Inqilab Logo

শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

নির্বাচনে জিততে সৈনিক-সেনাপতি চাই : এরশাদ

রওশনের বক্তৃতার সময় হট্টগোল

| প্রকাশের সময় : ১০ ফেব্রুয়ারি, ২০১৭, ১২:০০ এএম

স্টাফ রিপোর্টার : নতুন নির্বাচন কমিশন নিয়ে দারুণ খুশি জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান সাবেক প্রেসিডেন্ট হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ। বলেছেন, ’৯০-এর পর কোনো নির্বাচন কমিশনই আমাদের পক্ষে ছিল না। তবে নতুন প্রধান নির্বাচন কমিশনার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন তিনি কারো কথা শুনবেন না। আমরা আশাবাদী, খুশি হয়েছি।
আসন্ন একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে যুদ্ধক্ষেত্র হিসেবে উল্লেখ করে তিনি আরো বলেন, ‘নির্বাচনে জিততে গেলে সেনাপতি লাগে, সৈনিক লাগে। আগামী নির্বাচনের জন্য আমি সেনাপতির দায়িত্ব পালন করব। প্রত্যেক জেলা কমিটির সভাপতির কাছে আমার নির্দেশ থাকবে, আগামী নির্বাচন যারা করতে চান তাদের লিস্ট পাঠান। নির্বাচনে জেতার জন্য সৈনিক চাই, সেনাপতি চাই। আর সময়ক্ষেপণ করা যাবে না। সর্বশক্তি নিয়ে মাঠে নামতে হবে। গতকাল রাজধানীর কাকরাইলের ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউট মিলনায়তনে দলের যৌথ সভায় জেলা ও উপজেলা নেতাদের উদ্দেশে তিনি এসব কথা বলেন। নতুন নির্বাচন কমিশনকে স্বাগত জানিয়ে প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ এই দূত বলেন, আমরা এই ইসির অধীনে সুষ্ঠু নির্বাচন চাই। নতুন প্রধান নির্বাচন কমিশনার কে এম নূরুল হুদা কথা দিয়েছেন সুষ্ঠু নির্বাচন করবেন। আমরাও তা চাই।
সভায় আরো বক্তৃতা করেন দলের কো-চেয়ারম্যান গৃহপালিত বিরোধী দলের নেতা বেগম রওশন এরশাদ, কো-চেয়ারম্যান জি এম কাদের, প্রেসিডিয়াম সদস্য সৈয়দ আবু হোসেন বাবলা, সাইদুর রহমান টেপা, তাজ রহমান, যুগ্ম মহাসচিব ইয়াহিয়া চৌধুরী এমপি, আমির হোসেন ভূঁইয়া এমপি, ফখরুল আহসান শাহাজাদা, ইসহাক ভূইয়া, অনন্যা হোসাইন মৌসুমী, এ কে এম আশরাফুজ্জামান খান, সৈয়দ ইফতেখার আহসান প্রমুখ।
সাবেক প্রেসিডেন্ট এরশাদ আক্ষেপ করে বলেন, কোনো নির্বাচন কমিশনই আমার সাথে সুবিচার করেননি। ১৯৯১ ও ’৯৬ সালে জেলে থেকে নির্বাচন করেছি। ২০০১ সালে আমাকে নির্বাচন করতে দেয়া হয়নি। অথচ আওয়ামী লীগ আমাদের সমর্থনেই ক্ষমতায় এসেছিল। আমাদের কোনো বন্ধু নেই উল্লেখ করে সাবেক এই প্রেসিডেন্ট বলেন, জাতীয় পার্টি যেন ক্ষমতায় আসতে না পারে এবং শক্তিশালী হতে না পারে এই আওয়ামী লীগ-বিএনপি এক। তাই আমাদের আরো শক্তিশালী হতে হবে। তিনি আরো বলেন, ২৬ বছর ক্ষমতার বাইরে। সেনাপ্রধান ছিলাম, রাজনীতিবিদ হয়েছি। কিন্তু এ পথ খুব পিচ্ছিল। বহু ঘাত-প্রতিঘাত, অবিচার সহ্য করে আমরা আজও টিকে আছি। জাতীয় পার্টি আগের যেকোনো সময়ের চেয়ে এখন অনেক বেশি শক্তিশালী। আমরা সারাদেশে প্রার্থী বাছাই কাজ ইতোমধ্যে শুরু করেছি। তিনি জেলা নেতাদের আগামী পনের দিনের মধ্যে যারা জাতীয় নির্বাচন করবে তাদের তালিকা দেয়ার আহ্বান জানান। যৌথ সভায় নিয়ে অংশ নিয়ে গৃহপালিত বিরোধী দলের নেতা ও দলের সিনিয়র কো-চেয়ারম্যান রওশন এরশাদ বক্তৃতা দিতে উঠলে হট্টগোল শুরু হয়। এ অবস্থায় সকলকে শান্ত থাকার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, ছাত্রসমাজ, যুব সংহতি তোমাদের যা কথা আছে আমি শুনব। এভাবে বিশৃঙ্খলা করলে দল ক্ষতিগ্রস্ত হবে। তোমাদের কোনো কথা থাকলে আমার বাসায় আসো, আমি তোমাদের কথা শুনব। কর্মীদের উদ্দেশে বলেন, আমি তিনটি নির্বাচন করেছি। দলের চেয়ারম্যানকে জেল থেকে মুক্ত করার জন্য জীবনের ঝুঁকি নিয়ে তোমাদের সাথে কাজ করেছি। কোনো কিছুতেই আবেগে কোনো সিদ্ধান্ত নেয়া যাবে না। ছাত্রসমাজ ও যুব সংহতি রওশন এরশাদের এই বক্তব্য চলাকালে হট্টগোল করে। দলের অপর কো-চেয়ারম্যান জি এম কাদের বলেন, জাতীয় পার্টি সাম্প্রদায়িকও না অসাম্প্রদায়িকও না। আমরা মধ্যপন্থী। আওয়ামী লীগ নিজেকে অসাম্প্রদায়িক দাবি করে। অথচ তারা ক্ষমতাসীন হয়েও রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম বাতিল করতে পারেনি। হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের মামলা প্রত্যাহার করা না হলে আন্দোলনের মাধ্যমে ঢাকা অচল করে দেয়ার হুমকি দিয়ে জাতীয় পার্টি ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সভাপতি সৈয়দ আবু হোসেন বাবলা বলেন, এরশাদের মামলা প্রত্যাহারের দাবিতে রাজপথে নামব। প্রয়োজনে কঠোর কর্মসূচির মাধ্যমে ঢাকা অচল করে দিয়ে করে হলে পল্লীবন্ধু এরশাদের মামলা প্রত্যাহার করতে সরকারকে বাধ্য করবে জাতীয় পার্টি।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ