Inqilab Logo

শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

ফুলবাড়িয়ায় ভুল কীটনাশক ব্যবহারে কৃষকের মাথায় হাত!

| প্রকাশের সময় : ১৪ মার্চ, ২০১৭, ১২:০০ এএম

ফুলবাড়িয়া (ময়মনসিংহ) উপজেলা সংবাদদাতা : “আমি গরিব গাছুরা মানুষ ভাই, নীজের কিছু জমি আছে আর অন্যের জমি বর্গা নিছি। সমিতির থেইকা লোন তুইলা এক একর জমিনে বোর ধান লাগাইছি এইবার। ইচ্ছা আছিলো ধান বিক্রির টেকা দিয়া ঘরের ভাঙা চালডা বদলামু। ক্ষেতে ধান গাছে পুকা দেইখা নতুন বাজারে গিয়া আ. রব মিয়ারে ক্ষেতের ধানের চারার সব লক্ষণ কইলাম, হে আমার কথা হুইনা একটা বিষের শিশি হাতে ধরাইয়া কইলো ক্ষেতে নিয়া স্প্রে কইরা দিতে। রব মিয়ার কথা মত হেই বিষ ক্ষেতে স্প্রে করার পরের দিন দেহি আমার ১৬ কাঠা জায়গার ধান গাছ মইরা হুকনা খের হইয়া গেছে। কিন্তু অহন আমার কি হইবো ভাই, আমারতো সর্বনাশ হইয়া গেলো, আমি এর নায্য ক্ষতি পুরন চাই। নীজের সন্তানের মত লালন করা জমির মৃত ফসলের ক্ষেতের আইলে বসে অশ্রুসিক্ত হয়ে কথাগুলো বলছিলেন কৃষক আবুল কালাম (৪৫)।”
ফুলবাড়িয়ায় উপজেলায় মুদির দোকানদারের কাছ থেকে ভুল কীটনাশক কিনে জমিতে ব্যবহার করায় কৃষকের অন্তত ২ একর জমির ধান গাছ মরে গেছে। ঘটনাটি ঘটে উপজেলার ফুলবাড়িয়া ইউনিয়নের চৌদা গ্রামের কৃষক আবুল কালাম, জালাল উদ্দিন, আ. জব্বার মিয়ার এবারের বরো মৌসুমের লাগানো ২ একর জমির ধান গাছে। ফসলের এমন অবস্থার কথা পুনরায় দোকানদার আ. রবকে জানানো হলে তিনি আরো কিছু কীটনাশক আর সার তার দোকান থেকে দিয়ে তা প্রয়োগ করালে উল্টো হিতে বিপরীত আকার ধারণ করে। এমতাবস্থায় ক্ষতিগ্রস্থ কৃষকরা দোকানির কাছে ফসলের ক্ষতি পূরন চাইলে দোকানদার আ. রব নানান টালবাহানা করছে বলে অভিযোগ কৃষকদের।
জানাযায়, গত বৃহস্পতিবার দুপুরে চৌদা গ্রামের কৃষক আবুল কালাম তার ধান ক্ষেতে পোকার আক্রমণ দেখে পরার্মশের জন্য নতুন বাজারে মুদির দোকানদার আব্দুর রব মিয়ার কাছে গেলে তিনি পোকা মারার ওষুধের বদলে তার দোকান থেকে ইনতেফা কোম্পানির প্রিটিলাক্লোর গ্রæপের ঝওখঅঐ-৫০০ বপ নামক আগাছা নাশক কীটনাশক ব্যবহারের জন্য দেয়। আর জমিতে সেই আগাছা নাশক ব্যবহারের পরেরদিন সকল ধান গাছ মরতে শুরু করে। সেই কীটনাশক কালামের কাছ থেকে নিয়ে আরো কয়েকজন জমিতে প্রয়োগ করলে একই প্রতিক্রিয়া দেখা দেয় তাদের জমিতে।
এবিষয়ে খোঁজ নিতে চৌদা বাজারের আ. রব মিয়ার দোকানে গিয়ে দেখা যায় তার মুদির দোকান হলেও দেদারসে বিক্রি করছেন সার ও কীটনাশক। তার মুদির দোকানে বসে কীটনাশক বিক্রির জন্য কৃষি বিভাগের কোন লাইসেন্স আছে কিনা জানতে চাইলে রব মিয়া দম্ভ করে বলেন, আমি মেলা দিন ধইরা সার বিষ বিক্রি করি দোকানে, আমার লাইসেন্স এহনো করা হয় নাই। আর কালাম আমার কাছে পোকা মারার বিষ চাইলে ভুলে আগাছা মারার বিষ আর মিকচার দিয়া দিছি। হেই লাইগায় হয়ত তার ধানগাছ মরছে, এর লাইগা দরকার পরলে তারে জরিমানা দিমু তাতে এত গন্ডগোলের কি হইলো। কালামের জমিতে ব্যবহার করা সেই কীটনাশকটির গায়ে কোন মেয়াদের সিল খুজে পাওয়া যায় নি।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ