩ আত্মহত্যা

| প্রকাশের সময় : ১ জানুয়ারি, ২০১৭, ১২:০০ এএম

আমিনুল হক, মীরসরাই (চট্টগ্রাম) থেকে : মীরসরাই উপজেলার সাহেরখালী, করেরহাট, মঘাদিয়া সহ বিভিন্ন ইউনিয়নে সম্প্রতি আত্মহত্যা প্রবণতা বৃদ্ধি পেয়েছে। গত ২৮ ডিসেম্বর পর্যন্ত গত ৬ মাসে মীরসরাইতে ২৩টি আত্মহত্যার ঘটনা ঘটে। স্বাভাবিকের চেয়ে যা উদ্বেগজনক। চক্রাকারে যা বিগত বছরগুলোর তুলনায় এমন প্রবণতা বৃদ্ধি পাচ্ছে দিনে দিনে। এমনটির সঠিক স্বাস্থ্যসম্মত প্রতিকার প্রয়োজন। অথচ এই বিষয়ে নেয়া হচ্ছে না সরকারি বা বেসরকারি কোন উদ্যোগ। সাম্প্রতিক কিছু আত্মহত্যার মধ্যে অন্যতম আলোচিত গত ২৪ ডিসেম্বর শনিবার উপজেলার সাহেরখালী ইউনিয়নের দক্ষিণ মঘাদিয়া গ্রামের সৌদি প্রবাসী একরামুল হকের স্ত্রী ফরিদা ইয়াছমিন (৪৫)-এর আত্মহত্যা করা লাশ উদ্ধার করেছে মীরসরাই থানা পুলিশ। গত ১০ ডিসেম্বর উপজেলার ১নং করেরহাট ইউনিয়নের পশ্চিম জোয়ার গ্রামের প্রবাসী মাহবুবুল আলমের বাড়িতে তার গৃহকর্মী শারমিন আক্তার (১৬)-এর আত্মহত্যার পর তার লাশ ঘরের মধ্যে সিলিং ফ্যানে ঝুলন্ত অবস্থায় উদ্ধার করে জোরারগঞ্জ থানা পুলিশ। ২১ ডিসেম্বর সন্ধ্যায় করেরহাট ইউনিয়নের অলিনগর গ্রামের লিচুতলা এলাকার একটি পোল্ট্রিফার্মে ঝুলন্ত অবস্থায় মাসুক (২৪)-এর লাশ উদ্ধার করে জোরারগঞ্জ থানা পুলিশ। ২০ নভেম্বর উপজেলার ৩ নম্বর জোরারগঞ্জ ইউনিয়নের মধ্যম সোনাপাহাড় গ্রামের বারমাইয়্যা ছড়ার স্লুইস গেইটের পূর্ব পার্শ্বে বাইদ্যা কানাল পাহাড়ের চূড়ায় গাছের সাথে ঝুলন্ত অজ্ঞাত (২৪) যুবকের লাশ উদ্ধার করে জোরারগঞ্জ থানা পুলিশ। জোরারগঞ্জ থানার ওসি জাহিদুল কবির সম্প্রতি উপজেলার দুটি থানাতেই আত্মহত্যা প্রবণতা বৃদ্ধির কথা স্বীকার করেন। তবে এটি আইন-শৃঙ্খলাজনিত কোন সমস্যা নয় বলে জানান তিনি। মীরসরাইস্থ মাতৃকা হাসপাতালের ব্যবস্থাপক প্রফেসর ডা. জামশেদ আলম বলেন, আত্মহত্যার প্রবণতা বিশ্বের অনেক দেশেই দেখা যায়। জাপানে সবচেয়ে বেশি। তবে আমাদের সামাজিক অবস্থাকেই এখানকার পরিণতির জন্য তিনি দায়ী বলে মনে করছেন। তিনি বলেন এইসব বিষয়ে সচেতনতা ও বিষণœতা দূরীকরণে পর্যাপ্ত বিনোদনমূলক তৎপরতা বৃদ্ধিতে সরকারি উদ্যোগ প্রয়োজন বলে তিনি মনে করেন। মীরসরাই উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. রতন কান্তি দে জানান, গত ৬ মাসে উপজেলায় ২৩ ব্যক্তির আত্মহত্যার কথা জানা থাকলেও তিনি বলেন, এটি একটি মানষিক ব্যাধি, বিষণœœতাজনিত ডিপ্রেসন বা মানসিক অবসাদের জন্যই এমনটি হচ্ছে। বিষণœœ অবস্থায় অনেক সময় ভুক্তভোগী বুঝেও উঠতে পারছে না সে কি করতে যাচ্ছে। আবার মন ভাল না লাগা বা কারও কারও সব সময় রাগ বা খিটখিটে মেজাজ। এমনও দেখা গেছে অবসাদ অবস্থা যখন খুব বেশি হয় তখন রোগী কানে নানা কথা শুনতে পারে (হ্যালুসিনেসন) যেমন কেউ যেন বলছে, ‘তোমার বেঁচে থেকে লাভ নেই, এখনই মরে যাও ইত্যাদি’। এই সময় রোগী ওই কথাগুলোকে সত্যি মনে করে আর তাতে আত্মহত্যা করার প্রবণতা অনেক বেশি হয়। তিনি বলেন, সরকারি বা বেসরকারি পর্যায়ে কাউন্সিলিং, বর্তমানে কিছু আধুনিক মানের থেরাপি চালু হয়েছে, সেগুলো ও সহায়ক হতে পারে। সর্বোপরি এইসব মানসিক অসুস্থদের সামাজিক ও পারিবারিক সহযোগিতা ও প্রয়োজন বলে তিনি মন্থব্য করেন।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ