Inqilab Logo

শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

চৌদ্দগ্রামে বিগত ১বছরে ২ যুবলীগ নেতাসহ হত্যা-আত্মহত্যায় নিহত ৩৫

| প্রকাশের সময় : ১৫ জানুয়ারি, ২০১৭, ১২:০০ এএম

মো. আকতারুজ্জামান, চৌদ্দগ্রাম (কুমিল্লা) থেকে : কুমিল্লা চৌদ্দগ্রাম পৌরসভাসহ উপজেলার তের ইউনিয়নের প্রত্যন্ত অঞ্চলে চরম পর্যায়ে পৌঁছেছে সামাজিক অবক্ষয়। কথা কাটাকাটির জের, পারিবারিক বিরোধ, জায়গা সংক্রান্ত বিরোধ, যৌতুক দাবি, অভিমান, অপমান ও পরকীয়া প্রেম সংক্রান্ত অন্যান্য ঘটনায় হত্যা- আত্মহত্যা এখন সাধারণ ব্যাপার হয়ে দাঁড়িয়েছে। বন্ধ হচ্ছে না আত্মহত্যার প্রবণতাও। এনিয়ে সচেতন ও শিক্ষিত মহল উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েছেন। চৌদ্দগ্রাম উপজেলার বিভিন্নস্থানে উল্লিখিত ঘটনায় ২০১৬ সালে হত্যা ও আত্মহত্যায় ৩৫ জন নিহত হয়েছেন। এ সকল হত্যা-আত্মহত্যার বিস্তারিত হচ্ছে- ৮ জানুয়ারি শুক্রবার রাতে আলকরা ইউনিয়ন যুবলীগের সাবেক সভাপতি জামাল উদ্দিন(৩৮) ওরপে বাক্কা জামালকে কুপিয়ে হত্যা করেছে দুর্বৃত্তরা। ৯ জানুয়ারি শনিবার সকালে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের চিওড়া এলাকার ভিটা ওয়ার্ল্ড হোটেলের সামনে থেকে অজ্ঞাত পরিচয়ের এক মহিলার লাশ(৩২) উদ্ধার করে পুলিশ। ১০ জানুয়ারি রোববার রাতে উজিরপুর ইউনিয়নের চাঁন্দশ্রী গ্রামে সংঘবদ্ধ ডাকাতদলের হামলায় উপজেলা আনসার-ভিডিপির সাবেক কমান্ডার আলী আকবর(৭৫) মারা গেছেন। ১৭ জানুয়ারি রোববার ভোরে চৌদ্দগ্রাম পৌরসভার চান্দিশকরা গ্রামে আছমা বেগম (২৪) নামের এক গৃহবধূর রহস্যজনক মৃত্যু হয়েছে। ২০ জানুয়ারি বুধবার গুণবতীতে সম্পত্তি আত্মসাৎ করতে চুরির অপবাদ দিয়ে নুরুউদ্দিন চৌধুরী শাওন(২৪) নামের এক যুবককে পিটিয়ে হত্যা করেছে পাষ- চাচাসহ ৮ জন। ৩১ জানুয়ারি রোববার রাতে উজিরপুর ইউনিয়নের রাজেন্দ্রপুর গ্রামের ইউসুফ মিয়ার স্ত্রী কুসুম বেগমের রহস্যজনক মৃত্যু হয়েছে। ২ ফেব্রুয়ারি মঙ্গলবার দুপুরে বাতিসা ইউনিয়নের বাতিসা গ্রামের মাস্টার দেলোয়ার হোসেন পাটোয়ারী ভুট্টুর স্ত্রী আয়েশা আক্তার পাখির রহস্যজনক মৃত্যু হয়। ১১ ফেব্রুয়ারি বৃহস্পতিবার সকালে মুন্সিরহাট ইউনিয়নের মেষতলা গ্রামের আহসান মিয়ার ছেলে আরিফ হোসেন(১৮) গলায় ফাঁসি দিয়ে আত্মহত্যা করে। ১৪ ফেব্রুয়ারি রোববার বিশ্ব ভালোবাসা দিবসে চলন্ত ট্রেনের নিচে ঝাঁপ দিয়ে আত্মহত্যা করেছে আলকরা ইউনিয়নের নারানকুরি গ্রামের ইউনুছ মিয়ার ছেলে আজিম উদ্দিন(২৮)। ১৫ ফেব্রুয়ারি সোমবার শুভপুর ইউনিয়নের সাতবাড়িয়া গ্রামে বাবার বাড়িতে গলায় ফাঁসি দিয়ে আবদুল খালেকের মেয়ে আয়েশা আক্তার মুন্নি (২০) নামের এক গৃহবধূ আত্মহত্যা করে। ২৪ ফেব্রুয়ারি বুধবার সকালে বাতিসা ইউনিয়নের দেবিপুর গ্রামে আফ্রিকান নাগরিক তিসা জামান(২৬) বিষপানে আত্মহত্যা করে। ১৭ মার্চ বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় শুভপুর ইউনিয়নের হাজারিপাড়া গ্রামের মমতাজ মিয়ার ছেলে আবদুল মানিককে কুপিয়ে হত্যা করে। ২১ এপ্রিল বৃহস্পতিবার সকালে কালিকাপুর ইউনিয়নের জগমোহনপুর গ্রামের আছমা আক্তার(২২) নামে এক তরুণীর লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। ২২ মে রোববার বাতিসা ইউনিয়নের কালিকাপুর গ্রামের নুরুল আলমের মেয়ে তাহমিনা আক্তার হ্যাপি(১৬) গলায় ওড়না পেছিয়ে আত্মহত্যা করে। ৩১ মে মঙ্গলবার উজিরপুর ইউনিয়নের কালিকৃষ্ণপুর গ্রামের আলী নেওয়াজের ছেলে আল আমিন আত্মহত্যা করে। ২ জুন বৃহস্পতিবার সকালে উজিরপুর ইউনিয়নের শিতলীয়া সিংহের দীঘির পাশ থেকে ভাসমান অবস্থায় অজ্ঞাতনামা এক ব্যক্তির লাশ উদ্ধার করে। ৩ জুন শুক্রবার গুণবতী বাজারে মানসিক ভারসাম্যহীন এক ব্যক্তির লাশ উদ্ধার করে এলাকাবাসী। ৩০ জুন গুণবতী ইউনিয়নের আকদিয়া গ্রামের সিএনজি চালক হাসান মিয়ার স্ত্রী সালমা আক্তারের রহস্যজনক মৃত্যু হয়। ১২ জুলাই মঙ্গলবার রাতে শুভপুর ইউনিয়নের হাজারিপাড়া গ্রামের আবদুর রহিমের ছেলে রাসেল আত্মহত্যা করে। ২১ জুলাই বৃহস্পতিবার চিওড়া ইউনিয়নের সাঙ্গিশ্বর গ্রামের আবদুর রশিদের স্ত্রী মুকুল বেগম আত্মহত্যা করে। ৫ আগস্ট শুক্রবার রাতে বাতিসা ইউনিয়নের বসন্তপুর গ্রামের আবদুল মান্নান পাটোয়ারীর ছেলে আবদুল হান্নান জিসান আত্মহত্যা করে। ৬ আগস্ট শনিবার বিকেলে ঘোলপাশা ইউনিয়নের ইশানচন্দ্রনগর গ্রামের মৃত আবদুল হাকিমের ছেলে আবদুল কাদের জিলানীর রহস্যজনক মৃত্যু হয়। ২ সেপ্টেম্বর রাতে বাতিসা ইউনিয়নের লুদিয়ারায় যুবলীগ কর্মী আবু বকর ছিদ্দিক প্রকাশ রানাকে হত্যা করে দুর্বৃত্তরা। ১৫ সেপ্টেম্বর বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় জগন্নাথদীঘি ইউনিয়নের তালগ্রামে ভাতিজার হামলায় শাহজাহান মুন্সি নিহত হয়। ১৬ সেপ্টেম্বর রাতে পার্শ্ববর্তী দক্ষিণ বেতিয়ারা গ্রামের বেলাল হোসেনের স্ত্রী নাছিমা বেগম গলায় ফাঁসি দিয়ে আত্মহত্যা করে। ২২ সেপ্টেম্বর বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় চিওড়া ইউনিয়নের কৃষ্ণপুর গ্রামের আবুল হোসেন ব্যাপারীর ছেলে জাহাঙ্গীর হোসেন বিষপানে আত্মহত্যা করে। ২৮ সেপ্টেম্বর হিন্দু যুবকের প্রেমে প্রতারিত হয়ে কালিকাপুর ইউনিয়নের জামমুড়া গ্রামের আবদুল মিয়ার মেয়ে শাহনাজ আক্তার আত্মহত্যা করে। প্রতিপক্ষের হামলার শিকার ঘোলপাশা ইউনিয়নের রাজেন্দ্রপুর গ্রামের মৃত আবদুল করিমের ছেলে সোহাগ মিয়া ২০ অক্টোবর বৃহস্পতিবার ভোরে মারা যায়।  ১৮ অক্টোবর মঙ্গলবার সকালে মিয়াবাজার বালিকা বিদ্যালয়ের সামনে থেকে অজ্ঞাতনামা এক ব্যক্তির লাশ উদ্ধার করা হয়। ২৮ অক্টোবর কালিকাপুর ইউনিয়নের নোয়াপুর গ্রামের আবুল হাশেমের মেয়ে খালেদা আক্তারের রহস্যজনক মৃত্যু হয়। ৩ নভেম্বর বৃহস্পতিবার পারিবারিক কলহের জের ধরে ঘোলপাশা ইউনিয়নের রাজেন্দ্রপুর গ্রামের ওয়াসিম মিয়ার স্ত্রী শাহানা বেগম (২৬) নামের এক গৃহবধূ গলায় কাপড় পেঁছিয়ে আত্মহত্যা করে।  ৯ নভেম্বর বুধবার কনকাপৈত বাজার সংলগ্ন মানু মিয়ার ছেলে আবুল হাশেম বিষপানে আত্মহত্যা করে। ৩ ডিসেম্বর শনিবার রাতে কালিকাপুর ইউনিয়নের বর্ধনবাড়িতে এক চোরকে পিটিয়ে হত্যা করা হয়। ২২ ডিসেম্বর বৃহস্পতিবার ঘোলপাশা ইউনিয়নের আমানগন্ডা গ্রামের আবদুল মতিনের ছেলে ইয়াছিনের লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। ২৫ ডিসেম্বর শনিবার গুণবতী ইউনিয়নের দক্ষিণ আকদিয়া গ্রামের দুলাল হোসেনের স্ত্রী নাজমা আক্তার আত্মহত্যা করে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ