Inqilab Logo

বুধবার, ১৭ এপ্রিল ২০২৪, ০৪ বৈশাখ ১৪৩১, ০৭ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

আল কোরআনই ন্যায় বিচারের প্রতীক

সুপ্রিম কোর্ট চত্বরে গ্রিকমূর্তি অপসারণ দাবিতে হেফাজতের কর্মসূচি

| প্রকাশের সময় : ১২ ফেব্রুয়ারি, ২০১৭, ১২:০০ এএম

চট্টগ্রাম ব্যুরো : হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের মহাসচিব আল্লামা জুনাইদ বাবুনগরী বলেছেন, ৯২ ভাগ মুসলমানের দেশে ধর্মীয় মূল্যবোধে আঘাত ও দেশীয় সংস্কৃতি বিনষ্ট হয় এমন ভাস্কর্য জনগণ মেনে নেবে না। দেশের ঐতিহ্য অনুসারে ভাস্কর্য হতে পারে। গ্রিকদেবীর মূর্তি নয়: মুসলমানদের জন্য ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠার প্রতীক মহাগ্রন্থ আল কোরআন। মহান আল্লাহর মনোনীত ধর্ম ইসলামে মূর্তি স্থাপন হারাম। গতকাল (শনিবার) চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবে হেফাজতে ইসলাম আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি একথা বলেন। সংবাদ সম্মেলনে হেফাজত কর্তৃক আগামী ১৪ ফেব্রুয়ারি প্রধানমন্ত্রী ও প্রধান বিচারপতি বরাবর স্মারকলিপি পেশসহ বিভিন্ন কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়েছে।
সংবাদ সম্মেলনে মহাসচিবের পক্ষে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক মাওলানা আজিজুল হক ইসলামাবাদী। এতে তিনি বলেন, বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক ব্যবস্থায় পরিচালিত সংখ্যাগরিষ্ঠ মুসলিম অধ্যুষিত রাষ্ট্র। ব্রাহ্মণ্যবাদের আজ্ঞাবাহী, ইসলামবিদ্বেষী অপশক্তি এদেশের সংখ্যাগরিষ্ঠ বৃহত্তর তৌহিদী জনতার ধর্মীয় মূল্যবোধ ও ঈমান-আক্বিদার বিরুদ্ধে নানা ধরনের সাংস্কৃতিক, রাজনৈতিক ও বুদ্ধিবৃত্তিক পন্থায় অপতৎপরতা চালিয়ে যাচ্ছে। সুপ্রিম কোর্ট প্রাঙ্গণে গ্রিকদেবীর মূর্তি স্থাপনও সেই ধারাবাহিকতারই একটি অংশ।
হেফাজতের বক্তব্যে আরও বলা হয়, জাতীয় ঈদগাহের উত্তর পার্শে¦ এবং দেশের মানুষের ন্যায়বিচার পাওয়ার সর্বোচ্চ স্থান সুপ্রিম কোর্ট-প্রাঙ্গণে কথিত ন্যায়ের প্রতীক গ্রিকদেবী থেমিসের মূর্তি স্থাপন চরম ধৃষ্টতা এবং রাষ্ট্রধর্ম ইসলামের অবমাননাও বটে। মূর্তিকে ন্যায় বিচারের প্রতীক হিসেবে বিশ্বাস করলে বা এমন ভাবনা অন্তরে পোষণ করলে, কোনো মুসলমানের ঈমান থাকবে না। হাদীস শরীফে রাসূল (সা.) ইরশাদ করেছেন, আল্লাহর নিকট সর্বাধিক আযাবপ্রাপ্ত লোক হবে মূর্তি প্রস্তুতকারীগণ। ইসলামে মূর্তি স্থাপন, মূর্তিকে সম্মান জানানো এবং ন্যায়ের প্রতীক মনে করা র্শিক।
তিনি বলেন, প্রতিবেশী হিন্দু অধ্যুষিত ভারতের সুপ্রিম কোর্ট প্রাঙ্গণে কোনো ধরনের মূর্তি স্থাপনের নজির নেই। এছাড়া খ্রিস্টান অধ্যুষিত আমেরিকার সুপ্রিম কোর্টের সামনে পৃথিবীর সফল আইনপ্রণেতা হিসেবে বিশ্বনবী হযরত মুহাম্মাদ (সা.)-এর সম্মানে একটি স্থাপনা রয়েছে। তাহলে আমাদের হাইকোর্টের সামনে কেন গ্রিকদেবীর মূর্তি স্থাপন করা হবে? গুটিকয়েক গণবিচ্ছিন্ন বাম ও সেকুলারপন্থী বুদ্ধিজীবীরা মিডিয়ার মারফতে গ্রিকদেবীর মূর্তিকে ‘ভাস্কর্য’ বলে জনগণকে বিভ্রান্ত করছেন। ভিনদেশী রোমানদের উলঙ্গ গ্রিকদেবীর মূর্তিকে শাড়ি পরিয়ে বাঙালি সংস্কৃতির আদলে উপস্থাপনÑ জাতিগত হীনমন্যতারই বহিঃপ্রকাশ।
লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, হেফাজতের আমির আল্লামা শাহ আহমদ শফী সংবাদপত্রে প্রদত্ত বিবৃতিতে সুস্পষ্টভাবে জানিয়ে দিয়েছেন, মুসলমানদের ঈমান, আক্বীদা ও ঐতিহ্য রক্ষার লক্ষ্যে হাইকোর্ট প্রাঙ্গণ থেকে এই গ্রিক মূর্তি অপসারণ করতে হবে। অন্যথায় আলেম-ওলামা বৃহত্তর তৌহিদী জনতাকে সঙ্গে নিয়ে প্রয়োজনে রাজপথে নেমে দুর্বার গণআন্দোলন গড়ে তুলতে বাধ্য হবে। এ বিষয়ে কোনো আপস হবে না এবং কোনো ছাড় দেয়া হবে না। বিচারব্যবস্থা প্রসঙ্গে হেফাজত বলেছে, আমরা এখনও ব্রিটিশ ঔপনিবেশবাদের গোলামী থেকে নিজেদের সম্পূর্ণ মুক্ত করতে পারিনি। আমাদের বিচারব্যবস্থার সংস্কার অপরিহার্য।
সংবাদ সম্মেলনে হেফাজতের ঘোষিত কর্মসূচির মধ্যে রয়েছেঃ সুপ্রিম কোর্ট প্রাঙ্গণ থেকে গ্রিকমূর্তি অপসারণের দাবিতে হেফাজতে ইসলাম ঢাকা মহানগরীর পক্ষ থেকে আগামী ১৪ ফেব্রুয়ারি প্রধানমন্ত্রী ও প্রধান বিচারপতি বরাবরে স্মারকলিপি পেশ, ২৪ ফেব্রুয়ারি বাদ জুমা, ঢাকা বায়তুল মোকাররম উত্তর গেট ও চট্টগ্রাম আন্দরকিল্লাহ শাহী মসজিদ চত্বরে বিক্ষোভ-সমাবেশ এবং পরবর্তীতে ৬৪ জেলা শহরে বিক্ষোভ-মিছিল অনুষ্ঠিত হবে।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন হেফাজতের যুগ্ম-মহাসচিব মাওলানা মুফতি ফয়জুল্লাহ, মাওলানা মঈনুদ্দিন রুহী, সহ-অর্থ সম্পাদক মাওলানা হাজী মুজাম্মেল হক, হেফাজত আমীরের প্রেসসচিব মাওলানা মনির আহমদ, মাওলানা মীর ইদরিস, হাফেজ মুবিনুল হক, মাওলানা আনম আহমদুল্লাহ, মওলানা ইউনুস, মাওলানা জুনাইদ জওহার, মাওলানা ইকবাল খলিল, মাওলানা হাফেজ জাকারিয়া, মাওলানা কামরুল ইসলাম কাসেমী, মাওলানা ওসমান কাসেমী, মাওলানা মাহমুদুল হাসান, মুফতি ইমরান খলিল, মাওলানা আবদুর রহমান প্রমুখ।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ