Inqilab Logo

শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৬ বৈশাখ ১৪৩১, ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

মধুমেলায় অশ্লীল নাচের ২৬ প্যান্ডেল উচ্ছেদ

| প্রকাশের সময় : ২৪ জানুয়ারি, ২০১৭, ১২:০০ এএম

রূহুল কুদ্দুস, কেশবপুর (যশোর) থেকে : মহাকবি মাইকেল মধুসূদন দত্তের ১৯৩তম জন্মজয়ন্তী ও সপ্তাহব্যাপী মধুমেলার আয়োজন প্রশাসনের ঔকান্তিক প্রচেষ্টা আর কঠোর পদক্ষেপে অশ্লীলতা মুক্ত হয়েছে। গত বছর মেলার মাঠ ইজারাদার চড়ামূল্যে মেলার মাঠ কিনে মধুমেলাকে অর্থ উপার্জনের পথ তৈরি করায় মধুভক্তরা হতাশ হয়েছিলেন। যার পুনরাবৃত্তি হওয়ার আশঙ্কায় এবারের মেলা শুরুর আগে কেশবপুরের সচেতসমহল ও মধুভক্তদের অনুরোধে মেলার আয়োজন অশ্লীলতামুক্তের দাবি শীর্ষক সংবাদ একাধিক পত্রিকায় প্রকাশ করেন সাংবাদিকরা। যার কারণে প্রশাসনের উপর যতোটুকু না রাগ, তার থেকে বেশি ক্ষোভ সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে, চলছে গালিগালাজ।
মধুমেলা-২০১৭ এর মাঠ ইজারা সংক্রান্ত শিডিউল ফরমের ৩ ও ৬ নম্বর শর্তাবলি অনুযায়ী, মেলাতে বাণিজ্যিক কোনো কুরুচিপূর্ণ নৃত্য, অশ্ল­ীলতা, পুতুল নাচ, জুয়া, লটারি, হাউজি, ম্যাজিক শো’র আয়োজন বা প্রদর্শন করা যাবে না। তবে উন্মুক্ত মঞ্চে বিনা টিকিটে যাত্রাপালার আয়োজন করতে পারবেন। সরেজমিন গত রোববার (১৫ জানুয়ারি) গিয়ে দেখা গেছে, মেলার মাঠ সাব ইজারা দেয়ায় নিষেধাজ্ঞা থাকলেও এ শর্ত উপেক্ষা করে ইজারাদার স্থানীয় কিছু চি‎িহ্নত লোকদের কাছে মাঠ সাব-ইজারা দেন। তারা বিপুল টাকা উঠিয়ে লাভের আশায় পুতুল নাচের নামে অশ্ল­ীল নৃত্যের ২৬টি প্যান্ডেল মালিকের কাছ থেকে ১৩ লাখ টাকা অগ্রীম নিয়ে চুক্তিবদ্ধ হন। প্রতি প্যান্ডেল মালিককে প্রতি রাতে ইজারাদারদের ৪০ হাজার টাকা করে দিতে হবে। এ মর্মে পত্রিকায় সংবাদ প্রকাশের পর স্থানীয় এমপি জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রীর নির্দেশে যশোর জেলা প্রশাসন ২১ জানুয়ারি উদ্বোধনের দিনেই মেলার মাঠসহ আশপাশের বেশ কয়েকটি ভ্যারাইটি শো’র নামে মানব নৃত্যের জন্য প্রস্তুত করা প্যান্ডেল উচ্ছেদ করেন। মধুমেলা উদযাপন কমিটির সভাপতি যশোরের জেলা প্রশাসক ড. হুমায়ুন কবীর সাফ জানিয়েছেন, মেলার মাঠের জন্য দেয়া শর্ত ভঙ্গ করলে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।
এদিকে পত্রিকায় সংবাদ প্রকাশ হওয়ায় মাঠ ইজারাদার ও সাব-ইজারাদারদের উপর ক্ষেঁপেছেন স্থানীয় কতিপয় কুরুচিপূর্ণ ব্যক্তিরা। প্রথমত তারা বলেছিলেন, পত্রিকায় সংবাদ লিখলে তাদের কোনো কিছুই হবে না। তাদের নাকি সবই ম্যানেজ করা আছে। শেষমেশ দম্ভোক্তি ভুলুণ্ঠিত হয়েছে। সাব ইজারাদারের কাছে টাকা দিয়ে বিপাকে পড়েছেন প্যান্ডেল মালিকেরা। একটি সূত্রে জানা গেছে, অগ্রীম নেয়া টাকা তারা ৩০ তারিখের আগে ফেরত দিতে পারবেন না। যা নিয়ে স্থানীয় প্রভাবশালীদের সাথে প্যান্ডেল মালিকদের মধ্যে উত্তেজনা বিরাজ করছে। সাগরদাঁড়ি ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি শাহাদাত হোসেন সাংবাদিকদের সাথে আলাপকালে বলেন, মেলার মাঠে পরিবার-পরিজন নিয়ে চলাফেরা করার পরিবেশ ফিরেছে। সাগরদাঁড়ি ইউনিয়নের গুটিকয়েক মানুষ মেলাকে অর্থ উপার্জনের হাতিয়ার মনে করায় পরিবেশ নষ্ট হতো। স্থানীয় এমপি জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ইসমাত আরা সাদেকের কঠোর অবস্থানের কারণে মধমেলা এবার রুচিশীল হয়েছে। কেশবপুর নাগরিক সমাজের আহŸায়ক অ্যাডভোকেট আবু বকর সিদ্দিকী বলেন, প্রশাসনের সঠিক সিদ্ধান্তে এবার মধুমেলা অশ্লীলতা মুক্ত হয়েছে। এভাবে শেষ দিন পর্যন্ত চালানো হলে কেশবপুরের সচেতন মহলসহ মধুভক্তরা স্ত্রী-পরিজন নিয়ে মহাকবির মেলা উপভোগ করতে পারবেন।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ