Inqilab Logo

শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৬ বৈশাখ ১৪৩১, ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

বিজিএমইএ ভবন ভাঙতে ৬ মাস সময় দিলেন আপিল বিভাগ

| প্রকাশের সময় : ১৩ মার্চ, ২০১৭, ১২:০০ এএম

স্টাফ রিপোর্টার : ঢাকার হাতিরঝিল প্রকল্প এলাকায় বেআইনিভাবে নির্মিত ১৬তলা বিজিএমইএ ভবন ভেঙে ফেলতে পোশাক রফতানিকারকদের এই সংগঠনকে ছয় মাস সময় দিয়েছেন আপিল বিভাগ। গতকাল রোববার বিজিএমইএর সময়ের আবেদনের শুনানি করে প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের বেঞ্চ এই আদেশ দেন। শুনানিতে বিজিএমইএর পক্ষে ছিলেন কামরুল হক সিদ্দিকী। সঙ্গে ছিলেন আইনজীবী ইমতিয়াজ মইনুল ইসলাম। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম।
হাইকোর্ট ১৬তলা ওই ভবন অবৈধ ঘোষণা করার পর আপিল বিভাগেও ওই রায় বহাল থাকে। বিজিএমইএ ওই রায় পুনর্বিবেচনার (রিভিউ) আবেদন করলে গত ৫ মার্চ তাও খারিজ হয়ে যায়।
চ‚ড়ান্ত আইনি লড়াইয়ে হারের পর দেশের প্রধান রফতানি পণ্যের শিল্পোদ্যোক্তাদের সমিতি বিজিএমইএর সামনে ভবনটি ভেঙে ফেলা ছাড়া আর কোনো পথ নেই এখন।
কার্যালয় সরিয়ে নিতে বিজিএমইএ তিন বছর সময় চাইলেও আদালত তাদের ছয় মাসের মধ্যে সে কাজ শেষ করতে বলেছে।
বিজিএমইএর আইনজীবী কামরুল হক সিদ্দিকী শুনানির শুরুতেই তিন বছর সময় চাওয়ার কারণ ব্যাখ্যা করেন।
বিচারক এ সময় দক্ষিণ কোরিয়ার স্যামসাং ও হুন্দাই চেয়ারম্যানের জেলে যাওয়ার বিষয়টি তুলে ধরে বলেন, জেনুইন স্টেটমেন্ট দেন। কোর্টকে বুড়ো আঙুল দেখাবেন না। যৌক্তিক গ্রাউন্ডে আসুন। দুইটা বাড়ি ভাড়া করে অফিস স্থানান্তর করা যায় না?
সরকারকে বলেন গুলশানে আপনাদের দুইটা বাড়ি ভাড়া করে দিতে। অথবা আপনারা শেরাটন কিংবা সোনারগাঁও হোটেলে গিয়ে ভাড়া নেন। ২০১১ সালে হাইকোর্ট রায় দিয়েছিল। এরপর ২০১৬ সালের ২ জুন আপিল বিভাগ তা বহাল রেখেছে। এই সময়ের মধ্যে আপনারা সরানোর কোনো চেষ্টা করেননি। আদালত এরপর বিজিএমইএকে ছয় মাস সময় দিয়ে আবেদনটির নিষ্পত্তি করে দেন।  
পরে অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম সাংবাদিকদের বলেন, বিজিএমইএর একটি অবৈধ ভবন আদালত থেকে রায় ঘোষণা করেছিল ভবনটি ভেঙে ফেলার জন্য। এখন বিজিএমই কর্তৃপক্ষ সর্বোচ্চ আদালতের রায় মানতে বাধ্য। তারা ভবন থেকে বিভিন্ন জিনিসপত্র সরানোর জন্য তিন বছর সময় চেয়েছিল। আদালত তাদের ছয় মাস সময় দিয়েছেন।
তিনি বলেন, যেহেতু এসব ব্যবসায়ী আন্তর্জাতিক রফতানির সঙ্গে যুক্ত তাই আমিও আদালতকে এক বছর সময় দিতে বলেছিলাম। আদালত ছয় মাস সময় দিয়েছেন। এখন তারা এই আদেশ পালন করতে বাধ্য। আজ থেকে দিন গণনা শুরু হবে।
এ মামলায় হাইকোর্টে অ্যামিকাস কিউরির দায়িত্ব পালন করা মনজিল মোরসেদ আদেশের পর সাংবাদিকদের বলেন, আদালত ছয় মাসের সময় দিয়েছে। ভবনটি ভেঙে ফেলতে বলেছে। আমরা এই আদেশে সন্তুষ্ট। আইনের হাত অনেক লম্বা। আবারো প্রমাণিত হলো, কেউ আইনি প্রক্রিয়ার ঊর্ধ্বে নয়।
আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থাকাকালে ১৯৯৮ সালে বিজিএমইএ তাদের প্রধান কার্যালয় ভবন নির্মাণের জন্য সোনারগাঁও হোটেলের পাশে বেগুনবাড়ী খালপাড়ের এ জায়গাটি নির্ধারণ করে এবং বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অনুমতি নিয়ে রফতানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) কাছ থেকে পাঁচ কোটি ১৭ লাখ টাকায় জমিটি কেনে। তখনকার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ওই বছরই বিজিএমইএ ভবনের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন। ২৮ নভেম্বর শুরু হয় ভবন তৈরির কাজ। ২০০৬ সালের অক্টোবরে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া বিজিএমইএ ভবন উদ্বোধন করেন।



 

Show all comments
  • Nur- Muhammad ১৩ মার্চ, ২০১৭, ৮:৪০ পিএম says : 0
    দেশের প্রধান রপ্তানীখাতের উদ্দ্যোক্তারা এই ভবন বনায়েছে। অবৈধতার ব্যাপারটি তারা থোরাই কেয়ার করছে। তাদের অহংকার ছিল, তাদের টিকিটিও কেহ ছুতে পারবে না। কিন্তু আমাদের আদালত ন্যায়ের প্রতিক। জনগণের শেষ আশ্রয় স্হল। এই রায়ে তা ই প্রমান হলো। ধন্যবাদ। অশেষ ধন্যবাদ।
    Total Reply(0) Reply
  • Nur- Muhammad ১৩ মার্চ, ২০১৭, ৯:০৮ পিএম says : 0
    পরিশেষে বলছি, এই ভবনটির ভিত্তিপ্রস্তর করছিল মাননীয় প্রধানমন্রী আর শুভ উদ্বোধন করছিল মাননীয় সাবেক প্রধানমন্রী। ২ প্রধানমন্রীর সাথে অবশ্যই বিগ্গয় অবিগ্গয় লোক ছিল। তখন কারও চোখে কেন এই জিনিসটি ধরা পড়লো না। কোটি কোটি টাকা খরচ হলো। এখন জনগণ জানলো, ভবনটি অবৈধ। ব্যাপারটি বাস্তবিকই দূঃখজনক।
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: বিজিএমইএ


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ