Inqilab Logo

শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৬ বৈশাখ ১৪৩১, ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

ইরাকে পরাজয় মেনে নেয়ার দাবি আইএস প্রধান বাগদাদির

ইরাকি বাহিনীর অভিযানে মসুলে দুই ব্রিটিশ নাগরিক নিহত

| প্রকাশের সময় : ৩ মার্চ, ২০১৭, ১২:০০ এএম

ইনকিলাব ডেস্ক : ইসলামিক স্টেট (আইএস) প্রধান আবু বকর আল-বাগদাদি বিদায়ী ভাষণে ইরাকে নিজেদের পরাজয় স্বীকার করে নিয়েছেন। তিনি অ-আরব যোদ্ধাদের নিজ দেশে ফিরে যাওয়ার অথবা নিজেদের বিস্ফোরিত করার নির্দেশ দিয়েছেন। ইরাকি টেলিভিশন নেটওয়ার্ক আল-সুমারিয়ার বরাত দিয়ে এ খবর জানিয়ে সংবাদমাধ্যম আল-আরাবিয়া। আইএসের স্বঘোষিত খলিফা বাগদাদির বিদায়ী ভাষণ শিরোনামে একটি বিবৃতি গত মঙ্গলবার আইএস যোদ্ধা ও নেতাদের মধ্যে বিতরণ করা হয়েছে। আইএসের সর্বশেষ শক্তিশালী ঘাঁটি মসুলের দিকে ইরাকি বাহিনীর অগ্রসর হওয়ার সময় এ বিবৃতি বিতরণ করা হয়। নিনেভাহ প্রদেশের ইরাকি সরকারের সূত্রের বরাত দিয়ে খবরে বলা হয়েছে, বাগদাদি আইএস যোদ্ধাদের কার্যালয় বন্ধের নির্দেশ দিয়েছেন। আইএসের অ-আরব যোদ্ধাদের বাগদাদি যার যার দেশে ফিরে যাওয়ার অথবা নিজেদের বিস্ফোরক দিয়ে উড়িয়ে দেয়ারও নির্দেশ দিয়েছেন। আইএস নেতা বাগদাদি এর আগে বেশ কয়েকবার আহত হয়েছেন। তার মৃত্যুরও বেশ কয়েকবার গুজব ছড়িয়েছিল। যুক্তরাষ্ট্র তার মাথার দাম ১০ মিলিয়ন ডলার ঘোষণা করেছে। অবশ্য এটা স্পষ্ট নয় যে, বাগদাদি এখনও আইএসের দখলকরা মসুল শহরেই অবস্থান করছেন নাকি অন্য কোথাও আছেন। ২০১৪ সালে এই মসুল দখল করেই আইএসের খিলাফতের ঘোষণা দিয়েছিলেন বাগদাদি। আবু বকর আল-বাগদাদির প্রকৃত নাম ইব্রাহিম আল-সামারাই। দুই বছর আগে ইরাকি এই নাগরিক নিজেকে ইরাক ও সিরিয়ার বড় একটি ভূখ-ের খলিফা হিসেবে ঘোষণা করেন। তার প্রকৃত অবস্থান সম্পর্কে স্পষ্ট কোনও তথ্য পাওয়া যায় না। খবরে বলা হয়েছে, আইএসের বেশিরভাগ নেতাই ইরাক ছেড়ে পালিয়ে পাশের দেশ সিরিয়া চলে গেছে। আইএসের দখলকৃত মসুল পুনরুদ্ধারে গত বছর ১৭ অক্টোবর মার্কিন সহযোগিতায় বড় ধরনের অভিযান শুরু করে ইরাকি বাহিনী। প্রায় ১০০ দিনের লড়াই শেষে গত জানুয়ারিতে পূর্ব মসুল দখলে নেয় ইরাকি বাহিনী। এর পর টাইগ্রিসের মসুলের পশ্চিমে অবস্থিত স্থানে এক সপ্তাহ আগে আক্রমণ শুরু করে তারা। সর্বশেষ সোমবার মসুলের ধ্বংস হওয়া একটি সেতু পুনরুদ্ধার করেছে ইরাকি বাহিনী। এ সেতুটি টাইগ্রিস নদীর দুই প্রান্তের বাহিনীর মধ্যে যোগাযোগ বাড়াবে মনে করছে ইরাক। অপর এক খবরে বলা হয়, ইরাকের মসুলে দুই ব্রিটিশ মেডিক্যাল শিক্ষার্থী নিহত হয়েছেন। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম গার্ডিয়ান তাদের মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করেছে। এদের একজন ইরাকি বাহিনীর অভিযানে নিহত হয়েছেন বলে নিশ্চিত হওয়া গেলেও অপরজনের মৃত্যুর কারণ এখনও জানা যায়নি। সুদানের মেডিক্যাল কলেজের ছাত্র ছিলেন আহমেদ সামি। ডাক্তার হওয়ার আগেই আইএস-এর সঙ্গে জড়িয়ে পড়ে ২৫ বছর বয়সী সামি। খেদের দক্ষিণ লন্ডনের কারশালটনের এই বাসিন্দা গত সপ্তাহের রবিবার এক গাড়িবহরে মসুল ত্যাগ করছিলেন। সেসময় ইরাকি বাহিনীর সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধে মারা যান তিনি। গতকাল বৃহস্পতিবারের প্রতিবেদনে হিসাম ফাদাল্লাহ নামের আরেক ব্রিটিশ নিহত হওয়ার খবর দেয় গার্ডিয়ান। তবে তিনিও গাড়িবহরে থাকা অবস্থায় ইরাকি বাহিনীর সঙ্গে সংঘর্ষে নিহত হয়েছেন কিনা তা জানা যায়নি। তবে ইরাকের জঙ্গিবাদ-বিষয়ক লেখক হিশাম আল-হাশিমি জানিয়েছেন, পরিবারের মাধ্যমে হিশামের মৃত্যুর খবর সম্পর্কে নিশ্চিত হওয়া গেছে। তিনি নিহত দুই ব্রিটিশের নাগরিকতাও নিশ্চিত করেন।
সরকারের পররাষ্ট্র মন্ত্রণায়লয়ের এক মুখপাত্র জানান, আমরা ব্যাপারটা জানি। আমরা ইরাকে ভ্রমণকারীদের বারবার নিষেধ করে দেই এসব স্থানে না যাওয়ার জন্য। তবুও তার সেখানে গিয়ে বিপদে ফেলে। দ্য সানডে টাইমস জানায়, খেদের ও ফাদাল্লাহার মতো অনেক ব্রিটিশ শিক্ষার্থীই সিরিয়ায় ভ্রমণ করেছে। গত মাসে সহোদর সহ ২২ জন আইএসে যোগ দেয়ার চেষ্টা করেছেন। সামি খেদের ও ফাদাল্লাহ ২০১৫ সালে সুদানের খারতুম ত্যাগ করে সিরিয়া পাড়ি জমায়। তাদের সঙ্গে সামি খেদেরের বোনও ছিলো। ২০০৬ সালে প্রতিষ্ঠিত ইসলামিক কালচারাল এসোসিয়েশনের মাধ্যমেই ব্রিটিশ শিক্ষার্থীরা পথভ্রষ্ট হয়ে থাকতে পারে বলে দাবি করছে দ্য গার্ডিয়ান। ২০১১ সালে মিডলসব্রোয় ফাখলি আল খাবাস এর সভাপতির দায়িত্বপালন শুরু করেন। সামিকে তিনিই নিয়োগ দিয়েছেন বলে ধারণা করা হচ্ছে। সূত্র: এনডিটিভি, আল-আরাবিয়া, গার্ডিয়ান।



 

Show all comments
  • রেজবুল হক ৩ মার্চ, ২০১৭, ২:৫৬ এএম says : 1
    কবে যে এই যুদ্ধ যুদ্ধ খেলা শেষ হবে ?
    Total Reply(0) Reply
  • আবির ৩ মার্চ, ২০১৭, ২:৫৬ এএম says : 0
    দয়া করে এবার একটু ক্ষান্ত হউন।
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: আইএস


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ