Inqilab Logo

মঙ্গলবার, ২৩ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১, ১৩ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

জাপান সাগরে সিরিজ ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ উ. কোরিয়ার

| প্রকাশের সময় : ৭ মার্চ, ২০১৭, ১২:০০ এএম

ইনকিলাব ডেস্ক: জাপান সাগরে একযোগে চারটি ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করেছে উত্তর কোরিয়া। স্থানীয় সময় গতকাল সোমবার সকাল ৭টা ৩৬ মিনিটে ক্ষেপণাস্ত্রগুলো নিক্ষেপ করা হয়। দক্ষিণ কোরিয়ার একজন সেনা কর্মকর্তা এ তথ্য জানিয়েছেন। জাপানের প্রধানমন্ত্রী শিনজো আবে জানিয়েছেন, এসব ক্ষেপণাস্ত্রের তিনটি প্রায় ১,০০০ কিলোমিটার পথ পাড়ি দিয়ে জাপানের বিশেষ অর্থনৈতিক এলাকা (ইইজেড)-এর মধ্যে গিয়ে পড়েছে। এ ঘটনাকে উত্তর কোরীয় হুমকির একটা অধ্যায় হিসেবে বর্ণনা করেন শিনজো আবে। দক্ষিণ কোরিয়ার সামরিক সূত্র জানিয়েছে, উত্তর কোরিয়ার চীন সীমান্তের নিকটবর্তী তংচ্যাং-রি অঞ্চল থেকে ক্ষেপণাস্ত্রগুলো নিক্ষেপ করা হয়। দক্ষিণ কোরিয়ার বার্তা সংস্থা ইওনহ্যাপ জানিয়েছে, ক্ষেপণাস্ত্রগুলো সম্ভবত আন্তঃমহাদেশীয় ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র; যা যুক্তরাষ্ট্রের মূল ভূখÐে আঘাত হানতে সক্ষম। কোরীয় উপদ্বীপে যুক্তরাষ্ট্র ও দক্ষিণ কোরিয়ার মধ্যকার চলমান যৌথ সামরিক মহড়া বন্ধ করা না হলে ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করা হবে বলে গত শুক্রবার হুঁশিয়ার করে দিয়েছিল পিয়ংইয়ং। প্রতি বছর ওয়াশিংটন ও সিউলের মধ্যকার এ মহড়াকে উত্তর কোরিয়া তার ওপর হামলার প্রস্তুতি বলে মনে করে। এর আগে চলতি বছরের ফেব্রæয়ারিতে সর্বশেষ ব্যালাস্টিক মিসাইলের সফল পরীক্ষা চালায় উত্তর কোরিয়া। পুকগুকসং-২ নামের ওই ক্ষেপণাস্ত্র পারমাণবিক ওয়ারহেড বহনে সক্ষম। উত্তর কোরীয় নেতা কিম জং উন-এটি দেখাশোনা করছিলেন। প্রতিবেশী দেশগুলোর কথা বিবেচনায় রেখে এটিকে উঁচু অ্যাঙ্গেলে উৎক্ষেপণ করা হয়েছিল। সা¤প্রতিক সময়ে উত্তর কোরিয়া নিজের ক্ষেপণাস্ত্র প্রযুক্তির ব্যাপক উন্নয়ন ঘটিয়েছে। চলতি বছরের জানুয়ারিতে দেশটির নেতা কিম জং-উন দাবি করেন, তার দেশ পারমাণবিক বোমা বহনে সক্ষম দীর্ঘপাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষা চালানো কাছাকাছি পর্যায়ে রয়েছে। পিয়ং ইয়ং-এর পক্ষ থেকে দাবি করা হয়, তারা যুক্তরাষ্ট্রের মূল ভূখÐে আঘাত হানতে সক্ষম আন্তঃমহাদেশীয় ব্যালাস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র তৈরি করছে; যে কোনও সময় এর পরীক্ষা চালানো হতে পারে। তবে ৩ ফেব্রæয়ারি ২০১৭ শুক্রবার দক্ষিণ কোরিয়া সফরকালে পিয়ং ইয়ং-এর হুমকি নিয়ে কথা বলেন মার্কিন প্রতিরক্ষামন্ত্রী জেমস ম্যাটিস। তিনি বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্র কিংবা আমাদের মিত্র দেশগুলোর ওপর যে কোনও হামলা পরাস্ত করা হবে। যে কোনও পারমাণবিক অস্ত্র ব্যবহারের বিরুদ্ধে এমনভাবে জবাব দেওয়া হবে যেন তা কার্যকরী ও অপ্রতিরোধ্য হয়।’ ১৯৫৩ সালে সাময়িক অস্ত্রবিরতি চুক্তিতে স্বাক্ষর করার পরও এক রকম প্রাযুক্তিক সক্ষমতাজনিত যুদ্ধে লিপ্ত রয়েছে উত্তর ও দক্ষিণ কোরিয়া। জাতিসংঘ সনদ অনুযায়ী পরমাণু ও ব্যালাস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র উন্নয়নের নিষেধাজ্ঞার আওতায় রয়েছে উ. কোরিয়া। তবে দক্ষিণে থাড নামে পরিচিত উচ্চ প্রযুক্তির মিসাইল প্রতিরোধ ব্যবস্থা মোতায়েন নিয়ে গত বছরের জুলাইয়ে দক্ষিণ কোরিয়া ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে চুক্তি হওয়ার পর নড়েচড়ে বসে দেশটি। দক্ষিণ কোরিয়ায় উচ্চতর ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা গড়ে তোলার ঘোষণার বিপরীতে ধারাবাহিক ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষা শুরু করে উত্তর কোরিয়া। দক্ষিণ কোরিয়া ও যুক্তরাষ্ট্রের পরিকল্পনার বিপরীতে একে তারা যোগ্য জবাব বলে মনে করে। জাতিসংঘের নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করেই গত বছর দুটি পারমাণবিক পরীক্ষার পাশাপাশি ২০টিরও বেশি ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষা চালিয়েছে উত্তর কোরিয়া। দক্ষিণ কোরিয়ায় যুক্তরাষ্ট্রের সেনাবাহিনীর একটি স্থায়ী ঘাঁটি রয়েছে। যুক্তরাষ্ট্র ও দক্ষিণ কোরিয়া নিয়মিত যৌথ মহড়া দিয়ে থাকে। একে উস্কানিমূলক বলে অভিযোগ করে আসছে পিয়ং ইয়ং। সূত্র: বিবিসি।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ